সৌদি থেকে ফিরলেন আরও ১৮৩ বাংলাদেশি
একটি রাত, আটটি লাশ ও বাক্সবন্দি স্বপ্ন!
একটি রাত- আটটি লাশ ও বাক্সবন্দি স্বপ্ন! গল্প নয় সত্যি, সৌদি আরব থেকে ২০ নারীসহ আরও ১৮৩ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। গতকাল বুধবার রাত ১১.২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্স (এসভি-৮০৪) বিমানে ৮৯ জন আর রাত ১.১০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্স (এসভি-৮০৮) বিমানে ফেরেন ৯৪ বাংলাদেশি।
প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসাদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।
গতকাল ফেরত আসা সাথী বেগম (৩০) এতোটাই অসুস্থ ছিলেন যে বিমানবন্দর থেকে প্রবাসী কল্যাণ ডেক্সের সহায়তায় উত্তরার একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সাথী জানান, নিয়োগকর্তা বছর খনেক আগে গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে নিযোগকর্তা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হন।
সাথীর সাথে একই সমস্যা নিয়ে দেশে ফিরেছেন ঢাকার হিরা খাতুন, বি বাড়িয়ার আবেদা খাতুন, সুনামগঞ্জের আমিরুন বেগম, মৌলভীবাজারের ফারজানা আক্তারসহ ২০ নারী।
গতকাল ফেরত আসা পাবনার জেলার শরিফ জানান, মাত্র এক বছর আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হয়।
কিশোরগঞ্জের শাকিল, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার খাইরুল ইসলামের গল্পটাও একই কোন কারণ ছাড়াই এক বছরের মাথায় দেশে ফিরতে হলো তাদের। তাদের সাথে ফিরেছেন পিরোজপুরের শামিম, ময়মনসিংহের আমিন, কুমিল্লার বাবুল ও রশিদসহ ১৮৩ কর্মী।
শুধু যে প্রবীসারা ফেরত আসছেন তাই নয়, গত রাতে সৌদি আরব থেকে ২ নারীসহ দেশে ফিরেছেন ৮ রেমিটেন্স যোদ্ধার বাক্সবন্দি মরদেহ। স্বজনদের আর্তচিৎকার শোনার কেউ নেই কারণ রাত অনেক গভীর। চলতি বছরের এপর্যন্ত এমনি বাক্সবন্দি হয়ে ৪০৯ রেমিটেন্স যোদ্ধা ফিরেছেন নিথর দেহে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছরের জানুয়ারিতেই সৌদি থেকে দেশে ফিরেছেন ১৭৫ নারীসহ ৩ হাজার ৬৩৫ বাংলাদেশি। আর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন যাদের পরিচয় ডিপোর্টি।
শরিফুল হাসান বলেন, ফেরত আসা প্রবাসীদের আমরা শুধু বিমানবন্দরে সহায়তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছি না, তারা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য কাউন্সিলিং, দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও আর্থিকভাবেও পাশে থাকার চেষ্টা করছি। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে কাজটি করতে হবে। পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সেজন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব নিতে হবে। দূতাবাস ও সরকারকেও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ