তামাদি প্রেমের জন্য ঃ পুলক বড়ুয়া
আমার কোনো মানসম্মান নেই, বুঝলে, থাকলে,
এ পর্যন্ত বেয়াকুফ আমি তোমাকে ভালোবাসতাম না ।
আজও বেয়াক্কেল আমি তোমাকে ভালোবাসতাম না ।
আমি বড্ড উন্মাদ ।
আমি বদ্ধ উন্মাদ ।
আমি বেহায়া-বেতাল-মাতাল-বেসামাল ।
আমি বেহুঁশ ।
চক্ষুলজ্জা বলিয়া আমার কিছু নাই ।
বল, আমার মতো খাটাশ-বদমাশ ক’জন আছে ?
আমি তো নিছক চোর-জোচ্চুর-ডাকাত-দস্যু ।
আমার মতো লম্পট দুজন হয় না ।
— তামাদি প্রেমের জন্য ।
ভালোবাসার জন্য ভয় পেয়েছি,
ভালোবাসার জন্য মানুষকে
এত নীচে নামতে হয় ? জানতাম না ।
—পা-ধরা বাদ শুধু
আর কী-কী ধরতে হবে, তাও জানি না ।
ধরব কেন ? ধরে রাখতে না-পারি যদি ?
ধরা দ্যায় না যে । দেবে না ।
তাকে ধরতে যাই,
তাকে ধরতে নাই ।
অদ্ভুত শয়তান আমি । ভারী অসভ্য ।
অসভ্যদের মধ্যে মহাঅসভ্য আমি ।
নিকৃষ্ট অসভ্য আমি ।
উৎকৃষ্ট অসভ্য আমি ।
সেরা অসভ্য আমি ।
এরকম কাউকে দ্যাখেছ ?
এমন কাউকে দ্যাখেছ ?
এই মানুষকে কে ভালোবাসে ?
তুমিও বাসোনি বলে করোনি ।
ভুলে গেছি শুধু নির্জন নিজেকে ।
বিপুল আত্মবিসর্জনে ।
সভ্যতা-ভব্যতা যারপরনাই দিলাম জলাঞ্জলি ।
কখন যে নষ্টামীর মুখোশ নিজেই এঁটেছি,
ঘুণাক্ষরেও পায়নি টের ।
এটা কী, কথায় বলে না, সোজা আঙুলে ঘি ওঠেনি বলে, আঙুল-বক্রতত্ব !
সরাসরি সোজাসুজি আঙুল ডুবিয়ে খাব ঘি ?
এটা কী হয়,—তাহলে, তো বসে বসে, আঙুল চুষতে হবে।
ভদ্দর-ছদ্মবেশ ছুঁড়ে বেরিয়েছি,
সুশীল সহজ-সরল সমাজ ছিঁড়ে ।
আমি তো নির্দলীয়-নিরপেক্ষ নই ।
আমারও তো ভয়ংকর-পক্ষপাত আছে,
আমিও তো কাউকে-না-কাউকে ভালোবাসি ।
অপরাধ হোক । দোষ হোক ।
পাপপুণ্য বুঝি না ।
শূন্যপূর্ণ বুঝি না ।
মন্দভালো বুঝি না ।
ক্ষতিলাভ বুঝি না ।
ন্যায়অন্যায় বুঝি না ।
শুধু বুঝি,
শুধু জানি,
মেঘ নয়, বেগের আবেগ :
খোল ভালোবাসা,
অন্ধবন্ধ প্রেম,
প্রিয় নিকষিত হেম ।