নায়িকা শিমুকে হত্যার কারণ জানালেন স্বামী নোবেল
চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুকে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন তার স্বামী সাখাওয়াত আলীম নোবেলসহ গ্রেপ্তারকৃতরা। দাম্পত্য কলহের জের ধরেই শিমুকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন স্বামী নোবেল।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার। তিনি আরও বলেছেন, মরদেহ গুম করতেই লাশ কেরাণীগঞ্জে নেওয়া হয়েছিল। কোথায় হত্যাকাণ্ড হয়েছে, এটা বিস্তারিত তদন্ত না করে এখনই আমরা বলতে পারবো না।
এর আগে গতকাল সোমবার কেরানীগঞ্জের আলীপুর ব্রিজের ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয় চলচ্চিত্র নায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর মরদেহ। আগের দিন রোববার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন শিমু। লাশটি বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত ও বস্তাবন্দি করে লাশ ফেলে দেওয়ার ঘটনায় ব্যবহৃত প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিমুর ভাই বাদী হয়ে একটি মামলাও করেছেন। শিমুর বড় ভাই বলেন, শিমু ও তার স্বামীর মাঝে প্রায়ই ঝগড়া হতো। সেই ঝগড়ার সূত্র ধরেই হয়তো তাকে হত্যা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহীদুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, লাশটি টুকরা করে দুটি বস্তায় ভরে ফেলে রাখা হয়। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে খবর পেয়ে খণ্ডিত অংশগুলো উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শিমুর গলায় একটি দাগ রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নায়িকা শিমু হত্যা : স্বামী ও তার বন্ধু তিন দিনের রিমান্ডে
বাংলা চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী রাইমা ইসলাম শিমু হত্যা মামলায় স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল ও তার বন্ধু আব্দুল্লাহ ফরহাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেরানীগঞ্জ মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর চুন্নু মিয়া আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।
ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া বেগম শুনানি শেষে প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। শুনানিকালে আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আজ দুপুরে ঢাকা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘গতকাল সোমবার সকাল ১০ টার দিকে স্থানীয়ভাবে একটি মৃতদেহ পড়ে থাকার সংবাদ পায় কলাতিয়া ফাঁড়ির পুলিশ এবং কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ওসি ও কেরানীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। খবর পেয়ে তারা হযরতপুর ইউনিয়ন পরিষদের আলীপুর ব্রীজ থেকে ৩০০ গজ উত্তর পার্শ্বে পাকা রাস্তা সংলগ্ন ঝোপের ভেতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় অজ্ঞাত ৩২ বছর বয়সী এক নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করে। মৃতদেহের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়। পোস্টমর্টেমের জন্য মৃতদেহটি মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে মৃতদেহের নাম পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়। তদন্তকালে জানা যায়, মৃতদেহটি চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর।’
তিনি বলেন, ‘খুনিরা যদিও খুবই পরিকল্পিতভাবে লাশটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন হযরতপুরে ফেলে যায়। তবে তারা কিছু চিহ্ন রেখে গিয়েছিল। আমরা গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিমুর স্বামী নোবেল এবং তার বাল্যবন্ধু এস এম ওয়াই আব্দুল্লাহকে রাতেই কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় নিয়ে আসি। তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের ফলে শিমুর স্বামী ও তার বন্ধুর এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন পারিবারিক বিষয়কে কেন্দ্র করে নোবেলের সঙ্গে দাম্পত্য কলহ শুরু হয় শিমুর। দাম্পত্য কলহের জেরে গত রোবার সকাল আনুমানিক ৭-৮টার মধ্যে যেকোনো সময় খুন হন শিমু। তার লাশ গুম করতে সহায়তা করেন আব্দুল্লাহ ফরহাদ।’
এদিকে শিমুকে হত্যার ঘটনায় তার ভাই হারুনুর রশীদ কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান