টরন্টো থেকে বিশেষ বাসে কানাডার বিভিন্ন শহরে বসবাসরত চট্টগ্রামবাসীকে নিয়ে যাওয়া হয় পিটারবোরো শহরে।ফলে বাংলাদেশে দূরবর্তী কোনো শহরে পিকনিকে যাওয়ার স্মৃতিকে নতুন করে জাগিয়ে দেয় যেনো এই বাসযাত্রা।
টরন্টোয় সফরে আসা চট্টগ্রামের প্রভাবশালী দৈনিক পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণের পরিচালনা সম্পাদক জসিমউদ্দিন চৌধুরী এই সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন। এসোসিয়েশনের নেতাকর্মীসহ সবাই জসিমউদ্দিন চৌধুরীকে স্বাগত জানান।
সংগঠনের সভাপতি সরওয়ার জামানের সভাপতিত্বে জসিমউদ্দিন চৌধুরীকে সংবর্ধনা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন শিবু চৌধুরী, আলমগীর হাকিম, নাসিরউদ্দৌজা, সেলিনা হোসাইন, সৈয়দ শওকত, সেলিনা সরওয়ার, মো শামসুদ্দিন খলেদ সেলিম বক্তব্য রাখেন।অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান সংগঠনের ট্রেজারার সনৎ বড়ুয়া , মো সোলায়মান, কফিল উদ্দিন পারভেজ, মো আজম, বিশ্বজিত পাল, আব্দুল মোমেন জুয়েল, আমিনুল ইসলাম, ডঃ মন্জুর মোর্শেদ, ব্যরিষ্টার আশরাফুল করিম রনি, ডাঃ সাগুফা আনোয়ার, শরীফা কামাল মসী প্রমুখ।
পিকনিক মানেই ভুরিভোজন- সাধারনভাবে এমনএকটা ধারনা থাকলেও চিটাগং এসোসিয়েশন অব কানাডার পিকনিকে খা্ওয়াদাওয়ার বাইরেও সববয়সীদের জন্য নানা রকমের খেলাধূলা এবং বিনোদনের ব্যবস্থা ছিলো।
পিকনিকস্থলে পৌঁছার পরপরই সবাইকে সকালের নাস্তা পরিবেশন করা হয়। কায়সার কবিরের নেতৃত্ব আয়েশা, মৌসুমী, ফৌজিয়া, শওকত হোসাইনসহ অন্যান্য ভলান্টিয়াররা নাস্তা বিতরণ করেন। শিবু চৌধুরীর নেতৃত্বে খাবার রান্না এবং বিতরনে নিরলস পরিশ্রম করেছেন একটি টিম যারা সকলের অকুন্ঠ প্রশংসা অর্জন করেছেন।
স্পোর্টসকে ঘিরে নানা বয়েসী ছেলেমেয়ের কলকাকলীত স্পোর্টস গ্রাউন্ড যেন কচিকাচাদের মেলায় পরিণত হয়। স্পোর্টস আয়োজনে ছিলেন ফারাহ হোসাইন ফৌজিয়া। তাদের সহযোগীতা করেছেন তরী, মুনতাহার, উজান। স্পোর্টসের সকল পুরস্কার স্পন্সর করেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শেঠ প্রপারটিস।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটি ছিলো নানা মনমুগ্ধকর। স্লো বিটের সুরের মূর্ছনায় যেমন সবাই মোহিত ছিল, ঠিক তেমনি হাই বীটের গানের তালে ছোট বড় সব বয়সের ঊত্তাল নৃত্য এক অপূর্ব আনন্দময় দৃশ্যের অবতারনা করে। উপস্থিত অতিথিদের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত হয় চট্টগ্রাম আইডল সংগীত প্রতিযোগিতা। সব আয়োজনে বিশেষ করে ইয়াং জেনারেশনের অংশ গ্রহন ছিল চোখে পরার মত। বিকাল না নামতেই পরিবেশিত হয় মিষ্টি, ঝাল মুডি , তরমুজ, ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুট সহকারে সাড়া দিন ব্যাপী ছিল চা বিতরন। এর মাঝে অনুষ্ঠিত হয় দুই শত এর অধিক মহিলার অংশগ্রহনে জমজমাট মিউজিক বীটের তালে তালে পিলো পাস গেমস।
কানিজ ফাতেমার আয়োজনে রেফল ড্র এর টিকেট বিক্রী ছিল রেকর্ড পরিমান। বিনয় দার নেতৃত্বে সারাদিন ব্যাপী চা বিতরন চলছিল।অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশনায় ছিলেন মৌসুমী বড়ুয়া , মুক্তা পাল, সিরাজী, আলো, শেখর, মারুফ। নাম জানা এবং অজানা অসংখ্য ভলানটিয়ার এই পিকনিক আয়োজনে অবদান রেখেছেন।
সমগ্র অনুষ্ঠানটি সন্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক সব্যসাচী চক্রবর্ত্তী। পরিবারের এক সদস্যের আকস্মিক অসুস্থতার কারনে অনুপস্থিত পিকনিক কনভেনর শাহাবউদ্দিন বুলবুলকে সবাই মিস করেন এবং দ্রুত আরোগ্যের জন্য দোয়া করেন। সকল স্পন্সর বিশেষ করে টরেন্টো ঢাকা টরেন্টো র টিকেট নিশিথা ফুড সহ ২৩ টি রেফল ড্র এর পুরস্কার প্রদানকারী ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান কে এবং চারটি বাস স্পন্সর কানন গার্ডিয়ান ফার্মেসী, রিয়েলেটর টিম সোলায়মান, রিয়েলেটর সরওয়ার জামান এবং রিয়েলেটর সনৎ বড়ুয়া কে সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
সর্বশেষে ছিল দিনের অন্যতম আকর্ষন রেফল ড্র।প্রথম পুরস্কার টরেন্টো ঢাকা টরেন্টো সহ ২৩ টি পুরস্কার ড্র এর মাধ্যমে আমন্ত্রিত অতিথিদের মাঝে বিতরন করা হয়। সারাদিনের রৌদ্রের আলোছায়ায় মমতা মাখানো দিনের শেষে যখন গৌধুলীর আলোয় আলোকিত সন্ধ্যা নামছিল তখন সংগঠনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ এই সুবিশাল আয়োজনে যাদের অবদান ছিল তাদের ধন্যবাদ দিচ্ছিলেন। হয়তো কত নাম বাদ পরে গেল তবুও অতিথি এবং আয়োজনকারীদের ক্লান্ত চেহারায় ছিল তৃপ্তির আভাস।এই সুবিশাল আয়োজনে পর্যাপ্ত সুস্বাদু খাবার, অসংখ্য গেমস, সংগীতের মুর্ছনা, রেফল ড্র এর পুরস্কার, সর্বোপরী হাজারো চট্টলাবাসীর উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। সন্ধ্যা নামার প্রাক্কালে রাত্রি ৮.০০ টায় বনভোজনের সমাপ্তি ঘোষনা করা হয়।