কানাডার সংবাদ

কানাডায় করোনা মোকাবেলায় ৮২ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ

কানাডায় করোনা
২৭ বিলিয়ন ডলারের সরাসরি সাহায্য ।। ৮২ বিলিয়ন ডলার মোট সাহায্য প্যাকেজ ।। ব্যবসা বানিজ্য, ট্যাক্স, ছাত্রদের লোন, শিক্ষা ইত্যাদি অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ঘোষণা। ট্যাক্স রিটার্ন এপ্রিল থেকে অগাস্ট পর্যন্ত বর্ধিত। কানাডায়  করোনা আক্রান্ত ৬৫৫ মৃত্যু ৯

অটোয়া – কানাডায় করোনা মোকাবেলায় ৮২ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে।  প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন যে কানাডিয়ানদের কোভিড -১৯ মহামারীটির জন্য  সহায়তা করতে ফেডারেল সরকার $২৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করবে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। আজ সকালে  আবারও জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেছেন কানাডা যুক্তরাষ্ট্র সীমান্ত বন্ধ (প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র ছাড়া) ২৭ বিলিয়ন ডলার সাহায্য প্যাকেজ যা  কানাডার প্রতিটি পরিবার,  ব্যবসা বানিজ্য, শিক্ষা ইত্যাদি অন্যান্য প্রয়োজনীয়ে ব্যায় করা হবে।  তাঁর মতে জনস্বাস্থ্য আর্তিক বিবেচনার ওপরে।

প্রধানমন্ত্রী মহামারীর এ দুঃসময়ে  অভূতপূর্ব আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ নিয়ে বলেছেন।  পরিবারগুলির জন্য কানাডা চাইল্ড বেনিফিটের অর্থ প্রদান বাড়িয়ে দেবে, মন্দা চলাকালীন বেতনভোগী কর্মচারীদের রাখতে ছয় মাসের জন্য কানাডা শিক্ষার্থীরা যে শিক্ষা ঋণ নিয়েছে তা কিস্তি দেতে বিরত রাখতে বলা হয়েছে এবং নাগরিকদের জন্য ছোট ব্যবসায়ের জন্য মজুরি ভর্তুকি দিবে যাতে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারে তবে  যাদের কর্মসংস্থান বীমা  রয়েছে তাদের জন্য সেটা প্রযোয্য হবে না।

কানাডায় করোনা মোকাবেলায় ৮২ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ব্যায়ের ঘোষণা। ক্যানাডার রাজস্ব সংস্থার কাছে আয়কর জমা দেওয়ার ও পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে , কারণ করোনা ভাইরাস সংকটের মধ্যে ফেডারেল সরকার জনগণ এবং ব্যবসায়িকদের জন্য আর্থিক সহায়তা দেবে বলে মনে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আজ বুধবার $২ বিলিয়ন ডলার সমর্থন প্যাকেজ উন্মোচন করেছেন যা ২  বিলিয়ন ডলার সরাসরি তহবিল সরবরাহ করবে, এবং $৫ বিলিয়ন ডলার ব্যবসায়ী ও ব্যক্তি উভয়ের জন্য ট্যাক্স স্থগিতায় কাজে ব্যবহত হবে।

ব্যক্তিদের ট্যাক্স দাখিলের সময়সীমা ৩০ এপ্রিল থেকে বাড়িয়ে  ১ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে এবং  জনসাধারণ  সিআরএতে রিটার্ন দাখিল করার জন্য আরও এক মাস সময় দিয়েছে। সরকারের কাছে ধার্য কোনও আয়কর দেওয়ার সময়সীমাও বাড়ানো হবে, যার ফলে কানাডিয়ানরা এটিকে  এবছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুদ বা জরিমানা ছাড় দিয়ে পরিশোধ করতে পারবেন।

তবে, সরকার এখনও তাদের ভবিষ্যত সুবিধাগুলি “যথাযথভাবে নির্ধারিত হয়েছে” তা নিশ্চিত করার জন্য গুডস এন্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স এবং কানাডা চাইল্ড বেনিফিট অ্যাক্টের আওতায় সুবিধা প্রাপ্ত ব্যক্তিদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রিটার্ন দাখিল করতে উত্সাহিত করছে।

ট্রুডো, ট্রাম্প কানাডা-মার্কিন সীমান্তকে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণে বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

কানাডার প্রতিটি নাগরিক তাদের পরিবারকে সহায়তা করতে, গ্রোসারি বাড়ি ভাড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে  প্রয়োজনীয় অর্থ  দেওয়ার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেছেন জাস্টিন ট্রুডো।  ট্রুডো নিরাপত্তাজনীত , “আপনি কে বা আপনি কী করেন তা আপনার স্বাস্থ্যের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত।”

প্রধানমন্ত্রী অটোয়ায় নিজের বাড়ির বাইরে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন , যেখানে তিনি প্রায় এক সপ্তাহ ধরে আত্ম-বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছেন।  কারণ ইংল্যান্ড সফরের পর ১৩ ই মার্চ তাঁর স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার ট্রুডো কভিড -১৯ এর প্রজেটিভ হওয়াতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ট্রুডোর শরীরে করোনা ভাইরাসের কোন লক্ষন না পাওয়া গেলেও আজ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় হঠাৎকরে দৌড়ে গিয়ে গরম কাপড় আনতে দেখা যায়। ফলে সাংবাদিকরা কিছুটা বিস্মিত হলে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বিষয়টাকে স্বাভাবিক করে তুলেন।

এর আগে আজ ট্রুডো এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন যে মার্কিন-কানাডা সীমান্ত অস্থায়ীভাবে অপ্রয়োজনীয় যাতায়াতের জন্য বন্ধ করা হবে, তবে এ ব্যাপারে  ট্রুডো বলেছেন যে উভয় দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সরবরাহের ধারা অব্যাহত থাকবে।

জাস্টিন ট্রুডো একে অপরকে সাহায্য করার জন্য কানাডিয়ানদেরও ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন “আমি জানি এটি একটি কঠিন সময় তবে ঠিক এ কারণেই আমাদের একে অপরকে সমর্থন করা দরকার,”।

জাস্টিন ট্রুডো ভাষণ দেওয়া এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় করোনা ভাইরাসের মতো ভয়াবহ মহামারী মোকাবেলা করতে গিয়ে স্বাস্থ্যবিভাগসহ সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। কি করে সংকট মোকাবেলা করতে হবে তা নিয়ে সরকারের মন্ত্রী বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে কর্মপন্থা নিয়ে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। তাঁর কাছে জনগণ এবং জনণের স্বাস্থ্য অর্থের চেয়েও বড় বলে মনে করেন।

উল্লেখ্য, কানাডার বিভিন্ন প্রভিন্সে করোনা ভাইরাসে রোগি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সর্বশেষ খবরে কানাডায় কোভিড-১৯  আক্রান্ত হয়ে ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সাতজন ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রদেশ এবং একজন অন্টারিও প্রদেশের। সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, পুরো কানাডায় এ পর্যন্ত ৬৫৫ জন কোভিড-১৯ এ শনাক্ত’ হয়েছে এর মধ্যে আলবার্টা প্রভিন্সে রয়েছে ৯৭ জন। করোনাভাইরাস মোকাবেলার মত জরুরি প্রস্তুতিতে হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লেও যাতে কোনো ধরনের সমস্যার সৃষ্টি না হয় সেজন্য আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে উপ-প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড দায়িত্ব পালনকারী নির্ধারণ করা হয়েছে। কানাডার আলবার্টা, ব্রিটিশ কলম্বিয়া এবং অন্টারিও প্রদেশে জরুরি অবস্থার ঘোষণা করা হয়েছে।

 



সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nineteen − 10 =