মরদেহ পোড়ানোর ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে চীনের আকাশ!
গোপন তথ্য ফাঁস, চীনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার!
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসে চীনে সরকারি তথ্যে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬৩ জনে। করোনায় আক্রান্তের কারণে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চীন।
রাস্তায় গাড়ি-ঘোড়া নেই, কল-কারখানাও সব বন্ধ। তারপরও ধোঁয়াশায় ছেয়ে আছে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর। অনেকের ধারণা, সপ্তাহখানেক ধরে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা করোনাভাইরাসে মৃতদের মরদেহ পোড়ানোর কারণেই এই ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে।
অধিকাংশ মৃত্যু ও নতুন সংক্রমণের ঘটনা ঘটছে হুবেই প্রদেশে, যে প্রদেশের উহান শহরকে এ ভাইরাসের উৎসস্থল বলা হচ্ছে। দেশটির বাকি মৃত্যুর ঘটনাগুলো উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হেইলংজিয়াংয়ের তিয়ানজিন শহর ও গুইঝৌ প্রদেশে ঘটেছে।
এর আগে, গত ১ ফেব্রুয়ারি চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশন ঘোষণা দেয়, করোনাভাইরাসে যারা মারা যাচ্ছে, তাদের মরদেহ অবশ্যই পুড়িয়ে ফেলতে হবে। এ কারণে দিনরাত কাজ করতে হচ্ছে শেষকৃত্যে নিয়োজিত কর্মীদের। তারা বিভিন্ন হাসপাতাল, বাড়িঘর থেকে করোনাভাইরাসে মৃতদের মরদেহ সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে পুড়িয়ে ফেলছেন।
ইউন নামে উহানের এক শ্মশানকর্মী জানান, প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০টি মরদেহ পোড়াচ্ছেন তারা। গত ২৮ জানুয়ারি থেকে তিনি ও তার প্রায় সব সহকর্মীই সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘণ্টাই কাজ করছেন।
ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। চীনের বাইরে এ ভাইরাসে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ফিলিপাইন এবং হংকংয়ে।
গোপন তথ্য ফাঁস, চীনে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৫ হাজার!
সরকারি তথ্যমতে চীনে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে ২৮ হাজার ১৮ জন।
কিন্তু চীনা প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট থেকে ফাঁস হওয়া এক তথ্যে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে ২৪ হাজার ৫৮৯ জনের। আর আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৩ জন।
গত শনিবার টেনসেন্টের ওয়েবপেজে ‘মহামারি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ’ শিরোনামে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
বিশ্বজুড়ে করোনা আতঙ্ক : চীনে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড
বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসে চীনে গতকাল (বুধবার) আরও ৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬৩ জনে। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল একদিনেই সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
আজ বৃহস্পতিবার চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত চীনের ৩১টি প্রদেশে ২৮ হাজার ১৮ জন সংক্রমিত হয়েছে। এরমধ্যে গতকাল আক্রান্ত হওয়া ২৯৮৭ জনও রয়েছেন। চীনা সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ১ হাজার ১৫৩ জন সুস্থ হয়ে ইতোমধ্যে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এর মধ্যে গতকাল হাসপাতাল ছাড়েন ২৬১ জন।
অধিকাংশ মৃত্যু ও নতুন সংক্রমণের ঘটনাই ঘটেছে হুবেই প্রদেশে, যে প্রদেশের উহান শহরকে এ ভাইরাসের উৎসস্থল বলা হচ্ছে। দেশটির বাকি মৃত্যুর ঘটনাগুলো উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ হেইলংজিয়াংয়ের তিয়ানজিন শহর ও গুইঝৌ প্রদেশে ঘটেছে। করোনা চিকিৎসায় উহান শহরের ১১টি স্থানে ১০ হাজার সজ্জার অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে।
চীনের বাইরে এ ভাইরাসে মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে ফিলিপাইন এবং হংকংয়ে। ফিলিপাইনে মৃত ওই ব্যক্তির বয়স ৪৪ এবং হংকংয়ের বাসিন্দা লোকটির বয়স ৩৯। সম্প্রতি তারা উভয়েই উহান থেকে ফিরেছেন। ফিলিপাইনে মৃত ওই ব্যক্তি ২৫ জানুয়ারি থেকে ম্যানিলার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। প্রাণঘাতী এ ভাইরাস মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম ঘেরবাইয়াসস ৬৭৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা চেয়েছেন।
সূত্র : পার্সটুডে।
আরও পড়ুনঃ
সর্বশেষ সংবাদ
কানাডার সংবাদ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com