তুরস্কে নানা আয়োজনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তুরস্কের আংকারস্থ দূতাবাস মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযান করেছে। ২১ ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মস্য়ূদ মান্নান এনডিসি-এর নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং দূতাবাস প্রাঙ্গণে নবনির্মিত শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
করোনা সংক্রামণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং মহান শহীদ দিবস উপলক্ষে দূতাবাসের মিলনায়তনে এরপর একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মহান ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। ভাষা শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত ও জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা পরিচালনা করেন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. এ.কে আব্দুল মোমেন এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়র আলম কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করেন রাষ্ট্রদূত মস্য়ূদ মান্নান, এনডিসি, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাশেদ ইকবাল মিশন উপ-প্রদান ও দূতালয় প্রধান মো. রইস হাসান সরোয়ার। বাণী পাঠের পর শহীদ দিবস ও ভাষা শহীদ এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস নিয়ে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনায় সকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যের শুরুতেই ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং গভীর শোক প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলনের মধ্যেই নিহিত ছিল বাঙ্গালির স্বাধীকার আন্দোলন, যার ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ পথ-পরিক্রমায় ১৯৭১ সালে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। ভাষা আন্দোলনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সক্রিয় অবদানের কথাও তিনি বিশেষভাবে স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারির চেতনা শুধু যে বাঙ্গালি সংস্কৃতির অংশ এমন নয় বরং মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতির এক অবিনাশী চেতনা। আর এ চেতনা সারা বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে ছড়িয়ে দিতে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দান করে। এই স্বীকৃতি আদায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যুৎপন্নমতিত্ত ও সময়োপযোগী নেতৃত্বের তিনি প্রশংসা করেন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানপর্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারিবৃন্দ এবং তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করে। মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানটির শেষে শিশু কিশোরদের মধ্যে শুভেচ্ছা উপহার প্রদান করেন রাষ্ট্রদূত ও তার সহধর্মিনী। বাংলাদেশের চিরাচরিত খাবার পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে সকালের অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
অপরাহ্নে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দূতাবাস জুম অ্যাপস-এর মাধ্যমে বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়া, ভারত ও তুরস্কস্থ ইউনেস্কো কমিশনসহ প্রায় ৩০টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের প্রধানদের অংশগ্রহণে একটি বিশেষ কবিতা আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উল্লেখ্য অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দূতাবাস একটি বিশেষ লিফলেট (তুর্কি-ইংরেজি) প্রকাশ করেছে।
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন