বিচিত্র কুমার-এর চারটি কবিতা
—————————————————————
তোমাকে আমি শতশত প্রজাপতি মাঝে
সেদিন মুগ্ধনয়নে দেখছিলাম বারবার,
তুমি ডানামেলে উড়ছিলে ফুলে ফুলে
আমার দিকে ফিরেও চাওনি একবার।
হয়তো বা অন্য কেউ—
কী যে দারুন লাগছিলো তোমায়
রেশমীচুরি আর হলুদ বর্ণ শাড়িতে,
আমার দু’চোখ ফিরাতে পারছিলাম না
যেন কোন এক অদ্ভুত মায়াতে।
অবশেষে পৃথিবীর বুক চিড়ে সন্ধ্যা নামল
ফিরে এসে যখন নিশিতে চাঁদের দিকে তাকাছিলাম
তখন তোমার মায়াবী মুখটি বারবার প্রতিফলিত হচ্ছিল
আমি দু’চোখের পাতা কিছুতেই এক করতে পারছিলাম না
সেই দৃশ্যগুলো বুকের মধ্যে শুধু আনছান করছিল।
ইচ্ছে করছিল রঙতুলিতে তোমার ছবি
এ হৃদয়মাঝে আঁকতে বারবার।
————————————————————-
ওগো এই শহরের সেই সেই মেয়ে
পাগল হতে চাই তোমার আঁখি পানে চেয়ে,
চোখ জুড়াবো বুক জুড়াবো তোমার ভেজা চুলে
চায়ের কাপে ঠোঁট ভেজাব চুমুক দিয়ে ভুলে।
হাত বাড়াব পা বাড়াব চাইলে তুমি মেয়ে
বুকের ভিতর আগুন জ্বলে যেন চিনচিনিয়ে,
লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি তোমায় চশমার ফাঁকে পথে
তোমায় পাশে পেলে হারিয়ে যাব তেপান্তরের মাঠে।
মাঠ পেরিয়ে বন পেরিয়ে যেতাম স্বপ্নপূরীর দেশে
যেখানে প্রেমিক প্রেমিকারা হাবুডুবু খায় প্রেমসাগরে ভেসে,
হয়তো দু’জনে একটু বসতাম কোন এক ফুল বাগিচার নীড়ে
দুষ্ট মিষ্টি কথা বলতাম হেঁটে হেঁটে সমুদ্রসৈকতের তীরে।
ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখে বলে উঠতাম ভালোবাসি
কল্পনাতে আদর দিতাম সোহাগ দিতাম হাজার রাশিরাশি,
আসতে যদি ছুটে তুমি আমার বুকে কেঁদে
বাসতাম ভালো জীবন দিয়ে রাখতাম হৃদয় খাঁচায় বেঁধে।
——————————————————————
যদি কখনো মনে পড়ে আমাকে
তুমি চলে এসো কোন এক পড়ন্ত বিকালে,
সৈই শানবাঁধানো পুকুরের তীরে সখীদের ভীড়ে
এখনো সেখানে প্রজাপতি দল ডানা মেলে।
শিমুল ডালে এসে বসে মাছরাঙা স্বপ্ন দেখে
পাতি হাঁসেরা সাঁতার কাটে ভেসে ভেসে জলে
শানবাঁধানো পুকুরের গভীরে ছন্দ সুরে,
হলুদ পাখিরা পাখা ঝাপটায় এসে পুকুরের তীরে
ভ্রমরেরা গান গায় দলবেঁধে দূরে।
স্বপ্ন বাসাবাঁধে অন্তরে অন্তরে মনে মনে
আধো-আলো খেলা করে বেলা যায় বয়ে
পাখিরা ঘরে ফিরে শুধু চেয়ে চেয়ে,
মনে পড়ে তোমার কথা যেন ক্ষণেক্ষণে
মুখোমুখি বসতে তুমি গল্পের কাব্য নিয়ে।
কথা হতো চোখে চোখে কথা হতো নীরবে
যেন কোন এক পড়ন্ত বিকালে।
—————————————————————–
ছিঁড়া ডাইরীর পাতা
রঙিন পাতায় লিখিছি কত
ভালোবাসার চিঠি,
আবার মনের অজান্তে কখন যে
শীতে যেমন ঝরে পরে কত না
গাছের লতা-পাতা,
তেমনি কিছু ভালোবাসা কথা লেখা হয়
পথের ধারে কত নানা ফুল ফোটে
সবার কপালে কী আর ফুলদানী টা জোটে?
ভালোবাসা ঠিক পথের ধারে ফোটা ফুলের মতো
তবু সবাই ফুলদানীর আশায় ছোটে।
একদিন আমারও স্বপ্নিল আকাশে
ছিলো এক চাঁদনি ,
সে রোজ পাখি মতো ডাকতো
সে আর নেই আমার,হারিয়ে গেছে বহুদূরে
শুনেছি অন্য এক গ্রহে,
পৃথিবী যেমন করে ঘোরে নিজ অক্ষ পথে
ঠিক তেমনি করে
দুপচাঁচিয়া,বগুড়া,বাংলাদেশ।