নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কে ’নিউ ইয়ার ২০২০ সেলিব্রেশন’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তরুণ আইনজীবী ও সমাজকর্মী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, বাংলাদেশে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে স্ত্রী সন্তান ও মাকে নিউইয়র্কে রাখার সিদ্ধান্ত ব্যারিস্টার সুমনের! রেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশে জীবনের সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছি। তাই এবারই প্রথম সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার দুই বাচ্চা, আমার মা এবং আমার বউ (স্ত্রী) কে আমেরিকায় রেখে যাব। তিনি বলেন, আমি যদি বেঁচে না থাকি আমি চাই না যে আমার পরবর্র্তী প্রজন্ম ওই ভাবে সাফার করুক।
স্থানীয় সময় ১ জানুয়ারী বুধবার সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসের বাংলাবাজার-স্টার্লিং এলাকায় আল আকসা পার্টি হলে ব্রঙ্কস-বাংলাদেশী কমিউনিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এসব কথা বলেন। আয়োজক কমিটির আহবায়ক শেখ জামাল হুসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব রেজা আবদুল্লাহর পরিচালনায় উৎসবমুখর পরিবেশের এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধান আলোচক মূলধারার রাজনীতিক মোহাম্মদ এন মজুমদার, রাজনীতিক আবদুর রহিম বাদশা, মার্কস হোম কেয়ারের ম্যানেজার আলমাস আলী, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট হাসান আলী, প্রধান সমন্বয়কারী এ ইসলাম মামুন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার সৈয়দ সাঈদুল হক সুমন আরো বলেন, বাংলাদেশের এখন যে অবস্থা আল্লাহ যেন আমাকে মন্ত্রী বানিয়ে বেইজ্জত না করার চেয়ে ব্যারিস্টার সুমন হিসেবে যদি রাখেন তাতে আমি মহান রাব্বুল আলামিনের কাছে বেশি কৃতজ্ঞ থাকবো। তিনি বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টানরা মাইনোরিটি নয়। বাংলাদেশে মাইনোরিটি হচ্ছে সৎলোক। দেশে নেতার অভাব নেই কিন্তু সৎলোকের অভাব। সৎলোকের অভাবের কারণেই বাংলাদেশ এত পিছিয়ে আছে। তিনি তার বক্তব্যে কানাডার বেগম পল্লীতে বাংলাদেশের দুর্নীতিবাজদের আঁখরার কথাও উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার সুমন আরো বলেন, যারা বাংলাদেশের ভাল চায় তারা বেঁচে থাকতে পারেন নি। বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান বেঁচে থাকতে পারেন নি। শেখ হাসিনাকেও ১৯/২০ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমিও বাংলাদেশের ভাল চাই। তাই আমাকেও মেরে ফেলতে পারে।প্রধান আলোচক মোহাম্মদ এন মজুমদার মানবতার সেবায় ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার সাঈদুল হক সুমনকে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান হয়। তিনি আয়োজকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সব সময় তার এলাকাসহ বাংলাদেশের দরিদ্র-অসহায়দের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শীতার্তদের সাহায্যার্থে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। শীতার্ত তহবিলে প্রায় এক হাজার ডলার সংগৃহীত হয়।
পরে সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসের জনপ্রিয় শল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। শিল্পীদের অসাধারণ পরিবেশনা দর্শকদের দারুণভাবে মুগ্ধ করে। শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন কৃষ্ণা তিথি, শারমিন তানিয়া, সম্পা জামান, সুমন প্রমুখ। শিল্পীদের মনোজ্ঞ পরিবেশনা গভীর রাত পর্যন্ত দর্শক-শ্রোতারা উপভোগ করেন। জাকজমকপূর্ণ এ অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের নানা শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে আবারো বলেছেন স্ত্রী সন্তান ও মাকে নিউইয়র্কে রাখার সিদ্ধান্ত ব্যারিস্টার সুমনের!