দেশের সংবাদ ফিচার্ড

কমলগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে বাড়ির আঙিনায় পুঁতে রাখলেন স্বামী

৩৬দিন পর গৃহবধুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার: ঘাতক স্বামী আটক

কমলগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে বাড়ির আঙিনায় পুঁতে রাখলেন স্বামী

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজের ৩৬দিন পর সুচিত্রা শব্দকর (৪০) নামে এক গৃহবধুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইন এলাকায় নিজ বাড়ির আঙিনার পাশে মাটি খুঁড়ে অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। এই দম্পতির ঘরে এক ছেলে ও সুচিত্রার প্রথম তরফের এক মেয়ে রয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতক স্বামী সুবাস বাউরী ওরফে নুনু (৫০) কে আটক করেছে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ।

স্থানীয়রা জানায়, স্বামী পরিত্যক্তা সুচিত্রা শব্দকর (৪০) পাত্রখোলা চা বাগানের বাজারে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতো। সেই সুবাদে পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইন এলাকার মৃত নিতাই বাউরীর ছেলে সুবাস বাউরী ওরফে নুনুর সাথে পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠলে ১৩ বছর আগে সামাজিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর সংসার ভালো চললেও পরে দেখা দেয় পারিবারিক কলহ। প্রতিদিনই মদ্যপ অবস্থায় স্বামী স্ত্রীর মাঝে ঝগড়াঝাটি হতো। গত ২২ শে জুন থেকে সুচিত্রা নিখোঁজ ছিলেন।

জানা যায়, সুচিত্রার প্রথম তরফের মেয়ে সীমা শব্দকরের মাস খানেক থেকে মায়ের সাথে যোগাযোগ না হওয়ায় সৎ পিতা সুবাসের কাছে মায়ের খবর জানতে ফোনে কল দিলে রহস্যজনক কথাবার্তা বলতো সুবাস। তার সন্দেহ হলে স্বামীর বাড়ি কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের তিলকপুর থেকে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সৎ পিতা সুবাস বাউরীর বাড়ি পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইনে আসে। প্রথম দিকে সীমার কথার উত্তর না দিলেও পরের দিন ২৮ জুলাই বুধবার সকালে সীমার জেরার মুখে সুবাস একপর্যায়ে স্বীকার করে ১ মাস পূর্বে তার মায়ের সাথে ঝগড়া হয়েছিল তাই সে রাগ করে কুঠারের হাতল দিয়ে আঘাত করলে সুচিত্রার মৃত্যু হয়। তাই সে ভয়ে লাশ গোপনের জন্য বাড়ির আঙিনার পাশে পুঁতে রেখেছে। একথা শুনে সীমা চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলে সুবাস পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে এলাকার লোকজনকে সাথে নিয়ে পাত্রখোলা জামে মসজিদ এলাকা থেকে ঘাতক সৎ পিতা সুবাস কে আটক করে গাছের সাথে বেধে রেখে কমলগঞ্জ থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়।

খবর পেয়ে মৌলভীবাজারের সহকারী পুলিশ সুপার এএসপি (শ্রীমঙ্গল – কমলগঞ্জ) সার্কেল শহীদুল হক মুন্সির নেতৃত্বে কমলগঞ্জ থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান, ওসি তদন্ত সোহেল রানাসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যান। দুপুর ২টার দিকে ঘাতক সুবাস বাউরীর দেখানোমতে বাড়ীর আঙিনার পাশে পুঁতে রাখা জায়গা থেকে মাটি খুঁড়ে গৃহবধূর অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ঘাতক সুবাস বাউরী পারিবারিক কলেহের জেরে এই হত্যাকা- ঘটান বলে জানান।

কমলগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক মহাদেব বাচাড় জানান, নিহত লাশের সুরতহাল তৈরী করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।

মাধবপুর ইউপি চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু জানান, পারিবারীক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। ঘাতক সুবাস বাউরী একজন নেশাখোর ছিল। সব সময় মদ্যপানসহ নানা নেশা জাতীয় পান করত।

কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত গৃহবধুর লাশ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন