কী এমন হতো !
আর লিখে কী-ই বা হয়েছে !
আজ সেসব কথা তোমাদের বলছি ।
কেউ আমায় কবিতা লিখতে বলেনি
তখন আমার দশ হবে
সেই থেকে আজ বেলাশেষে
লিখেই চলেছি ।
লিখে আমার বাড়ি,গাড়ি কিছু হয়নি
একটি টেবিলও জোটেনি
সেসব ভেবে কেউ আসে না
না লিখে পারে না তাই লেখে
বাঁচার কৌশল।
আমার তিনজন অকালে চলে গেছে
প্রথম যখন ফুলের মালায় সেজে
সল্টলেক,বিডন স্ট্রিট হয়ে নিমতলায় গেল
সেইথেকে মনে হলো পৃথিবীর রাজা
ঘরে সন্তানের কাছে আসতে সেই গভীর রাত
শহরের যত স্থান-অস্থান ঘুরে মাতাল হয়ে
সকলেই খাতা কলম খুঁজে বসেছি
ওরা নিজের মতো করে গুছিয়ে স্কুলে ।
আমার জন্মদিনে কারু সাথে হোটেলে
ফিরে এসে দেখি জেগে আছে দোর খুলে
কেক নিয়ে মোমবাতি জ্বেলে হ্যাপি বার্থডে বা- বাবা ..
তোমাদের বলি সেই কথা শোনো যদি
পরের দিনও কবিতাই লিখেছি অশ্রু সাজিয়ে
তারপর ছেলে উনিশে ডুবল সমুদ্র তীরে
পরের দিন সন্তানহারা পিতা কবিতা লিখেছে
এসব কি কেউ লেখে ! ঈশ্বর (আঘাত) লেখায়
যত যন্ত্রণা পেয়েছি আরো …
ছেলের নাম দিয়েই শিশু স্কুল গড়ি
ভুলে থাকি ভুলে ছলে বলে
আরো আছে তোমাদের বলি শোনো যদি
বিরল রোগে উনত্রিশে মেয়েও গেল
নয় বছর ধরে দেখে গেছি কী-ভাবে
মৃত্যু এসে শকুনের মতন সন্তান খেয়ে নেয়
তখনও দিন রাত এক হয়ে লিখি
এবার বলি তোমাদের শুনবে যদি
আমি কোনোদিনই কবিতা নাই লিখতাম
টাকা,নারী,মাতাল বন্ধু ছিলো অনেক
ছোটবেলার প্রেমিকা-বউ যেই গেল হাত ছেড়ে
তারপরে রেড লাইট পাড়া থেকে দূরের হোটেলে
নারী নিয়ে কত কত রাত আঘাত ভুলে উল্লাসে
শূন্য হয়ে ঘরে ফিরে লিখি ।
আমি যদি কবিতাই নাই লিখতাম
তবে কোনকালে ভাগাড়ে মরে থাকত এই দেহ
আজ এখনও তোমাদের কাছে বসি
শিশুদের কূজনে দুদণ্ড ব্যথা ভুলি।
এতখানি জীবন তবু যে হলো,বলি
মনে হয় শুধু কবিতার জন্য এই বেঁচে থাকা ।