এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে না, আবার পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা
চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিতে ভাড়া করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি মঙ্গলবার আসছে না।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অপারেটরের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার সকালে তাদের ঢাকায় নামার অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অপারেটর সোমবার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কাছে মঙ্গলবারের ওই স্লট বাতিল করার আবেদন করেছে বলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো পেছাল খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা। বিএনপি নেতারা বলছেন, তার লন্ডন যাত্রার বিষয়টি নির্ভর করছে তার শারীরিক অবস্থার ওপর। এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তার চিকিৎসক দল।
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স অপারেটর জার্মানভিত্তিক এয়ারলাইন্স এফএআই অ্যাভিয়েশন গ্রুপ শনিবার তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে যে আবেদন করেছিল, রোববার তার সাড়া দেয় বাংলাদেশ। ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সকে মঙ্গলবার সকাল ৮টায় নামার ‘স্লট’ দেওয়া হয়। চাইলে সেদিন রাত ৯টায় উড়োজাহাজটি ঢাকা ত্যাগ করতে পারবে– এমনভাবেই স্লট রাখা হয়।
এর আগে শনিবার এফএআই অ্যাভিয়েশন গ্রুপ যে আবেদন করেছিল, তাতে মঙ্গলবার ঢাকায় অবতরণ এবং পরদিন বুধবার লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার সূচি চাওয়া হয়েছিল।
তবে এ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসা ও বিএনপি চেয়ারপারসনকে নিয়ে লন্ডনের পথে রওনা হওয়ার পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে খালেদা জিয়ার সবশেষ শারীরিক অবস্থা ও মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর।
গত ২৩ নভেম্বর থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতার আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে শুক্রবার ভোরে তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল দলের তরফে। পরে কারিগরি ত্রুটির কারণে সেই অ্যাম্বুলেন্স আসতে বিলম্ব হওয়ার কথা জানায় দলটি।
কিন্তু শুক্রবার কাতার দূতাবাস থেকে বলা হয়, তাদের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে না। তার বদলে কাতারের আমির জার্মানি থেকে ভাড়া করে একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাবেন।
সেই অ্যাম্বুলেন্স কবে আসবে কিংবা খালেদা জিয়াকে কবে লন্ডনে নেওয়া হবে, তা বিএনপির পক্ষ থেকে এখনও জানানো হয়নি।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তরফে শনিবার বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন এখনো বিমানযাত্রার সক্ষমতা অর্জন করেননি। সেজন্যই তার যাত্রায় বিলম্ব হচ্ছে।
তবে ৯-১০ ডিসেম্বরের দিকে খালেদা জিয়ার বিমানযাত্রা করার মত শারীরিক পরিস্থিতি হলেও হতে পারে বলে ধারণা দিয়েছিলেন একজন চিকিৎসক। কিন্তু এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ৯ ডিসেম্বরের স্লট বাতিল করায় তার যাত্রা আবার পিছিয়ে গেল।
ঢাকায় কাতার দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে জার্মানির নুরেমবার্গভিত্তিক এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের কাছ থেকে। বোম্বার্ডিয়ার চ্যালেঞ্জার (সিএল- ৬০) সিরিজের দুই ইঞ্জিনের এই জেট উড়োজাহাজে অ্যাম্বুলেন্সের যাবতীয় সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে।
সিরিয়াল নম্বর বলছে, উড়োজাহাজটি প্রস্তুতকারক কোম্পানি থেকে সরবরাহ করা হয়েছে ২০১৮ সালে।
ইউরোপের বিজনেস জেট, ভিআইপি চার্টার উড়োজাহাজ ও এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সেবাদানকারী কোম্পানি এফএআই এভিয়েশন গ্রুপের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, তাদের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ভেন্টিলেটর, মনিটরিং ইউনিট, ইনফিউশন পাম্প, অক্সিজেন সরবরাহ, ওষুধপত্র এবং চিকিৎসা সামগ্রীসহ অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম রয়েছে।
উড়োজাহাজটিতে থাকবেন অভিজ্ঞ চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিকস, যারা আকাশপথে নেওয়া রোগীদের নিবিড় পরিচর্যার বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান রাখেন।
এর আগে গেল জানুয়ারিতে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান খালেদা জিয়া। সেবার তিনি গিয়েছিলেন কাতারের আমিরের ব্যক্তিগত বহরের একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে।
সূত্র: বিডি নিউজ




