সুস্বাস্থ্যের জন্য ডিমের উপকারিতা অনেক। বিশেষজ্ঞরা ডিমকে প্রোটিনের পাওয়ার হাউস বলে থাকেন। ব্রেকফাস্টে কিংবা দিনের অন্যান্য সময়ে ডিম খাওয়া হয়। বাচ্চা থেকে বুড়ো সবারই পছন্দের খাবার ডিম।
প্রোটিনের একটি ভালো এবং সস্তা উৎস ডিম। দিনে মাত্র দুটি ডিম খেলে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। ডিম সাধারণত অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টিতে ভরপুর থাকে। তাই এগুলোকে খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
অনেকেই সকালের নাশতায়, দুপুরের খাবারে এবং ওয়ার্ক আউটের পর ডিম খেতে পছন্দ করেন।
তবে যে কারণেই হোক না কেন, ডিমের অনেক পুষ্টিগুণ থাকলেও এত বেশি ডিম খাওয়া মোটেও স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক নয়। চলুন, জেনে নেওয়া যাক, বেশি ডিম খেলে দেখা দিতে পারে যেসব স্বাস্থ্যঝুঁকি।
কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়তে পারে
ডিমে প্রচুর পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকে। একটি বড় ডিমে ১৮৬ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে পারে। ফলে হৃদরোগের মতো সমস্যা পর্যন্ত দেখা দিতে পারে। তাই যাদের এজাতীয় কোনো সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত ডিম না খাওয়াই ভালো। আর ডিম খেলেও এর কুসুম এড়িয়ে চলতে হবে।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়
ডিমে বায়োটিন থাকে। যা ইনসুলিন উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পরিমিত ডিম খাওয়া রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে সাতটি বা তার বেশি ডিম খান, এমন পুরুষদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৫৮ শতাংশ এবং নারীদের জন্য ৭৭ শতাংশ বেশি।
হজমে সমস্যা
ডিম প্রোটিনসমৃদ্ধ একটি খাবার হলেও এটি অতিরিক্ত খেলে অনেকের হজমের সমস্যা, যেমন পেট ব্যথা, গ্যাস ও বদহজম দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের ডিম সহ্য হয় না বা যাদের অ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এই সমস্যা বেশ গুরুতর হতে পারে। এ ছাড়া ডিমের সঙ্গে অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি থাকে। সুতরাং হজমের সমস্যা এড়াতে অতিরিক্ত ডিম না খাওয়াই ভালো।
অ্যালার্জির সমস্যা
ডিম খাওয়ার ফলে অনেকের মধ্যে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটি ছোট মনে হলেও অনেক সময় মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে, যেমন এনাফাইল্যাক্সিস। যার ফলে শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া ত্বকে ফুসকুড়ি, ফোলাভাব, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, র্যাশ, মাথা ঘোরাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিম খাওয়ার পর এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভালো। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত ডিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
সপ্তাহে কয়টি ডিম খাওয়া ভালো
হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের মতে, সুস্থ ব্যক্তিরা সপ্তাহে সাতটি পর্যন্ত ডিম খেলে সাধারণত কোনো সমস্যা হয় না। তবে স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ডিম খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে রাখা উচিত।
উচ্চ কোলেস্টেরল : সপ্তাহে ২-৩টি ডিম খাওয়া নিরাপদ।
হৃদরোগের ঝুঁকি : সপ্তাহে ৩-৪টি ডিম খেতে পারেন।
ডায়াবেটিস : সপ্তাহে ৫টির বেশি না খাওয়াই ভালো।
তবে প্রত্যেক মানুষের স্বাস্থ্যের অবস্থা ভিন্ন, তাই সপ্তাহে কয়টি ডিম খাবেন জানতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
সূত্র : কালের কন্ঠ