ফিচার্ড বিশ্ব

থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফরে ৪ দিনে ৪০ যৌনকর্মীকে হোটেলে নেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু

রাজপদচ্যুত সাবেক প্রিন্স অ্যান্ড্রু। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফরে ৪ দিনে ৪০ যৌনকর্মীকে হোটেলে নেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু

ব্রিটিশ রাজপরিবারের ইতিহাসবিদ অ্যান্ড্রু লাউনি অভিযোগ করেছেন, রাজপদচ্যুত সাবেক প্রিন্স অ্যান্ড্রু ২০০০ সালের শুরুর দিকে ‘মধ্যবয়সী সঙ্কট’-এর সময় সরকারি অর্থে বিদেশ সফরের আড়ালে একাধিক বিলাসবহুল ছুটি কাটিয়েছিলেন।

ডেইলি মেইলের ‘ডিপ ডাইভ: দ্য ফল অব দ্য হাউস অব ইয়র্ক’ পডকাস্টে তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে অ্যান্ড্রুর বয়স ছিল ৪১ বছর। মধ্যবয়সী সঙ্কটে তিনি তখন প্রচুর নারীর পেছনে ছুটতে শুরু করেন। তিনি করদাতার অর্থে অর্থায়িত ট্রেড এনভয় হিসেবে বিদেশ সফরের সুযোগ নিয়ে এসব সফরকে নিজের ছুটি হিসেবে ব্যবহার করতেন।’

লাউনি জানান, প্রতিটি সফরে অ্যান্ড্রু দুই সপ্তাহের ‘ব্যক্তিগত সময়’ রাখতেন। ফলে করদাতারা তাঁর বিলাসবহুল ছুটির খরচ বহন করতেন।

তিনি আরও বলেন, ‘একবার থাইল্যান্ড সফরে রাজা’র জন্মদিন উদ্‌যাপন উপলক্ষে তিনি যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে যান। কিন্তু দূতাবাসে না থেকে নিজের পছন্দমতো পাঁচ তারকা হোটেলে ওঠেন—যেমনটি তিনি সব সময়ই করতেন। চার দিনে ওই হোটেলে ৪০ জন যৌনকর্মী আনা হয়েছিল, যা কূটনীতিক ও অন্যদের সহায়তায় ঘটেছিল।’

ইতিহাসবিদের দাবি, এই তথ্যটি একাধিক সূত্র, এমনকি থাইল্যান্ডের রাজপরিবারের এক সদস্যের মাধ্যমেও যাচাই করা হয়েছে।

সাবেক ব্রিটিশ কূটনীতিক ইয়ান প্রাউড, যিনি থাইল্যান্ডে যুক্তরাজ্য দূতাবাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ছিলেন, জানান, অ্যান্ড্রুর নারীসঙ্গের বিষয়টি তখন দূতাবাসের অভ্যন্তরে ‘খোলামেলাভাবে জানা’ ছিল।

তিনি বলেন, ‘অ্যান্ড্রু ব্যক্তিগত সফরেও যেতেন, যেখানে আমরা সামান্য সহায়তা করতাম। তিনি সবসময় দূতাবাসে না থেকে নিজস্ব জায়গা পছন্দ করতেন। ব্যাংককের একটি নির্দিষ্ট বিলাসবহুল হোটেলেই থাকতেন, কারণ সেখানে নিচতলায় তাঁর পছন্দের নাইটক্লাব ছিল।’

এই ঘটনার ধারাবাহিকতায় শুক্রবার সকালে তাঁকে যুক্তরাজ্যের ‘অফিশিয়াল রোল অব দ্য পিয়ারেজ’ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে—যেখানে দেশটির সব ডিউক ও অভিজাতদের আনুষ্ঠানিক তালিকা সংরক্ষিত থাকে। এটি তাঁর রাজকীয় উপাধি ও মর্যাদা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহারের একটি বড় ধাপ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

বর্তমানে ডিউক অব ইয়র্ক উপাধিধারী অ্যান্ড্রু এখনও সিংহাসনের উত্তরাধিকার ক্রমে অষ্টম স্থানে রয়েছেন। তাঁকে ওই তালিকা থেকে সরাতে হলে সংসদে আইন পাসের পাশাপাশি কমনওয়েলথভুক্ত সব দেশের সম্মতিও প্রয়োজন।

এদিকে জেফ্রি এপস্টিন কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে বিতর্কের পর বাকিংহাম প্যালেস নিশ্চিত করেছে যে, অ্যান্ড্রু উইনডসর আবাস ছাড়তে সম্মত হয়েছেন। যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, তবুও প্যালেসের ভাষায় এটি ছিল ‘গুরুতর বিচারগত ভুল’।

রাজপ্রাসাদের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘রাজা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর স্টাইল, উপাধি ও সম্মান প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এখন থেকে তিনি অ্যান্ড্রু মাউন্টব্যাটেন উইনডসর নামে পরিচিত হবেন।’ -ইত্তেফাক

এসএস/সিএ
সংবাদটি শেয়ার করুন