বৃটিশ নাগরিকত্ব লড়াইয়ে জয় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তিন আইএস জিহাদির
সিবিএনএ অনলাইন ডেস্ক/১৯ মার্চ, ২০২১। ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে সিরিয়া যাওয়া তিন বৃটিশ-বাংলাদেশি তাদের নাগরিকত্ব বাতিলের বিরুদ্ধে করা আপিলে জয় পেয়েছে। বৃটেনের একটি ট্রাইবুনাল বৃহস্পতিবার এই রায় দেয় যে, সি৩, সি৪ ও সি৭ নামে উল্লেখিত দুই নারী ও এক পুরুষের বৃটিশ নাগরিকত্ব কেঁড়ে নেয়ার মাধ্যমে তাদেরকে রাষ্ট্রহীন করা হয়েছে।
মেট্রোর খবরে বলা হয়, বৃটেনে জন্মানো সি৩ ও সি৪ এর বৃটিশ নাগরিকত্ব ২০১৯ সালের নভেম্বরে বাতিল করা হয়েছিল। জিহাদি সংগঠনে যোগ দেয়ায় তাদেরকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করে বৃটিশ সকার। সি৭ এর জন্ম বাংলাদেশে হলেও সে পরবর্তিতে বৃটেনের নাগরিকত্ব পায়। ইসলামিক স্টেটের জিহাদিদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অপরাধে ২০২০ সালের মার্চ মাসে তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয় এবং তাকে বৃটেনের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
বৃটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, এই তিনজনেরই দ্বৈত নাগরিকত্ব রয়েছে। ফলে বৃটেনের নাগরিকত্ব বাতিল করা হলেও তারা রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েনি।
তবে তাদের আইনজীবীরা আদালতকে জানিয়েছেন, তাদের কারোরই বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেই। অর্থাৎ, বৃটিশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাদেরকে রাষ্ট্রহীন করেছে এবং এটি সম্পূর্ণ বে-আইনি।
সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বিচারক চ্যাম্বারলিন রায়ে বলেন, সি৩, সি৪ ও সি৭ বাংলাদেশের নাগরিক নয় এবং তারা বৃটেন ছাড়া বিশ্বের কোনো দেশের নাগরিকই ছিল না। এরফলে তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়ার মধ্য দিয়ে তাদেরকে রাষ্ট্রহীন করা হয়েছে। বৃটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কোনো ক্ষমতাবলেই এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন না। রায়ের পর মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রাইভের পরিচালক মায়া ফোয়া বলেন, সরকারের উচিৎ সিরিয়া থেকে এসব সাবেক জিহাদিদের ফিরিয়ে আনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদেরকে রাষ্ট্রহীন করে দিয়ে বৃটেনের ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে, এই রায়ের ফলে আইএস বধূ খ্যাত শামিমা বেগমের মামলার দিকে আবারও নতুন করে নজর পড়বে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে আরো দুই বন্ধুসহ জিহাদের উদ্দেশ্যে সিরিয়া পাড়ি জমিয়েছিল শামিমা। এরপর সিরিয়ায় আইএস পতনের পর বৃটেনে ফিরতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল সে। তবে বৃটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব কেঁড়ে নেয় এবং দেশটির আদালত রায় দেয় যে, সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতেও শামিমা বৃটেনে ফিরতে পারবে না। -সূত্রঃ মানবজমিন
এস এস/সিএ