বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন
বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ হোক সকল নারীর অনুকরণীয় আদর্শ -রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা
নিউইয়র্ক, ০৮ আগস্ট ২০২১: || আজ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে যথাযোগ্য মর্যাদায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব এর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়। কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে সামাজিক দূরত্ব মেনে স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে মিশনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারি অংশগ্রহণ করেন।
‘ক’ শ্রেণী ভূক্ত জাতীয় অনুষ্ঠান-বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মদিন উদযাপনের শুরুতেই জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের বুলেটে নির্মমভাবে নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এরপর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত বিশেষ প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় অনুষ্ঠানের এ পর্বে।
আলোচনা পর্বের শুরুতে মহীয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উদযাপনকে জীবন ও কর্ম এবং দেশ ও জাতিগঠনে তাঁর অসমান্য অবদানের নানা দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। দিবসটির প্রতিপাদ্য – “বঙ্গমাতা- সংকটে সংগ্রামে নির্ভিক সহযাত্রী” উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বঙ্গমাতার জীবন ও কর্মের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটেছে এই প্রতিপাদ্যে। জাতির পিতার দীর্ঘ গৌরবময় সংগ্রামে, সকল সঙ্কটে অকুতোভয়, নির্ভিক সহযাত্রী ছিলেন বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। সঙ্কটময় রাজনৈতিক জীবন ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজেও তিনি সবসময় বঙ্গবন্ধুর পাশে থেকে শক্তি যুগিয়েছেন। তাই বঙ্গমাতার জীবনাদর্শ ও মুল্যবোধ হোক সকল নারীর অনুকরণীয় আদর্শ”।
স্থায়ী প্রতিনিধি আরও বলেন, আমরা যখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ভাবি কিংবা তাঁর সম্পর্কে কথা বলি তখন স্বাভাবিকভাবেই চলে আসে বঙ্গমাতার কথা। জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য থেকে নানা উদ্বৃতি তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে -কীভাবে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে বঙ্গমাতা দলীয় কর্মকান্ড সচল রাখতে ভূমিকা রেখেছেন, কীভাবে অবলীলায় দলীয় কর্মী এবং দলের প্রয়োজনে তাঁর সঞ্চিত অর্থ ব্যয় করেছেন; ৬ দফা, ৭ মার্চের কালজয়ী ভাষণসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে বঙ্গবন্ধুকে অটল থাকতে কীভাবে বঙ্গমাতা সাহস যুগিয়েছেন, অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করেও হাসিমূখে কীভাবে সংসার আগলে রেখেছেন, ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে কিভাবে নির্লোভ ও সাধাসিধে জীবন যাপন করেছেন তার নানা দিক।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্ব, উদার-মানবিক হৃদয় এবং সাদামাঠা জীবন যাপনের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “এমন মানবিক উদারতা ও দূরদর্শীতা বঙ্গমাতার আদর্শ থেকেই উৎসারিত হয়েছে। প্রবাসে বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোররা যাতে বঙ্গমাতা সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে পারে সে বিষয়ে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহণ করতে হবে”। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ৫ জন বিশিষ্ট নারীকে ‘বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক’ প্রদান করাকে একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
আলোচনা পর্ব শেষে বঙ্গমাতাকে নিয়ে কবিতা পাঠ করেন মিশনের কর্মকর্তাগণ।
উন্মুক্ত আলোচনায় মিশনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারিগণ অংশগ্রহণ করেন। আলোচকগণ বঙ্গমাতাকে জাতির পিতার রাজনৈতিক সাফল্যের অনন্য উৎস বিন্দু হিসেবে চিহ্নিত করেন। তাঁরা বলেন, বঙ্গমাতা প্রকৃতই ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একজন সহযোদ্ধা ও বিশ্বস্ত সহচর। সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পরতে পরতে বঙ্গমাতার ভূমিকা এবং তাঁর আদর্শ যুগে যুগে কালে কালে বাঙালি নারীদের জন্য আলোর দীপ শিখা হয়ে অনুপ্রেরণা যোগাবে মর্মে উল্লেখ করেন আলোচকগণ।
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান