দেশের সংবাদ

গল্প করতে করতে বন্ধুকে খুন

গল্প করতে করতে বন্ধুকে খুন

সাহাদাত হোসেন পরশ/বাংলাদেশ, মার্চ ২৪।   পেশায় মোটর মেকানিক মোহাম্মদ শুভ (১৯)। প্রেমের সম্পর্ক গড়ে গত বছর কামরাঙ্গীরচরের এক তরুণীকে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পরই তিনি টের পান, জহির রিমন (২৬) নামে এক যুবকের সঙ্গে তার স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। ওই যুবকের সঙ্গে শুভর স্ত্রী এক সময় অনলাইনকেন্দ্রিক ব্যবসা করতেন। এটা করতে গিয়ে দু’জনের মধ্যে পরিচয়। স্ত্রীর সূত্র ধরে জহিরের সঙ্গেও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় শুভর। তবে তিনি জানতেন, বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক বজায় রাখছেন জহির। বেশ কয়েকবার এ ধরনের সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চাপও দেন। এর পরও জহির ছিলেন বেপরোয়া। শেষ পর্যন্ত পরিকল্পনা করেন জহিরকে দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দেওয়ার। পুলিশের তদন্ত ও আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে হত্যার আদ্যোপান্ত উঠে এসেছে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ৭ মার্চ রাতে জহিরকে কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে ডেকে সিএনজি অটোরিকশায় বছিলা ব্রিজ এলাকায় নিয়ে যান শুভ। নদীর পারে নির্জন রাতে দুই বন্ধু হাঁটতে হাঁটতে নানা গল্প করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে কেন অনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখছেন- জানতে চান। প্রথমে বিষয়টি অস্বীকার করেন জহির। তখন ঘটনাস্থল থেকেই স্ত্রীকে লাউড স্পিকারে ফোন করে জহিরের সঙ্গে তার সম্পর্কের ব্যাপারে তথ্য জানতে চাইলে ‘হ্যাঁ’ সূচক জবাব দেন। এর পরই কাছে থাকা হাতুড়ি দিয়ে তার মাথায় কয়েকটি আঘাত করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ নদীতে ফেলে বাসায় ফেরেন শুভ। পরিকল্পনা করেই আগে থেকে কাছে হাতুড়ি রাখেন তিনি।
জহিরের খোঁজ না পেয়ে ৭ মার্চ তার পরিবারের পক্ষ থেকে কামরাঙ্গীরচর থানায় নিখোঁজের জিডি করা হয়। পরদিন প্রযুক্তিগত তদন্তে তার মোবাইল ফোন কাফরুল এলাকায় পাওয়া যায়। জহিরের মোবাইল ফোনসহ একজনকে আটক করে পুলিশ। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্তে প্রাথমিকভাবে বেরিয়ে আসে শুভর নাম। এর পর তাকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন জহিরকে হত্যার কথা। তবে পুলিশ তখনও লাশের সন্ধান পাচ্ছিল না। এরই মধ্যে পুলিশের কাছে খবর আসে- ৮ মার্চ কামরাঙ্গীরচরের শেষ সীমান্ত সাভার থানা এলাকায় নৌ-পুলিশ নদী থেকে একটি অজ্ঞাতপরিচয় লাশ উদ্ধার করে। ওই মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে সাভার থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলাও করা হয়। মৃতদেহের পরিচয় না পেয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এর পর পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে নিহতের স্বজনরা হাসপাতালে ছুটে যান। লাশটি জহিরের বলে তারা শনাক্ত করেন।
শুভ নানির কাছে থেকে বড় হয়েছেন। তার নানি পেশায় আইনজীবী। গ্রামের বাড়ি সাভারের লুটেরচর।

পুলিশের লালবাগ বিভাগের ডিসি বিপ্লব বিজয় তালুকদার সমকালকে বলেন, হত্যায় ব্যবহূত হাতুড়ি জব্দ করা হয়েছে। অনৈতিক সম্পর্কের জের ধরেই জহিরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সময় শুভর এক সঙ্গী পুরো দৃশ্যটি দেখছিল। এখন পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। তাকে ঘটনার সাক্ষী করা হবে।
কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি মো. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, হত্যার পর ভিকটিমের মোবাইল ফোনটি সাড়ে ৭ হাজার টাকায় পরিচিত একজনের কাছে বিক্রি করেন শুভ। জহিরের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। -সূত্রঃ সমকাল


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন