নিউইয়র্কে করোনা টেস্টে দুই শতাধিক প্রবাসী
এনআরবি নিউজ, নিউইয়র্ক : : ‘মার্ক হোমকেয়ার’র সহায়তায় ৫ জুন শুক্রবার নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে বাংলাদেশী অধ্যুষিত চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডে দিনব্যাপী করোনা টেস্টের ভ্রাম্যমান ক্যাম্পে দুই শতাধিক প্রবাসী অংশ নেন। এভাবেই করোনা টেস্ট অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিভিন্ন কমিউনিটিতে। এই সেন্টার পরিচালনায় ছিলেন কমিউনিটি লিডার কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ। টেস্টিং চলার সময় এসেছিলেন কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট ডেমক্র্যাটিক পার্টির লিডার এটর্ণী মঈন চৌধুরীসহ বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার বিশিষ্টজনেরা। সকলেই এমন একটি আয়োজনের প্রশংসা করেছেন। ‘কারণ, অনেকেই নানাবিধ কারণে হাসপাতালে যেতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছেন। অথচ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত কিনা তা নিশ্চিত হতে আগ্রহী সকলেই। সেই পথ সুগম হলো এমন আয়োজনে’-উল্লেখ করেন কাজী আজম। তিনি বলেন, সামনের শুক্রবার একইধরনের টেস্টিং সেন্টার অনষ্ঠিত হবে জ্যাকসন হাইটসে ডাইভার্সিটি প্লাজায়। বাংলাদেশী পুলিশ এসোসিয়েশন তথা বাপা এবং ফোবানার সহযোগিতায় পরবর্তীতে ব্রঙ্কস এবং জ্যামাইকাসহ কমিউনিটির বিভিন্ন স্থানে এমন ক্যাম্প করার কথাও জানান মার্ক হোমকেয়ারের কর্মকর্তা মি. জিম।ব্রুকলীনের এ ক্যাম্প পরিচালনায় সর্বাত্মক সহায়তা ছিলো ‘হেল্পিং হ্যান্ড ফর চিটাগানিয়ান’ (চট্টগ্রামবাসীর জন্যে সহযোগিতাকারিরা) নামক সদ্য প্রতিষ্ঠিত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। করোনায় আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে ইতিমধ্যেই বিপুল অর্থে ক্রয় করা চিকিৎসা সামগ্রি পাঠিয়েছে চট্টগ্রামে-এ তথ্য জানান কর্মকর্তারা।
বর্ণ-বৈষম্য অবসানের আন্দোলনে বাংলাদেশী চিকিৎসকরাও
বর্ণ-বৈষম্য অবসানের আন্দোলনে বাংলাদেশী চিকিৎসকরাও অংশগ্রহণ করেছেন। নিউইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, পেনসিলভেনিয়া, ফ্লোরিডা, জর্জিয়াসহ ১৬ স্টেটের অর্ধ শতাধিক বাংলাদেশী আমেরিকান চিকিৎসক এক যুক্ত বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বর্ণ-জাতিগত অবিচারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। ৫ জুন শুক্রবার প্রদত্ত এই বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেছেন, স্বাধীনতার মূল্যবোধ, সম-অধিকার অথবা ন্যায় বিচার এবং সহনশীলতার ভিত্তিতে অভিবাসী সমাজ যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। অথচ প্রতিষ্ঠার পর থেকে কী এক অদৃশ্য কারণে কৃষ্ণাঙ্গরা কোন সেক্টরেই শ্বেতাঙ্গদের সমান সুযোগ পাচ্ছেন না। আর এমন বৈষম্য গৃহায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং বিচার বিভাগে ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রেও বিদ্যমান।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা-সেবায় নিরলসভাবে অবদানের জন্যে বাংলাদেশী আমেরিকান চিকিৎসকরা গৌরববোধ করেন। কভিড-১৯ আক্রান্তদের সেবায় বাংলাদেশী চিকিৎসকরাও নিজের জীবন বাজি রেখে সর্বক্ষণ সক্রিয় রয়েছেন সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে। ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেশ ক’জন চিকিৎসকের প্রাণহানীও ঘটেছে। এক্ষেত্রে ঐতিহাসিক একটি সত্য উপলব্ধিতে রাখা উচিত যে, আমরা আজকের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে আফ্রিকান-আমেরিকানদের সৃষ্ট নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অবদান অনস্বীকার্য। সে আন্দোলনে অসংখ্য আফ্রিকান-আমেরিকানের রক্ত ঝরেছে, অশ্রুপাত হয়েছে। তাদের সেই ত্যাগের মাধ্যমে অর্জিত অধিকারের বলেই আমরাও যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনের সুযোগ পেয়েছি। নিজেদেরকে আমেরিকান হিসেবে পরিচিত করার অধিকার পেয়েছি। তাই কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক যে আচরণ চলছে, তার বিরুদ্ধে আমাদেরও রুখে দাঁড়াতে হবে। সামিল হতে হবে চলমান গণআন্দোলনে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চলমান আন্দোলন কখনো কখনো সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে, লুটতরাজের ঘটনাও ঘটছে। কিন্তু এটি ভুলে গেলে চলবে না যে, সহায়-সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হবার সাথে পুলিশী বর্বরতায় মৃত্যুবরণকারিদের জীবনের কোন তুলনা হবে না।
‘কমিউনিটির সদস্য হিসেবে আমরা নিজেদের দায়িত্ব এড়াতে পারি না। বর্ন-বৈষম্য, জাতিগত বৈষম্যের অবসানে যে আন্দোলন চলছে তার সাথে আমরাও একাত্মতা ঘোষণা করছি’-উল্লেখ করা হয়েছে এই বিবৃতিতে।
স্বাক্ষরকারি ৬১ চিকিৎসকের মধ্যে রয়েছেন নিউইয়র্কের আবুল আযাদ, কামাল আহমেদ, মাহবুব আহমেদ, মোহাম্মদ আলম, প্রতাপ দাস, ইউসুফ আল মামুন, নাহরিন মামুন, তানভির মোস্তফা ইসলাম, সৈয়দা হুসেন, নৌশিন হাকিম, এ এস এম জুন্নুন চৌধুরী, ক্যালিফোর্নিয়ার আবু নসর, রুবি হুসেন, সালমা খান, সোহাইল খান, কানেকটিকাটের গোলাম রসুল গাজী, দেলওয়ারের আশিক আনসার, নুরুন বেগম, ফ্লোরিডার বাশার এম আতিকুজ্জামান, বশীর আহমেদ, মাহমুদুল হক, ইকবাল আহমেদ, ইমতিয়াজ আহমেদ, হাসান আহমেদ, জর্জিয়ার মোহাম্মদ আলী মাণিক, খাজা আহমেদ, সাইমা খান, কেন্টাকির আয়শা সিকদার, ইয়াহিয়া মান্নান, মুশতাক আহমেদ, ম্যারিল্যান্ডের হালিদা হানোম, আব্দুল্লাহ আল বাকি, রফিক আহমেদ, ম্যাসেচুসেট্্স’র ইশমত হাকিম, মিশিগানের মোহাম্মদ হোসেন, মোতাহার আহমেদ, নিউজার্সির মাহবুব রহমান, ফিরোজ রহমান, ফজলে নূর, নেভাদার চৌধুরী এম আহসান, সেলিনা পারভিন, নর্থ ক্যারলিনার আবুল ইমাম, দবিরুদ্দিন হুমায়ূন, মালেকা আহমেদ, রিয়াজ চৌধুরী, ওহাইয়োর জামিল আহমেদ, পেনসিলভেনিয়ার জিয়াউদ্দিন আহমেদ, ফাতেমা আহমেদ, মঞ্জুর আহমেদ, কাজী আলতাফ হোসেন, আজাদ আহমেদ, ইবরুল চৌধুরী, নাহরিন আহমেদ, মালিহা আহমেদ, টেক্সাসের নৌশিন জামাল এবং বাসেত খান। আন্দোলনের প্রতি অকুন্ঠ সমর্থন আদায়ের এ পরিক্রমায় নেতৃত্ব প্রদানকারি চিকিৎসক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ৫ জুন রাতে এ সংবাদদাতাকে জানান, ‘স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়েছে। আরো অনেকে রয়েছেন শীঘ্রই তাদের সহমতও পাবো। কারণ, সকলেই ক্ষুব্ধ কৃষ্ণাঙ্গদের সাথে পুলিশী আচরণে।
সি/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন