করোনা আতঙ্কে চিকিৎসা অবহেলা, ঢামেকে কানাডাফেরত ছাত্রীর মৃত্যু
করোনাভাইরাস সন্দেহে চিকিৎসা অবহেলায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কানাডাফেরত নাজমা আমিন (২৪) নামে এক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার দুপুরে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল জটিলতায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) তার মৃত্যু হয় বলে জানা গেছে।
নাজমা আমিন ছিলেন কানাডার সাসকাচোয়ানের রেজিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী। তিনি গত সোমবার ঢাকায় ফিরে এসে পেটের ব্যথার কথা পরিবারকে জানান।
পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন, রোগীর করোনভাইরাস ছিল বলে তাদের সন্দেহ থেকে ডাক্তারা অবহেলায় করায় ওই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে।
অভিযোগ করে বাবা আমিন উল্লাহ গণমাধ্যমকে বললেন, আমার মেয়ে কানাডাফেরত শুনেই ৩-৪ জন ডিউটিরত নার্স ‘করোনা করোনা’ বলে আওয়াজ তোলেন। ওয়ার্ডে শুরু হয় ছোটাছুটি। তার করোনা টেস্ট করা হয়। রিপোর্ট আসার আগে কেউ তার সামনে আসেনি। আমার সামনে মেয়েটার জান গিয়েছে দুপুর ১টায়। বিকেল ৫টায় যখন আইইডিসিআরের রিপোর্টে তার করোনা নেগেটিভ পাওয়া যায়, তখন তার মরদেহ আমাদের দেয়া হয়।”
এর আগে, শনিবার (১৪ মার্চ) ভোর ৬টায় ঢামেকে আনা হয় নাজমাকে। ঢামেকে সার্জারি বিভাগের ২১৯ নম্বর ওয়ার্ডে অধ্যাপক ডা. এ বি এম জামালের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. এ বি এম জামাল জানান, ‘যখন জানা গেল মেয়েটি কানাডা থেকে এসেছে, জ্বর-কাশি আর শ্বাসকষ্ট ছিল, তখন ওয়ার্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নার্সরাও প্যানিক (আতঙ্কিত) ছিল। পাশাপাশি ওয়ার্ডে অন্য রোগীদের স্বজনরাও সেখানে ছোটাছুটি শুরু করেন। এরপর আমরা ডিরেক্টর স্যারকে বিষয়টি জানালে তিনি আইইডিসিআরে ফোন দিয়ে দ্রুত কনসালটেন্ট এনে স্যাম্পল (নমুনা) নিতে বলেন। তারা র্যাপিড টেস্ট করিয়ে রেজাল্ট দেয়। রেজাল্ট নেগেটিভ ছিল, অর্থাৎ তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। তবে রেজাল্ট আসার আগেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি আরও জানান, ‘আমরা সন্দেহ করছি, তার অন্ত্রে ছিদ্র ছিল। অর্থাৎ, তার অন্ত্রের কোথাও ফাটল ছিল। তাকে যখন ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তার শরীর থেকে প্রচুর তরল বের হয়ে গেছে।