ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়ের এ সপ্তাহের কবিতাগুলো

 

 

জয়িতা চট্টোপাধ্যায়ের এ সপ্তাহের কবিতাগুলো


বিচ্ছিন্ন:
আবহমান হাওয়া কাউকে ডেকেছিল কবে
সমস্ত ক্ষতের দিকে যে ভাবে ছুটে যায় কবিতারা
বিচলিত রাতের সমাগমে
অনেক কষ্টের ভেতর যেভাবে থাকে গোপন মিথ্যাচার, বাস্তব পৃথিবী মাথা নীচু করে
নিঝ্ঝুম মরে যেতে ইচ্ছে করে আমার
দূর থেকে ছুটে আসে হাওয়া
কবিতারা যখন সামনে এসে দাঁড়ায়
ক্ষতকেও তখন উপার্জন বলে মনে হয়
দুঃখের গা থেকে বের হয় চন্দনের গন্ধ
মনে হয় অনেক আলো জমিয়েছি তপস্যা করে
সেতু ভেঙে উঠে আসে আমার কবিতারা
বিচ্ছিন্ন হয়ে যাই তোমার থেকে
সেতুর ওপারে তুমি সবচেয়ে সুন্দর, আমার ভালোবাসা, 
নদী পেরিয়ে যাবনা আর পুরনো ধুলোর কাছে, 

আমার কবিতার ভেতর আজও তোমার জায়গা আছে।।



 
 
এক চিলতে সংবাদ:
আজও কত অন্ধতা পিছন ফিরে আছে
লিখতে পারিনি চিঠি সমুদ্রকে
একটা রুক্ষ মুখোশ বাইরের জগতের জন্য
তোমাকে রেখেছি জটিল বৃত্ততে
আমার বুকের খাঁচার ভেতর
কত অনুযোগ বিষন্ন বসে থাকে
না কোনও বৃত্তই জটিল নয়
তাত্ত্বিক আগুনে আমাদের যে প্রেম ছিল
অরুনাক্ষ রেল লাইন বাহু ডোরের মধ্যে রেখেছিল যাকে, তীব্র আলিঙ্গন প্রাণ ছেড়ে দিল ভেতরে
উপুড় হয়ে পড়ে কেঁদেছিল প্রেম ভীষণ গভীরে
মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত
টুপটুপ করে রক্তের মধ্যে ঝরে পড়েছিল প্রেম
এক চিলতে সংবাদ ছিল হাতের মুঠোয়

তোমাকে সে পেতে চেয়েছিল নিজের করে।।



 
প্রতীক্ষা ২:
শীর্ণ ডালটি পড়ে আছে মাটিতে
যেন কতদিনের আক্ষেপ জমে আছে বুকে
দিন যায় রাত যায় তবু ফোটেনি একটি ফুল ও
ফোটেনি ওর বুকে, কি জানি কার প্রতীক্ষায় ডালপালা বিছিয়ে পড়ে থাকে, 
হয়তো প্রতীক্ষা একটা পাখি আসার

যদি পাখিটা বাসা বাঁধে তাকে দিয়ে।।



 
গাছ:
আজ আমার বুকে চুঁয়ে  পড়ে ঝলসানো তাপ
গাছের মত শুষে নিই সব তাপ নিজের বুকে
আমি চাই কেউ তোমার মুখে ফোঁটা ফোঁটা জল দিক

সারা আকাশ জুড়ে মেঘ ভেসে আসবে আমি জানি ঠিক।।



 
মৃত্যুর ডাক
তোমার গভীর আলো ভাবায় আমাকে সারারাত
জানি না কার মৃত্যু হবে, কি করে লিখব একটা প্রভাত, চোখ ছুঁয়ে যায় বিকেলের তৃষ্ণা
অশ্রু চোখে পাঠক দাঁড়িয়ে থাকে
দেখি মৃত্যু এসে কবে আমার কোন কবিতা কে ডাকে।। 


 
মৃত্যুর দান:
জানাতে চাই দূর থেকে আমি
তোমার আজ আর ভয় পাওয়ার কিছু নেই
যখন তখন যেকোন সম্পর্ক ই জড়িয়ে নিতে পারে তোমায়, আকাশ তৃষ্ণার্ত হোক কোনও অলৌকিক প্রশ্নে, তোমার আর ভয় নেই, আকাশ থেকে আসবে না নেমে অঝোর কান্না, কি জানি আমরাই হয়তো নিরুপায়, আমরাই অনিশ্চিত, যাই হোক আর না
ফিরিয়ে নিলাম তোমার চোখ থেকে নদীর ধারনা
শশ্মানের ডাক আলেয়া র মতো
দপ্ করে জ্বলে ওঠা চিতার আগুন
অপেক্ষা করার সময় আর আমার কাছে নেই
তাই আমার প্রেম ফুরিয়ে যাওয়ার আগে তুমি পড়ো অন্য কারো প্রেমে, দ্রুত খুঁজে নিও ঠোঁট
তীব্রতর আলিঙ্গন, আমাকে না খুঁজে
নতুন নতুন দুঃখের ধারনা মুছিয়ে দিলাম
তোমার জীবন থেকে চিরতরে।। 



 
 
শ্যামনগর, উত্তর চব্বিশ পরগনা, ভারত
সংবাদটি শেয়ার করুন