পাথরে পাথর ||||| পুলক বড়ুয়া
পায়ের তলায় খাড়া গিরি—কঠোর উন্নত শিরে দাঁড়িয়ে প্রস্তর। সে এক স্থবির পাথর : পাথরে খোদিত—পাথুরে কাহিনি।
পতিত পাথর একক পাথর একাকী পাথর কঠিন পাথর।
অচিন পাহাড় অচেনা সাকিন। জামতলী।
তখন দুপুর। পেছনে মানিকছড়ি
বাজার। চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে
উঠলাম মন্দির প্রাঙ্গণে।
মনে হয়, মৌনতার মগ্ন-নগ্ন বুকে জমেছে তুষার;
আরণ্যক বুকে বরফের কুচি হয়ে কাঁদে সাদা ভাত।
মূক পাষাণের জবুথবু ভঙ্গুর মূর্তির সম্মুখীন
মুখোমুখি আমরা সবাই : ননী, শান্তা, রূপক ও আমি।
একোন পাষাণ-প্রতিমূর্তি : নির্বাসিত—জীবন্ত ভাস্কর্য!
কে নির্মাণ করেছে এমন নিঃসঙ্গ-নির্মাণ!
ভাষাহীন, আশাহীন, দিশাহীন—নিঃসীম-শূন্যতা?
অটল-অনড় জেদ? আত্মাভিমান? নির্বাক
দৃষ্টি, দ্রোহী মন—ঘুরে ঘুরে মৌন কথা কয়।
ভেতরে ভেতরে তার বুকের ভেতরে
গুমরে উঠছে ভাঙা-আত্মআর্তনাদ।
গুলির মতোন যেদিকে ছুটছে
বনভূমিকে ঝাঁঝরা করে দিয়ে যাচ্ছে।
গেরুয়া পাতার মর্মর ধ্বনির মতো
শীতের শিশিরে চুপচাপ টুপটাপ শব্দ
যেমন : জম্পেশ জমে থাকে—
লোবানের আঁখি থেকে নীলজল মোছে অমল আঁচল।
নীরক্ত পাথর এক। নিষিদ্ধ পাথর এক।
এতকাল বুকে ছিল যে জগদ্দল পাথর আর নেই।
এইবার জ্বলবে আগুন—
পাথরে পাথর ঘঁষে—দারুণ আগুন!