বিশ্ব

করোনায় ভাইরাসে ক্ষত-বিক্ষত বিশ্ব! অসহায় পৃথিবী

করোনায় ক্ষত-বিক্ষত বিশ্ব!

করোনায় ভাইরাসে ক্ষত-বিক্ষত বিশ্ব! অসহায় পৃথিবী ।। করোনায় আক্রান্ত ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব ।। করোনা মোকাবেলা -মোদির প্রস্তাবে সাড়া দিলেন ইমরান খান ।। করোনা ছড়িয়েছে মার্কিন সেনারা-চীনের মন্তব্যে ক্ষেপেছে ওয়াশিংটন, রাষ্ট্রদূতকে তলব ।। করোনা পরিস্থিতিমৃত্যুপুরীতে দেশের গান গাইছেন ইতালিয়ানরা! (ভিডিও) ।।হাসপাতাল থেকে পালালেন মার্কিন দম্পতিসহ ৭ জন! ।। লন্ডনে করোনাভাইরাসে প্রাণ গেল আরেক বাংলাদেশির ।।করোনা আতঙ্কে সিনেমা হল বন্ধ করছে সৌদি ।।করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ।। করোনার হানায় ধরাশায়ী ইউরোপ, শূন্যেরও নিচে নামতে পারে প্রবৃদ্ধি!।।করোনায় ইরানের বিপ্লবী গার্ডসের শীর্ষ কর্মকর্তার মৃত্যু ।।  করোনাভাইরাস নিয়েই জন্মালো শিশু

করোনায় ভাইরাসে ক্ষত-বিক্ষত বিশ্ব! অসহায় পৃথিবী।।  বিশ্বজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। আক্রান্ত হচ্ছে একের পর এক দেশ। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। রেহাই পাচ্ছেন না বিশ্বের বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিরাও। এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি বলসোনারো, অস্ট্রেলিয়ান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডুটন, কানাডার প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী-সহ অনেক প্রভাবশালী নেতাকেই ধরেছে করোনা। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল ন্যাটোর সাবেক মহাসচিব ৭৭ বছর বয়সী জাভিয়ের সোলানের নাম। বার্তা সংস্থা রয়টার্স তার নিজস্ব সূত্রের বরাতে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

হঠাৎ অসুস্থ বোধ করলে করোনায় আক্রান্ত হতে পারেন বলে সন্দেহ হয় সোলানের। পরে পরীক্ষায় ফলাফল কোভিড-১৯ পজেটিভ এসেছে। তিনি স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। এখন তার অবস্থা চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণ করছেন। তবে তাঁকে দেখে সুস্থ মানুষের মতোই লাগছে।

গত সোমবার (৯ মার্চ) সোলানে স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অরণা গঞ্জালেজ লায়ারের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, জাভিয়ার সোলান ১৯৯৫ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ন্যাটো মহাসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি ছিলেন এবং ১৯৯২ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।

করোনা মোকাবেলা

মোদির প্রস্তাবে সাড়া দিলেন ইমরান খান

প্রাণঘাতী মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার যে আহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, তাতে সম্মতি জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। মোদির আহ্বানের একদিন পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আয়েশা ফারুকী এই মহামারি মোকাবেলায় আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিকভাবে সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন।

শনিবার (১৪ মার্চ) সকালের দিকে পাক ওই কর্মকর্তা বলেছেন, কোভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রস্তাবিত ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিশেষ সহকারীকে (স্বাস্থ্য) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

টুইটে তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর হুমকি মোকাবিলার জন্য সমন্বিত আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক প্রচেষ্টা দরকার। এই ইস্যুতে সার্কভূক্ত সদস্য দেশগুলোর ভিডিও কনফারেন্সে পাক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ স্বাস্থ্য সহকারী অংশ নেবেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

পাক এই কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবেশিদের সহায়তায় প্রস্তুত আছে পাকিস্তান। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় ইতোমধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।

শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একাধিক টুইটে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রতিবেশি এবং সার্কের সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। করোনা মোকাবিলায় উপযুক্ত কৌশল নির্ধারণের প্রস্তাব দেন তিনি।

টুইটে মোদি বলেন, আমি প্রস্তাব করছি, সার্কের নেতারা করোনাভাইরাসের লড়াইয়ে শক্তিশালী এক কৌশল নির্ধারণ করবেন। আমাদের নাগরিকদের সুস্থ রাখতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারি।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার সদস্য। মোদির ওই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং। মোদির প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। এক টুইটে তিনি বলেছেন, মহৎ এই উদ্যোগের ধন্যবাদ নরেন্দ্র মোদি। আমরা এই আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুত।

ভারতে এখন পর্যন্ত ৮৩ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরমধ্যে অন্তত দুজনের প্রাণ কেড়েছে এই ভাইরাস। অন্যদিকে, বাংলাদেশে ৩ জন করোনা সংক্রমিত হলেও বর্তমানে তাদের দু’জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

 

করোনা ছড়িয়েছে মার্কিন সেনারা

চীনের মন্তব্যে ক্ষেপেছে ওয়াশিংটন, রাষ্ট্রদূতকে তলব

‘করোনা ছড়িয়েছে মার্কিন সেনারা’ চীনা মুখপাত্রের এমন দাবির পর বেশ ক্ষেপেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে চীনের রাষ্ট্রদূত সুই তিয়ানকাইকে ডেকে পাঠিয়েছে হোয়াইট হাউস। কী কারণে এই পরিস্থিতিতে বেইজিংয়ের তরফে এমন মন্তব্য করা হল তার জবাব চাওয়া হবে।

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘বিশ্বজুড়ে চলা এই মহামারিতে চীনের যে সমালোচনা হচ্ছে, তার মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে চাইছে তারা। এই ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক কথা বলা খুবই ভয়ঙ্কর। আমরা চীন সরকারকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই, এই ধরনের কথা আমরা বরদাস্ত করব না। চীনের জনগণের জন্যও এটা ভাল হবে না।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বিস্ফোরক এক টুইট বারতা পোস্ট করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, মার্কিন সেনাদের থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল উহানে। সেখান থেকে সংক্রমণ ছড়ায় চীনের মূল ভূখণ্ডে। ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, গত বছর অক্টোবরে উহানে আয়োজিত সপ্তম মিলিটারি ওয়ার্ল্ড গেমে যোগ দিয়েছিলেন আমেরিকার অন্তত ৩০০ জন সেনা অ্যাথলেট। তখনই তাঁদের মধ্যে কয়েকজন ফ্লু-তে আক্রান্ত হন। পরে কয়েকজনের মৃত্যুও ঘটে। তখন বলা হয়েছিল নিছক জ্বর বা সংক্রামক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে সেনাদের। পরে জানা যায়, তাঁরা সকলেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।

চীনের এমন বিস্ফোরক দাবির পরেই হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে। মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)-এর ডিরেক্টর রবার্ট রেডফিল্ড অবশ্য স্বীকার করেছেন, মার্কিন সেনাদের রক্তে মারণ ভাইরাসের জীবাণু মিলেছিল এটা ঠিক, তবে তাঁদের থেকেই যে ভাইরাস উহানে ছড়িয়েছিল সেটা একেবারেই ঠিক নয়। চীনের দাবি পুরোপুরি অস্বীকার করেন তিনি।

এদিকে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বিস্ফোরক এমন দাবির সেই ভিডিও এখন সমস্ত চীনা ওয়েবসাইটে ভাইরাল হয়ে গেছে। চীনারা এখন বলছেন, ‘নাক ঘুরিয়ে হলেও আমেরিকা মানতে বাধ্য হচ্ছে যে, তাদের সেনাদের থেকেই করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। সাহস থাকলে আমেরিকার গোটা বিশ্বের সামনে জোর দিয়ে এটা স্বীকার করা উচিত।’

উহানে এমন মারণ ভাইরাস কোথা থেকে এলো সেটা নিয়ে বিশ্বজুড়ে নানা গুজব তথ্য ছড়িয়েছে। ইজরায়েলি মাইক্রোবায়োলজিস্টরা আগেই দাবি করেছিলেন সিঙ্গেল-স্ট্র্যান্ডেড এই আরএনএ ভাইরাসকে তৈরি করা হয়েছে মারণাস্ত্র হিসেবেই। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ছোবলে শত শত প্রাণহানী ঘটানো সম্ভব। উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির বিএসএল-৪ ল্যাবোরটরিতে অতি গোপনে এই জৈব রাসায়নিক মারণাস্ত্র তৈরির কাজ চলছিল দীর্ঘ সময় ধরেই। হয় সেখান থেকেই ভাইরাস কোনভাবে বাইরে চলে গেছে, অথবা ইচ্ছাকৃতভাবেই সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন ( হু ) একে বিশ্বজুড়ে মহামারীর আখ্যা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে চীনের তরফে এই ধরনের অবিবেচনা প্রসুত মন্তব্যে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ ওয়াশিংটন। তাই চীনের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠালেন তাঁরা। এবার চীনের তরফে কী জবাব দেওয়া হয় সেটাই এখন দেখার।

সূত্র- সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।

করোনা পরিস্থিতি

মৃত্যুপুরীতে দেশের গান গাইছেন ইতালিয়ানরা! (ভিডিও)

মৃত্যুপুরীতে দেশের গান গাইছেন ইতালিয়ানরা! (ভিডিও)

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় পুরো ইতালিকে কার্যত অবরুদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৬ কোটি মানুষ। করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী গিউসেপ্পে কন্তে লোকজনকে বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মনোবল বাড়ানোর প্রয়াসে ব্যতিক্রমি উদ্যোগ নিয়েছে ইতালিয়ানরা। ঘরের বারান্দা থেকে তারা দেশাত্ববোধক গান করছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে ইতালিয়ানরা ঘরের বারান্দায় গানের আসর বসিয়েছে, প্রতিবেশীরাও তাতে গলা মেলাচ্ছেন। ইতালির প্রধানমন্ত্রী গিউসেপ্পে কন্তে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর কার্যত ইতালিয়ানদের সমস্ত দৈনন্দিন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। মুদি দোকান, ব্যাংক এবং ফার্মেসী ছাড়া সব কিছু বন্ধ।

একজন টুইটার ব্যবহারকারী একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। সেখানে দেখা যাচ্ছে সিয়েনার টাসকান শহরের সরু গলির বাসিন্দারা তাদের গলের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সুরেলা কণ্ঠে দেশাত্ববোধক গান করছেন। অনেকে সে গান আবার রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করছেন। এমন দুর্যোগময় পরিস্থিতিতেও তারা একসঙ্গে সবাই দেশাত্ববোধক গান করছেন। নিজের মনোবল বাড়ানোর জন্যই তাঁরা এমন অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন বলে বলছিলেন একজন বাসিন্দা।

করোনার প্রকোপে চীনের পর ইতালিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের মিছিল। মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ইতালির ২০ টি প্রদেশের সবগুলোতেই করোনায় আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী কন্তে বলেন, কোনো কাজ বা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কারো ঘরের বাইরে বের হওয়া বা অন্য কোথাও ভ্রমণের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেছেন, সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে এবং সব ধরনের খেলাধুলার ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে। আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এই বিধি-নিষেধ জারি থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

সূত্র- ডেইলি মেইল।

 

হাসপাতাল থেকে পালালেন মার্কিন দম্পতিসহ ৭ জন!

হাসপাতাল থেকে পালালেন মার্কিন দম্পতিসহ ৭ জন!
এই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছেন করোনার রোগী

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হাসপাতালে থাকা পাঁচ রোগী পালিয়ে গেছেন। একইভাবে পালিয়ে গেছেন এক মার্কিন দম্পতিও। এই ঘটনা ঘটেছে ভারতে।

প্রথম ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের মেয়ো হাসপাতালে। দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে একই দিনে কেরলের আলাপ্পুঝা জেলার একটি হাসপাতালে। শনিবারই অবশ্য দুই রাজ্যেরই পুলিশ তাঁদের খুঁজে বের করেছে।

জানা গেছে, শুক্রবার শরীরে করোনা ভাইরাসের লক্ষ্মণ নিয়ে মেয়ো হাসপাতালে গিয়েছিলেন পাঁচ রোগী। তাঁদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু রাতের মধ্যেই পাঁচজনই কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। খবর পেয়ে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে যান নাগপুর তহসিল থানার এসআই এস সূর্যবংশী। প্রাথমিক জেরায় হাসপাতাল কর্মীরা পুলিশকে জানান, বিকেলের জলখাবার খেতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে আর ফেরেননি রোগীরা। তবে শনিবার সকালে তিনজন নিজেরাই ফের হাসপাতালে ফিরে যান। পাঁচজনের মধ্যে একজনের রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও বাকি চারজনের রিপোর্ট এখনও আসেনি। চতুর্থজনের খোঁজ চলছে। তাঁকেও দ্রুত হাসপাতালে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জেলাপ্রশাসক রবীন্দ এইচ ঠাকরে বলেছেন, হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের বাইরে এখন থেকে অতিরিক্ত সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

এদিকে, শুক্রবারই কেরালার আলাপ্পুঝা জেলার একটি হাসপাতাল থেকেও স্ক্রিনিং এড়িয়ে পালিয়ে যান করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি এক বিদেশি দম্পতি। মার্কিন নাগরিক হলেও ওই দম্পতি লন্ডনের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

জেলাশাসক জানিয়েছেন, ওই দম্পতি কোভিড–১৯ এ আক্রান্ত বলে সন্দেহ হওয়ায় তাঁদের স্ক্রিনিং করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু হাসপাতাল কর্মীদের চোখ এড়িয়ে তাঁরা পালিয়ে যান। শুক্রবার গভীর রাতেই কোচি বিমানবন্দর থেকে ওই দম্পতিকে আটক করা হয়। তাঁদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। করোনায় ভাইরাসে ক্ষত-বিক্ষত বিশ্ব! অসহায় পৃথিবী

লন্ডনে করোনাভাইরাসে প্রাণ গেল আরেক বাংলাদেশির

লন্ডনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরেক বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।

৩৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি লন্ডনের বাঙালি অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটসে থাকতেন। তিনি সিলেটের অধিবাসী। ওই ব্যক্তির লাশ রয়েল লন্ডন হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

লাশ স্বজনদের কাছে কীভাবে কখন হস্তান্তর করা হবে এ বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

প্রসঙ্গত শুক্রবার পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মোট ১২জন মারা গেছে। এরমধ্যে দুজন বাংলাদেশি।

এর আগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিলেন ম্যানচেস্টারে বসবাসরত ৬০ বছর বয়সী আরেক বাংলাদেশি।

 

করোনা আতঙ্কে সিনেমা হল বন্ধ করছে সৌদি

ছবি: আরটি

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে সৌদি আরবের সিনেমা হলগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ দেশটির জেনারেল অথরিটি ফর অডিওভিজুয়াল মিডিয়ার বিবৃতির সূত্রে এ খবর জানিয়েছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সৌদি আরবের সিনেমা হলগুলোতে সব ধরণের প্রদর্শনী স্থগিত থাকবে। করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণ এবং এর বিস্তার রোধের অংশ হিসেবে সতর্কতামূলক এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

এদিকে রোববার থেকে সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করেছে সৌদি আরব। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিস্তার রোধ করতে আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।

কার্যকর করা হবে রোববার বেলা ১১টা থেকে। শনিবার দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এমন তথ্য দিয়েছে।

শুক্রবার আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ জন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ জনে।

রোববার দুপুর ১১টা থেকে এই নির্দেশ কার্যকর করা হবে। তবে ‘বিশেষ কারণ’ থাকার ভিত্তিতে কিছু ফ্লাইট চলতে দেয়া হবে বলে খবরে বলা হয়েছে।

এ সময়ের মধ্যে যেসব নাগরিকরা দেশটিতে ফিরতে পারবেন না, তাদের জন্য তা সরকারি ছুটি হিসেবে গণ্য করা হবে। সব আগমনকারীদের ক্ষেত্রে পরীক্ষা ও আইসোলেশনসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য প্রক্রিয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

করোনার হানায় ধরাশায়ী ইউরোপ, শূন্যেরও নিচে নামতে পারে প্রবৃদ্ধি!

করোনাভাইরাসের গ্রাসে খাদের কিনারায় বিশ্ব অর্থনীতি। এর প্রভাবে চলতি বছরে ইউরোপের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার শূন্যের নিচে নেমে আসতে পারে।

শুক্রবার এমনই আশঙ্কার কথা জানাল ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী শাখা ইউরোপিয়ান কমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, ‘এ বছর ইউরো জোন এবং ইইউ এর সামগ্রিক প্রবৃদ্ধির হার শূন্যে নেমে আসতে পারে। এমনকি চূড়ান্ত সংখ্যা শূন্যের নেমে আসতে পারে।’

এদিকে, করোনার থাবা থেকে ইউরোপের অর্থনীতিকে রক্ষায় এদিনই একগুচ্ছ পরিকল্পনার অবস্থা ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিশেষত সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ইতালিকে সমস্ত ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে তারা। ইইউ এর কমিশনের প্রধান এই আশ্বাস দিয়েছেন।

করোনাভাইরাসে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইতালি। উত্তর ইতালির হাসপাতালগুলোতে রোগী উপচে পড়ছে। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বাধ্যতামূলক কোয়ারেনটাইনে রাখা হয়েছে ১ কোটি ৬০ হাজার বাসিন্দাকে। যার জেরে কার্যত ভেঙে পড়েছে সেদেশের স্বাভাবিক জনজীবন। এর মধ্যে নতুন করে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন একদল গবেষক। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইতালির মতো গোটা ইউরোপজুড়ে করোনাভাইরাস দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

ইউরোপে করোনাভাইরাস সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা পেতে একটি মডেল তৈরি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেখানে দেখা যাচ্ছে, আগামী দিনে স্পেন, জার্মানি, ফ্রান্স এবং ব্রিটেনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা। যে কারণে শুক্রবারই স্পেনে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। করোনা মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে জানিয়েছেন সেদেশের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ।

করোনাভাইরাস নিয়েই জন্মালো শিশু

 

যত দিন যাচ্ছে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস। এশিয়ার চীনকে লণ্ডভণ্ড করে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এরই মধ্যে বিশ্বের ১৪৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে নতুন এই ভাইরাস।

এদিকে, ব্রিটেনে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এক নবজাতক। জন্মের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। ধারণা করা হচ্ছে, এই শিশুই বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ করোনা আক্রান্ত। খবর ডেইলি সান ও ডেইলি মেইলের।

জানা গেছে, নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ নিয়ে সন্তান জন্মদানের আগেই ব্রিটেনে এক গর্ভবতীকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। পরে তার উপসর্গগুলো দেখে চিকিৎসক করোনাভাইরাস পরীক্ষা করান। পরীক্ষার ফলাফল আসার আগেই জন্ম নেয় তার সন্তান। এরপরই আসে পরীক্ষার ফলাফল। এতে ওই নারীকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই শিশুটিরও পরীক্ষা করা হয়। ফলাফল একই।

মায়ের শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে অন্য একটি স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর শিশুটিকে ওই হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

তবে ডাক্তাররা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি গর্ভে থাকাকালীন না জন্মের সময় শিশুটি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে।

ব্রিটেনে এখন পর্যন্ত নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের সংখ্যা ৭৯৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। তবে আশঙ্কার বিষয় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

এদিকে, এর ফেব্রুয়ারিতে চীনে এক করোনা আক্রান্ত এক নারী সন্তান জন্মদানের পর ওই শিশুকেও আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়। খবর বিবিসির।

এছাড়া হংকংয়েও ১৮ মাস বয়সী একটি শিশুকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল। তার মা-বাবা করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পরই তারও করোনা ধরা পড়ে।

 

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × two =