ভারতে ২১ দিনেই করোনায় আক্রান্ত ১২ লাখ মানুষ
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬৯ হাজার মানুষ। মৃত্যুও প্রায় হাজার ছুঁইছুঁই। আগস্ট মাসে ভারতেই সর্বাধিক মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। চলতি মাসেই দেশে প্রায় ১২ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন।
কলকাতাভিত্তিক বাংলা দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৬৮ হাজার ৮৯৮ জন। এদিন দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৯ লাখ ৫ হাজার ৮২৪ জন।
এর মধ্যে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন চলতি মাসেই। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ২১ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৭ জন। মোট সংক্রমিতের ভিত্তিতে বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। দৈনিক সংক্রমণের হারে বাকিদের ছাপিয়ে গিয়েছে দেশটি। তবে অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে করোনায় মৃত্যু হার অনেকটাই কম।
ভারত করোনায় মৃত্যুর হার ২ শতাংশেরও কম। তবে কয়েকটি রাজ্যে মৃত্যুর হার একটু বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৯৮৩ জনের। ফলে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৪ হাজার ৮৪৯ জন
‘দিন দশেকেই মোট রোগীর সংখ্যা লাখ ছাড়াবে’
ব্রুকিংস ইন্ডিয়ার গবেষণা প্রধান ড: শামিকা রাভি আবার মনে করছেন, এপ্রিল থেকে ভারতের করোনাভাইরাস ড্যাশবোর্ডে যে ইঙ্গিতগুলো দেখা যাচ্ছে তাতে এই আচমকা সার্জ বা বৃদ্ধি অস্বাভাবিক কিছু নয়।
বরং চলতি মে মাসের মাঝামাঝি – অর্থাৎ আর দিন দশেকের ভেতরেই ভারতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে তার বিশ্বাস।
ড: রাভির কথায়, “শুরুতে যেমন একটা পাল্টা যুক্তি দেওয়া হচ্ছিল যে সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকলে এতদিনে মোট রোগীর সংখ্যা ১৩ লাখ ছাড়িয়ে যেত। তবে সরকারও চুপচাপ বসে থাকেনি, মানুষও অনেক সাবধানতা দেখিয়েছে।”
“তবু তারপরও এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে যে ট্রেন্ড আমরা দেখছি তাতে মে-র মাঝামাঝি রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজারের কাছাকাছি হওয়ার কথা, কারণ এক্সপোনেনশিয়াল গ্রোথের প্রকৃতিটাই তাই।”
“এখন সেটা হবে কি না, তা অনেকটা নির্ভর করছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলো কতটা শক্ত হাতে কনটেইনমেন্ট বলবৎ করতে পারে – আর তাই সতর্ক নজর রাখতে হবে মুম্বাই, পুনে, সুরাট বা আহমেদাবাদের মতো হটস্পটগুলোর ওপর।”
তবু শিথিল লকডাউন, মদ কিনতে ভিড়
কিন্তু গতকাল থেকে শুরু হওয়া তৃতীয় পর্বের লকডাউনে উল্টে অনেক কিছুই শিথিল করা হয়েছে।
যেমন দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর বা কলকাতায় দেড়মাস বাদে খোলা মদের দোকানগুলোয় পছন্দের পানীয় কিনতে ভিড় করেছেন হাজার হাজার মানুষ।
ভারতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন সরাসরি বলছেন, “রেড জোনের ভেতরে আমরা যারা আছি তাদের এখনও স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেওয়ার সময় কিন্তু আসেনি।”
“আর মদের দোকানের সামনে যে দৃশ্য আমরা কাল দেখেছি, তাতে বলতেই হচ্ছে রাজ্য সরকারগুলোকে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন পরিষেবা আমরা খুলব, আর কোনটা খুলব না।”
মদ কিনতে মানুষকে নিরুৎসাহিত করতে দিল্লি সরকার আজ রাতারাতি অ্যালকোহলের ওপর ৭০% বাড়তি কর বসিয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্পেশাল করোনা ট্যাক্স’।
মদের দাম বাড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গ বা অন্ধ্রও – কিন্তু তারপরও দোকানের সামনে গাদাগাদি ভিড় এতটুকুও কমেনি।
যেন মনে হচ্ছে, করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফ নিয়ে সাধারণ ভারতীয়রা এতটুকুও বিচলিত নন!
বাঅ/এমএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com