আরএসএফের প্রতিবেদন
বিশ্বে এক বছরে অর্ধশত সাংবাদিককে হত্যা
কাঠামোগত অপরাধ, দুর্নীতি ও পরিবেশ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে খবর প্রকাশ করে ২০২০ সালে বিশ্বে অর্ধশত সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন। জেলখানায় ঢোকানো হয়েছে ৩৮৭ জন, যা ইতিহাসে বিরল। তাদের মধ্যে বেশিরভাগকে হত্যা করা হয়েছে এমন সব দেশে, যেখানে কোনো যুদ্ধ-সংঘাত নেই।
মঙ্গলবার রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানায়। খবর এএফপির।
সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, যাদের হত্যা করা হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই অনুসন্ধানী সাংবাদিক, যারা দুর্নীতি ও পরিবেশবিরোধী কাজের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রভাবশালীদের হত্যার টার্গেটে পরিণত হয়েছেন।
মধ্য ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫০ জন সাংবাদিক তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন, যা ২০১৯ সালের চেয়ে সামান্য কম। গত বছর নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা ৫৩ জন। অথচ ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে খুব বেশি সাংবাদিক মাঠে কাজ না করেও হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
আরএসএফ জানিয়েছে, নিহত সাংবাদিকদের মধ্যে ৬৮ ভাগ প্রাণ হারিয়েছেন, যেসব দেশে যুদ্ধ চলছে না সেসব দেশেই। ২০১৬ সাল থেকেই যুদ্ধ চলছে না এমন দেশে সাংবাদিক হত্যার হার বেড়েছে। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন সাংবাদিক হত্যার শিকার হচ্ছেন যুদ্ধবিহীন দেশগুলেতেও। ২০২০ সালে টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হয়েছেন ৮৪ শতাংশ সাংবাদিক। ২০১৯ সালে এর শতকরা হার ছিল ৬৩। চলতি বছর সবচেয়ে বেশি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে মেক্সিকোতে। দেশটিতে মারা গেছেন কম পক্ষে ৮ জন সাংবাদিক। ইরাকে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স জানিয়েছে, অনুসন্ধানী সাংবাদিকরাই বেশি হত্যাকাণ্ডের শিকার। চারজন মারা গেছেন সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে। ১০ জন দুর্নীতি ও জনগণের অর্থ আত্মসাৎকারীদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে তদন্ত করতে গিয়ে আর ভূমিদস্যুতা ও অবৈধ খনি নিয়ে কাজ করার সময় হত্যার শিকারে পরিণত হয়েছেন তিনজন।
গণ অসন্তোষ ও বিক্ষোভের খবর ও ছবি নিতে গিয়ে মারা গেছেন সাত জন সাংবাদিক। এদের মধ্যে চারজন ইরাকে, দু’জন নাইজেরিয়ায় ও কলম্বিয়ায় প্রাণ হারিয়েছেন একজন।
প্রতিবেদনে আফগানিস্তানে পাঁচজন সাংবাদিককে হত্যা করার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। ভারতে এক সাংবাদিক রাকেশ সিংকে পুড়িয়ে মারা হয়। টিভি সাংবাদিক ইসরাভেল মোজেসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তামিলনাড়ুতে।
ইরানের আমাদনিউজ ওয়েবসাইট ও টেলিগ্রাম নিউজ চ্যানেলের সম্পাদক সাংবাদিক রুহুল্লাহ জামের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনাও উল্লেখ করা হয়েছে আরএসএফের প্রতিবেদনে।