বিশ্ব

মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব ! ইতালিতে আর‌ও ৩৪৫ জনের মৃত্যু

মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব
মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব ! ইতালিতে আর‌ও ৩৪৫ জনের মৃত্যু ।। করোনায় ইতালিতে আর‌ও ৩৪৫ জনের মৃত্যু ।। ইতালির পর করোনার ‘মৃত্যুপুরী’ হয়ে উঠছে স্পেন ।। তথ্য লুকাচ্ছে সরকারযুক্তরাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ হাজার, সম্ভাব্য মৃত্যু ২০ হাজার! ।। সৌদি আরবের সব মসজিদে নামাজ বন্ধ

মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব ! ইতালিতে আর‌ও ৩৪৫ জনের মৃত্যু । কভিড-১৯ করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ইতালিতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়লো। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৩৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে দেশটিতে প্রাণহানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে  ২ হাজার ৫০৩ জনে।

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) ইতালির সিভিল প্রোটেকশন অ্যাজেন্সি এ তথ্য নিশিত করেছে। এছাড়াও দেশটিতে নতুন করে আরও ৩ হাজার ৫২৬ জন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫০৬ জনে। খবর আল জাজিরা’র।

উল্লেখ্য, গত ৯ মার্চ থেকে পুরো ইতালিকে রেডজোনের আওতাভুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এরপর থেকেই গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে দেশটির প্রায় ৬ কোটি মানুষ। দেশটির ব্যস্ততম শহরগুলো পরিণত হয়েছে জনশূন্য ভুতুড়ে নগরীতে। সারাদেশে ফার্মেসি এবং এলিমেন্টারি শপ (খাবার ও জরুরি পণ্যের দোকান) ছাড়া সব কিছুই বন্ধ রয়েছে।

মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব

বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে মৃত্যুর মিছিল বাড়ছে। এ পর্যন্ত মারা গেছে ৭ হাজার ১২৫ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা কমপক্ষে ১ লাখ ৮২ হাজার ৪৭ জন।  করোনার মৃত্যুর মিছিল ঠেকাতে ইতিমধ্যে দেশে দেশে কারফিউ জারি ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি ও পুয়ের্তো রিকোতে এবং ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে। নতুন করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে কয়েকটি দেশে। বাতিল হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক বৈঠক। তবে ইতালির অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ। দেশটিতে কয়েক দিন ধরে মৃত্যুর সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। অবশ্য সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৭৮ হাজার ২০৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৫৮ জনে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৭ হাজার ৯৮০ জনে। ইতালিতে মৃত্যুর মিছিল বন্ধের চেষ্টায় রোমের পথে হাঁটলেন পোপ ফ্রান্সিস। চার্চে গিয়ে প্রার্থনাও করেছেন তিনি। ইতালির পরই স্পেনের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়। সেখানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪২ জনে। এ ছাড়া মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ৯৪২ জন। জরুরি অবস্থা জারির ফলে স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদের রাস্তায় আসা মানুষদের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করছে পুলিশ। মেট্রো ট্রেনগুলোও সব জনশূন্য।  অন্যদিকে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা ১৪৮ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৬৫৩ জন। গতকাল ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, আমরা এখন যুুদ্ধে আছি। তিনি জনগণের চলাফেরায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে তা অমান্য করলে কঠোর শাস্তির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে অচলাবস্থা বাস্তবায়নে রাজপথে দেড় লাখ সৈন্য নামানোর ঘোষণা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। ফলে চীনের জনশূন্য শহরের মতো রূপ পেয়েছে ফ্রান্সের প্যারিস। প্যারিসের যে সড়কে লাখো মানুষের চলাচল ছিল, জরুরি অবস্থা জারি করার পর সেগুলো এখন জনশূন্য। এ ছাড়া স্কুল-কলেজ সব বন্ধ। অফিস-আদালত, ক্যাফে কিছুই খোলা নেই। করোনাভাইরাস ঠেকাতে সোমবার থেকে ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড, অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক ও লুক্সেমবার্গ সীমান্তে কড়াকাড়ি আরোপ করে জার্মানি। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে সাত হাজার ২৭২ জনে দাঁড়িয়েছে। করোনাভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে ভিডিও কনফারেন্স করার কথা রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতাদের। যুক্তরাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্ত হয়েছেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য সরকার বয়স্কদের সেলফ আইসোলেশনে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব ! এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতিও খুব একটা ভালো নয়। সে দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৮১ জনের। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি। করোনা আতঙ্কে নিত্যপণ্যের দোকানে গিয়ে বেশি বেশি কেনাকাটা করে মজুদ করছেন মার্কিনিরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ১৫ দিন পর্যন্ত একসঙ্গে ১০ জনের বেশি এক স্থানে সমবেত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ট্রাম্প বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আমেরিকার ৫০ অঙ্গরাজ্যে যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে, তা আগামী গ্রীষ্মের শেষ নাগাদ বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে স্থায়ী হতে পারে। অন্যদিকে নিউজার্সির গভর্নর ফিল মাফি কারফিউ জারি করার ঘোষণা দিয়েছেন। সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় খুচরা বিক্রির দোকান, প্রমোদ ও বিনোদন ব্যবসা রাত ৮টার পর অবশ্যই বন্ধ ঘোষণা করতে হবে। এ ছাড়া রাত ৮টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত নিউজার্সিতে সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রবিবার পুয়ের্তো রিকোয় রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি ঝাং জুন জানিয়েছেন, পরিষদের একটি বৈঠক মঙ্গলবার হওয়ার কথা ছিল, এটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহেই দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ পর্যায়ে যাওয়ায় অন্য দেশগুলোও আতঙ্কিত। ইরানে এখন পর্যন্ত করোনায় ৮৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার। ইরানে মহামারী আকারে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ৮৫ হাজার বন্দীকে সাময়িকভাবে মুক্তি দিয়েছে ইরান। এর মধ্যে রাজনৈতিক বন্দীও রয়েছেন। করোনাভাইরাস আতঙ্কে জর্ডানের কারাগারে শুরু হয়েছে দাঙ্গা। এর ফলে মারাও গেছেন কয়েকজন। লেবাননের বৈরুতের সাগর সৈকতে থাকতে পারছেন না পর্যটকরা। সব ধরনের জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। দেশটিতে ১০৯ জন আক্রান্তের পাশাপাশি মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। রাশিয়ায় করোনা মোকাবিলায় নতুন টাস্কফোর্স গঠন করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। মস্কোর মেয়র সের্গেই সোবেয়ানিনের নেতৃত্বে রবিবার থেকে কাজ শুরু করেছে এই টাস্কফোর্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সেখানে এখনো কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।

মৃত্যুর মিছিলে বিশ্ব ! পশ্চিমবঙ্গে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত : পশ্চিমবঙ্গে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ মিলল কলকাতায়। লন্ডনফেরত এক তরুণের শরীরে মিলেছে করোনার সংক্রমণ। জানা যায়, লন্ডনে থাকাকালীন দক্ষিণ কলকাতার বাসিন্দা ওই যুবক একটি পার্টিতে যান। পার্টিতে উপস্থিত কয়েকজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। অতি সম্প্রতি লন্ডন থেকে ফিরে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। কলকাতায় ফেরার পর ওই যুবকের শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি। কিন্তু রাজ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সন্দেহ হওয়ায় দুই দিন আগেই তাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

করোনা আশঙ্কায় তার শরীরের নমুনা পাঠানো হয় পরীক্ষাগারে। তখনই নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে এ ভাইরাসের সংক্রমণ মেলে। তাকে আপাতত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের স্পেশাল কোয়ারেন্টাইন কেবিনে রাখা হয়েছে।

সৌদি আরবের সব মসজিদে নামাজ বন্ধ

মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববী ছাড়া করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সৌদি আরবের সব মসজিদে নামাজ আদায় স্থগিত করা হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে সংবাদ মাধ্যম খালিজ টাইম এসপিএ-এর বরাত দিয়ে প্রতিদেন প্রকাশ করে।

দেশটি সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতাদের সিদ্ধান্তে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস যাতে দ্রুত না ছড়ায় সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সৌদি আরবে ১৩৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন কেউ আক্রান্তের খবর পাওয়া যায়নি দেশটিতে। এখন পর্যন্ত কেউ মারাও যাননি। আক্রান্তদের মধ্যে ৬ জন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। অর্থাৎ, এই মুহূর্তে ১২৭ জন অসুস্থ আছেন।

ইতালির পর করোনার ‘মৃত্যুপুরী’ হয়ে উঠছে স্পেন  

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরো বিশ্বজুড়ে। এরই মধ্যে বিশ্বের ১৪১টি দেশে ছড়িয়েছে ভাইরাসটি। ইতালির পর করোনায় বিপর্যস্ত ইউরোপের দেশ স্পেন। দেশটি আজ মঙ্গবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১১ হাজার ১৭৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪৯১ জনের।

আক্রান্ত হয়েছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী বেগোয়া গোমেজ। মহামারি এ ভাইরাস ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিলেও স্পেনে থামছে না বিপর্যয়, প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা।

মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিত সরকারী তথ্য মতে গত ২৪ ঘণ্টায় স্পেনে নতুন করে ১ হাজার ৯৮৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এ সময়ে মৃত্যু হয়েছে ১৮২ জনের।

আক্রান্তদের মোটের মধ্যে ৫ হাজার ১৬৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, যার মধ্যে ৫৬৩ জনকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এ সময়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১ হাজার ৯৮ জন।

স্পেনের স্বায়ত্তশাসিত  অঞ্চলগুলোতে সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। যদিও রাজধানী মাদ্রিদও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সেখানে ৪ হাজার ৮৭১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মৃত্যুর হার ৭ শতাংশ।

ইউরোপে করোনাভাইরাসে দ্বিতীয় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ স্পেন।  করোনা প্রকোপ ঠেকাতে স্পেন জুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। এই জরুরি অবস্থা ১৫ দিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। খাবারের দোকান, ওষুধ, কর্মক্ষেত্র, হাসপাতাল বা জরুরি কাজ ছাড়া বাইরে বের না হতে এবং বাড়িতে অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তথ্য লুকাচ্ছে সরকার

যুক্তরাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৫ হাজার, সম্ভাব্য মৃত্যু ২০ হাজার!

করোনা আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব। প্রতিদিনই নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে করোনা রোগী। করোনার করাল গ্রাসে বিধ্বস্ত চীনের পরিস্থিতি এখন কিছুটা উন্নতির দিকে হলেও ভয়ংকর থেকে ভংয়করতম হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পরিস্থিতি। লন্ডনে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৫৪৩ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জনের।

তবে সরকারি এই হিসাবের সঙ্গে একমত নয় দেশটির প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডেইলি মিরর। সরকারের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে গণমাধ্যমটি বলছে ব্রিটেনে এরই মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৫৫ হাজার মানুষ। এদের মধ্যে সম্ভাব্য ২০ হাজার মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে।

সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক আজ মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) ঘোষণা করেছেন, ‘যুক্তরাজ্যে এরই মধ্যে ৫৫ হাজার করোনভাইরাস আক্রান্ত রোগী থাকতে পারে। আশা করি আমরা সেলফ কোয়ারেন্টাইনের মাধ্যমে এই বিপুল মৃত্যু রুখে দিতে পারবো। পূর্ববর্তী ভবিষ্যদ্বাণী ২ লাখ মৃত্যু থেকে আমরা এই সংখ্যা ২০ হাজারের মধ্যে নামিয়ে আনতে পারি।’

স্যার প্যাট্রিক বলেছিলেন, যুক্তরাজ্যে মৌসুমী ফ্লুতে বাৎসরিক অতিরিক্ত মৃত্যুর সংখ্যা ছিল প্রায় ৮ হাজার। আমরা যদি করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২০ হাজারের চেয়ে কমে আনতে পারি সেটা হবে এই মহামারি মোকাবেলায় বড় সফলতা।

তবে এটি এখনও যুক্তরাজ্যে ভয়াবহ অবস্থায় আছে। এখনও আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক বেশি। এটি স্বাস্থ্যসেবার উপর একটি বিরাট চাপ ফেলেছে।।

ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে (এনএইচএস) পরামর্শদাতা এবং একাডেমিক ক্যারিয়ারে ২০ বছর অতিবাহিত করার পরে আমি ঠিক জানি যে এই বিপুল মৃত্যু দেখতে কেমন লাগে।

তিনি আরও বলেছিলেন যে, প্রতিটি রোগী বর্তমানে দুই থেকে তিনজনকে সংক্রামিত করছে, তাই সংক্রমণের হার কমা শুরু হতে এখনও অনেক সময় লাগবে। কয়েক সপ্তাহ আগে পদক্ষেপ নেওয়া হলে এটা সহজ ছিল, তখন হাতে অনেক সময় ছিল।

স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ারম্যান জেরেমি হান্ট জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, প্রতি এক হাজার রোগীর ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত মৃত্যুর হার একটাই কি-না, যার অর্থ হবে,সম্ভাব্য ৫৫ হাজার করোনা রোগী আছে।

এটি সঠিক মনে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্যার প্যাট্রিক বলেছিলেন, “আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি (জরুরী পরিস্থিতিতে বৈজ্ঞানিক পরামর্শদাতা)। তবে আপনি যদি সমস্ত তথ্য একসাথে রাখেন তবে এটি গবেষণার জন্য যুক্তিযুক্ত হবে না। এরচেয়ে বেশি বলাটা ঠিক হবে না।

করোনা সিনট্রোমে ভোগা সবাইকে পরীক্ষা না করায় সরকারের নিন্দা জানিয়ে স্যার প্যাট্রিক বলছিলেন যে, আমাদের বিপুল সংখ্যক জনগণের পরীক্ষা করার মতো সামর্থ হয়তো এখন নেই। এটা বড় ধরণের বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। তবে যতটুকু সম্ভব দ্রুত পরীক্ষার সহজলভ্যতা ও যতটা বেশি মানুষকে পরীক্ষার আওতায় আনা যায় সেই প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

তবে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, সবাইকে পরীক্ষার আওতায় আনা সম্ভব নয়। কেবল মাত্র যাদের মধ্যে করোনার লক্ষণগুলো প্রকাশ পাবে তাদেরই পরীক্ষা করা হবে। জনগণকে এই বিপর্যয় মোকাবেলায় সরকারের পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। গণ জমায়েত এড়িয়ে চলতে হবে।

ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার জোনাথন ভ্যান-ট্যাম বলেছেন, করোনায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠীগুলির থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শটি বেশ কার্যকরি। করোনার সংক্রমণ রুখতে এটা বেশ শক্তিশালী একটা পদক্ষেপ।

যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন কিংবা আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছেন তারা সরকারের পরামর্শ অনুসরণ অন্যদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলবেন। এটা যাতে সবাই পালন করে সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

 



 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − seven =