সংবাদের প্রধান শিরোনাম, ‘অতি দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, এ বছরও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসার শঙ্কা‘
বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ২০২৫ সালেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা না আসার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক ও দেশি-বিদেশি গবেষণা সংস্থাগুলোর মতে, চলতি বছর দেশে আরও ৩০ লাখ মানুষ অতি দারিদ্র্যের মধ্যে পড়বে।
এতে অতি দারিদ্র্যের হার নয় দশমিক তিন শতাংশে পৌঁছাতে পারে। দুর্বল শ্রমবাজার, মূল্যস্ফীতির চাপ এবং মজুরি না বাড়ার কারণে গরিব মানুষের প্রকৃত আয় কমছে। যার ফলে অনেকেই অতি দরিদ্র হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন।
একটি পরিবারে যদি এক সপ্তাহ কাজ না থাকে, তাহলেই তারা দারিদ্র্যের নিচে চলে যাচ্ছে। ২০২২ সালের তুলনায় এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বেড়েছে। দেশে বর্তমানে তিন কোটি ৯০ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
একদিকে জীবনযাত্রার খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে মজুরি বাড়ছে না—ফলে প্রকৃত আয় কমে যাচ্ছে।
গবেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, বিনিয়োগ কম, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতি এবং রাজস্ব ঘাটতিও এই সংকটকে আরও বাড়াচ্ছে।
সমাধানে তারা বলছেন, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি জোরদার করতে হবে এবং আরও মানুষকে এই কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরি করলে কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে এবং মানুষ দারিদ্র্যসীমা থেকে উপরে উঠতে পারবে।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
ভারত দাবি করছে, পাকিস্তান এই হামলার পেছনে আছে। এর পর ভারত পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিলসহ পাঁচটি কঠোর পদক্ষেপ নেয়, যার মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিতও ছিল।
জবাবে পাকিস্তানও ভারতীয়দের ভিসা বাতিল, আকাশসীমা বন্ধ এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য স্থগিতসহ পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। ইসলামাবাদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, পানির প্রবাহ থামানোর চেষ্টা যুদ্ধ হিসেবে ধরা হবে।
হামলার দায় স্বীকার করেছে টিআরএফ নামের একটি গোষ্ঠী, যাকে ভারত পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তাইয়েবার সংগঠন বলে দাবি করছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, হামলাকারীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে। ভারত ইতিমধ্যে কাশ্মীরে অভিযান শুরু করেছে। এক সেনা নিহতও হয়েছেন।
দুই দেশই পরস্পরের কূটনীতিকদের সংখ্যা কমিয়েছে এবং হাইকমিশনের কর্মকর্তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। ভারতের ভিসা বাতিল, সীমান্ত বন্ধ, আকাশসীমা বন্ধ, এমনকি সার্ক ভিসা বাতিল—সব কিছুই দেখায় যে উত্তেজনা তীব্র আকার নিচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পরিস্থিতি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ২০১৯ সালের পর সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি করেছে।

নিউ এজের প্রধান শিরোনাম, ‘Political violence becomes deadlier’ অর্থাৎ, ‘রাজনৈতিক সহিংসতা আরও মারাত্মক হয়ে উঠেছে’।
প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজনৈতিক সংঘর্ষে ৩৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে ২৬ জন বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠনের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের শিকার।
শুধু মার্চ মাসেই রাজনৈতিক সহিংসতায় ২০ জন নিহত ও ৬৪২ জন আহত হন।
নিহতদের মধ্যে ১৬ জন বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে মারা যান। বিরোধপূর্ণ এলাকায় আধিপত্য, টোল আদায়, জায়গা দখল এসব কারণেই মূলত এই সংঘর্ষগুলো ঘটছে।
বিএনপি নেতারা বলছেন, দীর্ঘদিন পর অবাধ নির্বাচনের সম্ভাবনায় তৃণমূল পর্যায়ে উত্তেজনা বেড়েছে এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে তারা বলছে, সংঘর্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক চর্চার অনুপস্থিতি, আদর্শহীন রাজনীতি, দুর্নীতি ও অপরাধীকরণের কারণেই এমন সহিংসতা বাড়ছে। তারা আশা প্রকাশ করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এই পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার সময় থেকে নতুন সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর উত্থান হয়েছে, যারা এখন সংঘর্ষে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনীতিকে দুর্নীতিমুক্ত না করা পর্যন্ত সহিংসতা থামবে না।
-সূত্রঃ বিবিসি বাংলা