করোনার পর বিশ্বে নতুন আতঙ্ক ‘থ্রোট ডিপথেরিয়া’
করোনা, মাঙ্কিপক্সের পর এবার বিশ্বে নুতন আতঙ্ক সৃষ্টি করছে থ্রোট ডিপথেরিয়া। অস্ট্রেলিয়ায় দুই শিশুর শরীরে এই নতুন রোগ শনাক্ত হয়েছে। এই শতাব্দিতে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার এটি প্রথম ঘটনা।
গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, নিউ সাউথ ওয়েলসে রোববার (৩ জুলাই) দুই শিশুর শরীরে এই রোগ শনাক্ত হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ এক শিশুকে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।
অপর শিশুটিও নিউ সাউথ ওয়েলসের হাসপাতালে ভর্তি আছে। ক্রিটিক্যাল কেয়ারে থাকা দুই বছরের আক্রান্ত শিশুকে ইতিমধ্যেই অ্যান্টিটক্সিন দেওয়া হয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিক এবং অক্সিজেনের সাপোর্টও দেওয়া হবে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, থ্রোট ডিপথেরিয়া একটি ব্যাকটেরিয়াজনিত ইনফেকশন (Bacterial Infection)। গলায় এবং মূলত টনসিলে (Tonsil) মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলে এই ইনফেকশন। এই ডিপথেরিয়ায় আক্রান্তদের গলায় রাতারাতি একটি ধূসর-সাদা পাতলা আস্তরণ তৈরি হয়ে যায়। যা কোনও খাদ্যবস্তু চিবিয়ে এবং গিলে খেতে সমস্যা তৈরি করে। শুধু তাই নয়, নিঃশ্বাস নিতেই সমস্যা হয় আক্রান্তের।
অস্ট্রেলিয়ার নর্থ কোস্ট পাবলিক হেলথ ইউনিট (Australia North Coast Public Health Unit) ইতিমধ্যেই দুই জন শিশুর শরীরে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার খবরটি জানিয়েছে। যার মধ্যে একজন শিশুর বয়স দুই এবং অপরজন ছয় বছরের।
নিউ সাউথ ওয়েলসের জনস্বাস্থ্য বিভাগ জানাচ্ছে, এই দুই শিশুর গলা ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিকভাবে ফুলে গিয়েছে। হৃদযন্ত্র, মাংসপেশী এবং নার্ভেও প্রভাব ফেলেছে এই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ।
থ্রোট ডিপথেরিয়ায় (Throat Diphtheria) আক্রান্তদের মধ্যে ১০ শতাংশ অতি সংকটজনক হতে পারে। এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জানা গিয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার ওই দুই শিশুকে ডিপথেরিয়ার ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি। তাদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও এই রোগ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
ক্রিটিকাল কেয়ারে থাকা দুই বছরের আক্রান্ত শিশুকে ইতিমধ্যেই অ্যান্টিটক্সিন (Antitoxin) দেওয়া হয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotic) এবং অক্সিজেনের সাপোর্টও দেওয়া হবে।
নর্থ কোস্টের জনস্বাস্থ্য আধিকারিক (North Coast Public Health Director) পল ডগলাস বলেন, “আমাদের দেশে শিশুদের টিকাকরণের উপর অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই ডিপথেরিয়ার মতো রোগের সম্ভাবনা এখানে কম।
কিন্তু, এই ঘটনা আমাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। কোনও শিশু জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যেই বিনামূল্যে ডিপথেরিয়ার ভ্যাকসিন পাবে।”
উল্লেখ্য, ১৯৪০ সালে শিশু মৃত্যুর অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই ডিপথেরিয়া। মূলত হাঁচি-কাশি থেকেই এই রোগ একজন থেকে অপরজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৪০ বছর পর পোলিওর লক্ষণ নিয়ে ব্রিটেনে ছড়িয়ে পড়েছে অজানা রোগ। যার নাম দেওয়া হয়েছে ডিজিস এক্স।