রেশনে দু মুঠো অন্ন জোগাতে লম্বা লাইন, মদের দোকানের সামনে তার থেকেও দীর্ঘ লাইন৷ সোম আর মঙ্গলবার রাজ্যে ১০০ কোটি টাকার মদ বিক্রি ৷ আর মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যে করোনা আক্রান্ত তিন হাজার ছ শো পঁয়তাল্লিশ জন৷
পুরো দেশে মৃতের সংখ্যা একশো পঁচানব্বই৷
মদের দোকান খোলার আগে রবিবার আক্রান্তের সংখ্যা ছিল দু হাজার চারশো সাতাশি জন৷ রাজ্যে মৃতের সংখ্যা ৭৯৷ তবু হেলদোল নেই প্ৰাসকদের৷
সোমবার নিয়মকানুন বলবৎ হতে হতে বেলা তিনটে গড়িয়ে যায়৷ তাই, এদিন রাজ্যে পঁয়তিরিশ কোটি টাকার মদ বিক্রি হয়৷ মঙ্গলবার পুরো সাত ঘন্টা ধরে বিক্রি হয় পঁয়ষট্টি কোটি টাকার৷ রাজ্যে দেশি ও বিদেশী মদ মিলে গড়ে প্রতিদিন চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ কোটি টাকার বিক্রি হয়৷ লকডাউনে সেই রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তাও রাজ্যে আড়াইহাজার অফ শপ এর মধ্যে খুলেছে সতেরোশো থেকে আঠারোশো দোকান৷
কলকাতায় খুলেছে পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্নটি দোকান৷ কলকাতায় এক একটি অফ শপে মদ বিক্রি হয়েছে একদিনে আট ন লক্ষ টাকার যা সর্বকালীন রেকর্ড৷ দুদিনে সরকার প্রায় সত্তর কোটি টাকা শুল্ক ঘরে তুলেছে৷ দুহাজার উনিশ – কুড়িতে মদ থেকে রাজ্য সরকার আয় করে এগারো হাজার কোটি টাকা৷ দুহাজার কুড়ি – একুশে আয় ধরা হয়েছে বারোহাজার সাতশ একতিরিশ কোটি টাকা৷ এই লকডাউন সেই আয় বাড়িয়ে দেবে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা৷ রাজ্যের নিজস্ব মদ বিপণন সংস্থা বেভকো মদের হোম ডেলিভারির জন্যে ই সরবরাহের ব্যাবস্থাও করেছে৷ দেখে শুনে মনে হচ্ছে, কারও সর্বনাশ, কারও পৌষ মাস প্রবাদটা বোধহয় এখানে খেটে যায়৷
মদের দোকানে লম্বা লাইন, লাঠিচার্জ, বোতল নিয়ে খুশ
চল্লিশ দিন পরে গোটা ভারত জুড়ে খুলে গেল মদের দোকান। কলকাতাতেও তালা খুললো অফ শপের। মদের দোকান খুলতেই যেন ফিরে এলো কয়েক দশক আগের ফুটবল মাঠ এর দৃশ্য।
মোহনবাগান – ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের দুদিন আগে লাইন পড়তো টিকিট এর। লোকে চিঁড়ে মুড়ি নিয়ে রাত জাগতো টিকিট পাওয়ার আশায়। মদের ক্ষেত্রে তা না হলেও, কলকাতায় ভোররাত থেকে মদের দোকানের সামনে লাইন পড়েছিল।
সকাল দশটায় দোকান খুলতেই সব নিয়মনীতি ভুলে বিপিনবাবুর চ্যালারা ঝাঁপিয়ে পরে কাউন্টারে। অবস্থা আয়ত্বের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে কালীঘাট এর একটি মদের দোকানে লাঠি চালাতে বাধ্য হয় পুলিশ। অবস্থা সামাল দিতে বহু দোকানের সামনে বাড়তি পুলিশের ব্যবস্থা করতে হয়। মহানন্দে এদিন বিপিন বাবুর চ্যালারা বোতল সংগ্রহ করে।
সারা দেশেরও একই অবস্থা। দিল্লি তে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। রাজস্থানে রাত থেকে লোকে লাইন দেয়। গোয়ায় বিয়ার বিক্রি রেকর্ড ছাপিয়ে যায়। চল্লিশ দিনের তৃষ্ণার্ত ভারত যেন চাতক পাখির মতো জল পেয়েছে। আর তাই, বিপিন বাবুর চ্যালারা আজ লাগামহীন।।
বাঅ/এমএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন