টাইটানিক জাহাজ ঘিরে অবশেষে ২৬ বছরের পুরনো রহস্যের জট খুলেছে। সমুদ্রের যেখানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ উন্মোচিত হয়েছিল সেখান থেকে মাত্র কয়েক মিটার দূরে একটি “ঘন” এবং সমৃদ্ধ বাস্তুতন্ত্র খুঁজে পেয়েছেন ডুবুরিরা।
এখন থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে, PH নারজিওলেট, ডুবোজাহাজের একজন অভিজ্ঞ পাইলট এবং একজন বিখ্যাত টাইটানিক ডুবুরি একটি রহস্যময় বস্তু আবিষ্কার করেছিলেন যা ১৯১২ সালের জাহাজ ধ্বংসের আশেপাশের এলাকায় পড়ে ছিল।
নারজিওলেট যা দেখেছেন তা জাহাজের ধ্বংসাবশেষ বা ভূতাত্ত্বিক কোনো বৈশিষ্ট্য কিনা তা ভেবে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছিলেন ।
চলতি বছরের ২৫ অক্টোবর, অবশেষে তার অমীমাংসিত রহস্যের উত্তর পাওয়া যায়। নারজিওলেট সাঁতার কেটে লক্ষ্যে পৌঁছেছিলেন এবং আবিষ্কার করেছিলেন যে বস্তুটি আসলে একটি আগ্নেয়গিরির প্রাচীর।
OceanGate Expeditions বিশেষজ্ঞ Oisin Fanning গবেষণার জন্য অর্থায়ন করেছেন এবং ফাউন্ডেশনের বৈজ্ঞানিক দল তথ্য সরবরাহে নেমেছে। সংস্থাটি এলাকার ফুটেজ প্রকাশ করেছে, যেখানে রিফের স্পঞ্জ, প্রবাল এবং এর চারপাশে সামুদ্রিক জীবন দেখানো হয়েছে। ঘটনাস্থলটি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের এলাকা থেকে ২৯০০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত। এখানে অসাধারণ জীববৈচিত্র্য সমন্বিত একটি প্রাচীর পেয়েছেন গবেষকরা।নার্জিওলেট জ্যাম প্রেসকে বলেছেন- ”আমরা জানতাম না আমরা কী আবিষ্কার করতে চলেছি। ভেবেছিলাম এটি হয়তো অন্য কোনো জাহাজের ধ্বংসাবশেষ ।
আমি এতদিন এই বৃহৎ বস্তুটি অন্বেষণ করার সুযোগ খুঁজছিলাম। এই অঞ্চলটি অন্বেষণ করা এবং এই আকর্ষণীয় আগ্নেয়গিরির গঠনকে খুঁজে পাওয়া আশ্চর্যজনক ছিল। ”জাহাজটি বর্তমানে সমুদ্রের তলদেশে অবস্থান করছে এবং কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড থেকে ৪০০ নটিক্যাল মাইল দূরে রয়েছে।
বিখ্যাত টাইটানিক ১৫ এপ্রিল, ১৯১২ তারিখে একটি হিমশৈলে ধাক্কা খাবার পরে ডুবে যায়।OceanGate বর্তমানে আগ্নেয়গিরির প্রাচীরের ফুটেজ পর্যালোচনা করছে। OceanGate-এর প্রধান বিজ্ঞানী স্টিভ ডব্লিউ রস, ব্যাখ্যা করেছেন যে ”কীভাবে আবিষ্কারটি সমুদ্রের তলদেশের জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনাকে উন্নত করবে। আপাতদৃষ্টিতে বেসাল্ট আগ্নেয়গিরির গঠনগুলি অসাধারণ, এবং আমরা উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের ২৯০০মিটার গভীরে বিকশিত স্পঞ্জ, বাঁশের প্রবাল, অন্যান্য ঠান্ডা জলের প্রবাল, স্কোয়াট লবস্টার এবং মাছের বৈচিত্র্য দেখে বিস্মিত হয়েছি।
এই আবিষ্কার টাইটানিক এবং এর আশেপাশের অজানা বাস্তুতন্ত্রকে উন্মোচন করার সুযোগ করে দিয়েছে। ” এই আগ্নেয়গিরির আবিষ্কার সমুদ্রের পরিবেশকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করবে বলে আশাবাদী গবেষকরা।
সূত্রঃ মানবজমিন