কানাডার জাতীয় নির্বাচন ২০২১ ||| প্রকৌশলী আবদুল্লা রফিক
বিশ তারিখ, সোমবার এ জাতীয় সংসদ এর নিম্ন কক্ষ “হাউস অফ কমন্স” এর নির্বাচন। প্রায় ছয় বছরের মাথায় দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচন (সংসদ নির্বাচন)। লিবারেল পার্টি থেকে নির্বাচিত বর্তমান প্রধান মন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এর দ্বিতীয় মেয়াদ চলছে, ২০১৯ সালে শেষ নির্বাচনে ১৫৭ টি আসন ( সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন সংখ্যা – ১৭৭ থেকে কিছুটা কম ছিল ) নিয়ে মাইনোরিটি সরকার গঠন করে। তার মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি অথবা সব বিরোধী দল একত্রিত হয়ে সরকার ফেলে দেয়ার চেষ্টাও করেনি, ক্ষমতায় থাকতে চাইলে আরও কিছুটা সময় সরকারে থাকতে পারতো কিন্তু তার (জাস্টিন ট্রুডো ) ধারণা হলো – এখন যেহেতু জনমত তার পক্ষে আছে কাজেই নির্বাচন হলে হয়তো মেজরিটি আসন নিয়ে সরকার গঠন করতে পারবে। অবশ্য নির্বাচন ঘোষণার সময় সমস্ত জনমত জরিপ সেরকমই আভাসই দিচ্ছিলো। এর আগের অর্থাৎ ২০১৫ সালের সংসদ নির্বাচনে লিবারেল পার্টি মেজরিটি আসন নিয়ে বর্তমান প্রধান মন্ত্রী পূর্ণ মেয়াদে ক্ষমতায় ছিলো।
কানাডাতে এখন সাধারণ নির্বাচন এর আমেজ চলছে, সেপ্টেম্বরের ২০ তারিখে নির্বাচন। যদিও সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচনের কোনো আগ্রহ আছে বলেও মনে হয় না, সবাই যে যার মতো নিজের কাজ নিয়ে ব্যস্ত, নেই কোনো মিছিল, নেই কোনো জোরালো নির্বাচন ক্যাম্পেইন। আবার নির্বাচনের দিন সরকারি ছুটিও নেই। গত সপ্তাহে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ আগাম ভোট দিয়েছে, তারপর পোস্টাল মেইল এ ভোট দেয়ার ব্যবস্থাও ছিলো, অবশ্য সেই ব্যালট পেপার ২০ তারিখ সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে নির্বাচন কমিশন এর হাতে পৌঁছতে হবে।
ধারণা করা হচ্ছে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বর্তমান ক্ষমতাসীন দল “লিবারেল পার্টি” এবং “কনজারভেটিভ পার্টির” মধ্যে আর তৃতীয় স্থানে থাকবে “নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি”, এই পার্টি তৃতীয় স্থানে থেকে প্রয়োজনে কোয়ালিশন সরকার এ অংশগ্রহণ করবে অথবা সরকারের বাইরে থেকে মাইনোরিটি সরকার গঠনে সহায়তা করবে। এখনকার জনমত জরিপ এ লিবারেল পার্টি এবং কনজারভেটিভ পার্টি উভয়েই ৩০ শতাংশের একটু বেশী ভোট পেতে পারে কিন্তু আসন সংখ্যা বিচারে লিবারেল পার্টি বেশ কিছুটা এগিয়ে আছে।
যদিও জনমত জরিপ যে সব সময় সঠিক থাকবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
কানাডা স্বশাসিত দশটি প্রদেশ এবং তিনটি টেরিটোরি নিয়ে গঠিত একটি দেশ, ব্রিটিশ রানী কুইন এলিজাবেথ এখনো কানাডার সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধান, রানীর নিযুক্ত প্রতিনিধি গভর্নর জেনারেল দ্বারা পরিচালিত হয়। আর মত্রিপরিষদ শাসিত সরকার ব্যবস্থায় নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী দ্বারা সরকার পরিচালিত হয়। জনসংখ্যার ভিত্তিতে আসন সংখ্যার দিক দিয়ে অন্টারিও এবং কুইবেক প্রদেশ সংসদের অর্ধেকের বেশী আসনের প্রতিনিধিত্ব করে, স্বাভাবিক ভাবে কানাডার ইস্টার্ন পার্ট (পূর্বাঞ্চল) এ যে পার্টি আসন সংখ্যায় সংখ্যাধিক্য লাভ করে সেই পার্টিই প্রথাগতভাবে ক্ষমতায় আসে।
সারা পৃথিবী এখন করোনা আক্রান্ত হয়ে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো করোনা মোকাবিলায় মোটামুটি সফলতা দেখাতে পেরেছে, কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি তো ছিলোই, বিতর্ক সব সময়ই থাকবে – কেনো কানাডা টাকা দিয়ে টিকা কেনার পরও হাতে পেতে কয়েক মাস দেরী হলো? আবার কেনো কানাডা সুযোগ থাকা সত্ত্বেও টিকা বানাতে পারলো না? ইত্যাদি….ইত্যাদি…..! দেশের অর্থনীতি সঠিক পথে রাখতে ফেডারেল সাহায্যের কমতি ছিলো না, এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছে। এগুলোই নির্বাচনের প্রধান ইস্যু বলেই মনে হচ্ছে।
এখন দেখার বিষয় সাধারণ মানুষ বর্তমান প্রধান মন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো কে ভোট দিয়ে তৃতীয় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী করে অথবা তার থেকে থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
লেখক: প্রকৌশলী, কলামিস্ট ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী।
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান