অবিশ্বাস্য হলেও সত্য মসজিদের দান বাক্সে মিলল দেড় কোটি টাকা ! কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দান বাক্স থেকে এবার রেকর্ড পরিমাণ অর্থাৎ ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা পাওয়া গেছে। প্রতিবারের মতোই টাকা ছাড়াও দান হিসেবে অনেক স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রাও পাওয়া গেছে দান বাক্সে।
প্রায় সাড়ে তিন মাস পর শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের আটটি দান বাক্স খোলা হয়। পরে দান বাক্সের টাকাগুলো বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলার মেঝেতে রেখে গণনার কাজ শুরু হয়। এ সময় টাকা গণনায় মসজিদ-মাদরাসার ৬২ জন ছাত্র-শিক্ষক ছাড়াও রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সকাল পেরিয়ে বিকেলে গণনার কাজ শেষে এ টাকার হিসাব পাওয়া যায়। এবারো রেকর্ড পরিমাণ টাকাসহ বৈদিশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। সর্বশেষ পাগলা মসজিদের দান বাক্স থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
কিশোরগঞ্জের পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, রূপালী ব্যংকের এ জি এম অনুফ কুমার ভদ্র, কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি, মাহমুদুল হাসান, উবাইদুর রহমান সাহেল, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা প্রমুখ টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, দেড় কোটি নগদ টাকা ছাড়াও পাওয়া গেছে বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার। দানে পাওয়া ছাগল, হাঁস-মুরগি প্রতি সপ্তাহে নিলামে বিক্রি করা হয়।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মীর মো. আল কামাহ তমাল বলেন, ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্স থেকে এবারো রেকর্ড পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে। এবার দান বাক্সে ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা পাওয়া গেছে। পরে পুলিশ পাহারায় স্থানীয় রূপালী ব্যাংকের মসজিদের হিসাবে সম্পূর্ণ টাকা জমা রাখা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর পাগলা মসজিদের দানবাক্স থেকে ১ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া যায়। ওই সময় বৈদেশিক মুদ্রাসহ বেশ কিছু স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে।
কিশোরগঞ্জ শহরের হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের অবস্থান। এখানে ইবাদত বন্দেগি করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায় বলে মানুষের বিশ্বাস। রোগ-শোক বা বিপদে মসজিদে মানত করলে মনের বাসনা পূর্ণ হয়। এসব বিশ্বাস থেকে এখানে প্রতিনিয়ত দান খয়রাত করে মানুষ। তিন মাস পর পর খোলা হয় মসজিদের দান বাক্স। প্রতিবারই টাকার পরিমাণ ছাড়িয়ে যায় কোটি টাকা। নানা শ্রেণি-পেশা আর ধর্মের লোকজন এখানে আসেন মানত আদায় করতে।
তিন মাস ২০ দিন অর্থাৎ ১১০ দিন পর এবার মসজিদের দান বাক্স খোলা হয়েছে মসজিদের দান বাক্সে মিলল দেড় কোটি টাকা । এর আগে গত ২৬ অক্টোবর মসজিদের দান বাক্স খোলা হয়। তবে আগের বারের তুলনায় এবার ৬৬ হাজার ১০০ টাকা কম পাওয়া গেছে।