ফিচার্ড যাপিত জীবন

ঈদযাত্রায় নিরাপদ থাকতে যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন

মুসলিম বিশ্বের কাছে ঈদ যেন একটি বাড়তি আমেজ নিয়ে আসে। পৃথিবীর সব দুঃখ-কষ্ট ভুলে এই সময় সবাই পরিবার-পরিজন এবং নিকটাত্নীয়দের সঙ্গে ঈদ আনন্দে মেতে ওঠে। আর তাই তো সারা বছর জীবিকার প্রয়োজনে পরিবার কিংবা আত্নীয়স্বজন থেকে দূরে থাকলেও ঈদের সময়গুলোতে শেকড়ের টানে গ্রামের পথে ছুটে যায় ঘরমুখো মানুষ।

তাই যারা ঈদে যারা বাড়িতে যাবেন, তাদেরকে অবশ্যই ঈদ যাত্রায় সতর্ক থাকা প্রয়োজন। তা না হলে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে ঈদটাই মাটি হয়ে যেতে পারে। ঈদযাত্রায় নিরাপদ থাকতে যেসব বিষয়ের দিকে নজর রাখবেন-

১. ঈদের সময় মহাসড়কে চলাচলের ক্ষেত্রে অবশ্যই ফিটনেসযুক্ত বাস/গাড়ি ব্যবহার করতে হবে। গাড়ি চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সেই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে প্রশাসনের সাহায্য নিতে পারেন। কেননা আপনি যে যানে করেই ঘরে ফিরবেন সে যানটি সম্পর্কে জানতে চাওয়া যাত্রী হিসেবে আপনার অধিকারের মধ্যে পড়ে। তাই জেনে বুঝে যানবাহনে উঠুন।

২. ঈদযাত্রায় যেই জিনিসটি যাত্রীদের মাঝে সবচেয়ে আতংকের কাজ করে সেটি হলো অজ্ঞানকারী কিংবা মলম পার্টির খপ্পরে পড়া। ছদ্মবেশে থাকা এসব প্রতারক চক্র সুযোগ বুঝে হাতিয়ে নিতে পারে টাকা, মোবাইল ফোনসহ আপনার মূল্যবান সামগ্রী।

৩. যাত্রাপথে অপরিচিত কোনো ব্যক্তির দেওয়া কোনো কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। পাশাপাশি আপনার আশেপাশের পরিবেশের দিকেো নজর রাখুন এবং সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লে তাৎক্ষনিক ভাবে কর্তৃপক্ষ কিংবা আপনার সহযাত্রীদের জানান। অন্যদিকে পরিস্থিতি বেমানান মনে হলে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন।

৪. এবারের ঈদ যেহেতু গরমে পড়বে, তাই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রার পূর্বে অবশ্যই এই সময়কার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যেমন- ছাতা, পানির বোতল, স্যালাইন ইত্যাদি সঙ্গে নিতে পারেন। এতে করে আপনি নির্বিঘ্নে আপনার ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।

৫. ঈদ যাত্রার পূর্বে ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ভালোভাবে গুছিয়ে নিন এবং ঔষধ, চশমা, ইনহেলারসহ অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র অবশ্যই সঙ্গে রাখবেন।যাত্রার পূর্বে বমি কিংবা গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ সঙ্গে নিতেও ভুলবেন না। কেননা যাত্রাপথে অনেকেই বমি কিংবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভোগেন। আর এই সময় এই জিনিসগুলো জাদুর মতো কাজ করবে।

৬. ভ্রমণের সময় ও কতদিন থাকবেন সেটা বিবেচনা করে শুধুমাত্র জরুরি জিনিস নেওয়াই শ্রেয়। অপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বেহুদা ব্যাগ ভারী করার কোন প্রয়োজন নাই। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রসহ এমনকি ছোট বাচ্চা বা বয়স্কদের জন্য যা যা দরকার, শুধুমাত্র সেটি সঙ্গে রাখা উচিত।

৭. গরমে ভ্রমণের সময় হালকা, আরামদায়ক ও সহজে বাতাস চলাচল করতে পারে এমন পোশাক পরা উচিত। পায়ে নরম জুতা বা স্যান্ডেল পরা উচিত। মেয়েদের জন্য হাইহিল পরিহার করে ফ্ল্যাট পরা উচিত।

৮. রোজা রেখে ভ্রমণ করলে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে খাবার এবং প্রয়োজনীয় পানীয় সঙ্গে রাখুন। যেন ইফতারের সময় বাইরের খাবার খেতে না হয়। আর এই কারনেই ভ্রমণে খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে বেশি।

৯. ট্রেনে, বাসে কিংবা লঞ্চে ভ্রমণের সময় শিশুদের দিকে বিশেষ নজর রাখুন। এই সময় বাইরের পানীয় ও খাবার একদমই দেয়া উচিত না তাদের। কেননা বাইরের খাবারে খুব সহজেই বমি ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় শিশুরা। আর খেয়াল রাখবেন, কোনো বাচ্চা যেন জানালা দিয়ে হাত বাইরে না রাখে।

সূত্র: ইত্তেফাক ডিজিটাল ডেক্স

এফএইচ/বিডি
সংবাদটি শেয়ার করুন