মেয়র মুরিয়েল বাউসার
যুক্তরাষ্ট্রে লাগাতার বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের কোন নেতা না থাকলেও এই দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অঘোষিত ‘নেতা’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র মুরিয়েল বাউসার। গত সোমবার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রীসহ নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বর্বর আচরণ করেন। হোয়াইট হাউজের সামনের সড়ক থেকে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দলবলসহ পায়ে হেঁটে ট্রাম্প বিক্ষোভে ক্ষতিগ্রস্ত চার্চের সামনে গিয়ে ছবিতে পোজ দেন। এ ঘটনায় বিবেকসম্পন্ন মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
এসব বিতর্ককে এক পাশে রেখে বিক্ষোভের চেতনাকে সমুজ্জ্বল রাখতে হোয়াইট হাউজে যাতায়াতের লাফায়েত স্কোয়ারের পার্শ্ববর্তী ১৬ স্ট্রিটের কয়েক ব্লক জুড়ে হলুদ অক্ষরে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ লেখা হয়েছে। ওই স্কোয়ারের নামকরণ করা হয় ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার প্লাজা’ হিসেবে। ট্রাম্পের স্বৈরাচারি মনোভাবের নিন্দা এবং প্রতিবাদে এ দুটি কাজ করেন মেয়র মুরিয়েল বাউসার।
এর ফলে গত শনিবার সেখানে ৫ লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটেছিল ফ্লয়েড হত্যার বিচার ও বর্ণবাদ নির্মূলের স্লোগানে। গতকাল রবিবারও লাখো জনতার সমাগম ঘটে সেখানে। এমন ঘটনার মধ্য দিয়ে সারা আমেরিকায় চলমান আন্দোলনের অঘোষিত নেতায় পরিণত হয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান মেয়র মুরিয়েল বাউসার। ডেমক্র্যাট মেয়র মুরিয়েলকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে অনন্য এক সাহসী ব্যক্তিত্ব হিসেবে অভিহিত করা হয় সমাবেশ থেকে।
কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে এবার কমছে পুলিশে অর্থ বরাদ্দ
কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার জেরে এবার কমছে পুলিশের অর্থ বরাদ্দ। ছবি: সংগৃহীত
বর্ণবিদ্বেষের শিকার হয়ে পুলিশের হাতে এক কৃষ্ণাঙ্গ মারা যাওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিভাগ। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে দেশটির বিভিন্ন রাজ্য।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল দে ব্লাসিও বলেছেন, নগরীর পুলিশ বিভাগের জন্য বরাদ্দ করা অর্থ ফিরিয়ে নেবেন। সেই অর্থ সামাজিক খাতে ব্যয় করবেন।
মিনিয়াপোলিস শহরের কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট লিসা বেনডের বলেন, মিনিয়াপোলিসসহ পুরো যুক্তরাষ্ট্রেই বর্তমান ধারার পুলিশি ব্যবস্থা আর নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এতদিন শহর কর্তৃপক্ষ পুলিশ বিভাগে যে অর্থ বরাদ্দ দিত তার পুরোটাই সামাজিক খাতে ব্যয় করা হবে।
শহরটির কাউন্সিলর অ্যালোন্দ্রা কানো বলেন, বর্তমান পুলিশি ব্যবস্থা আর সংস্কারের যোগ্য নয়। সুতরাং এ ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হচ্ছে।
তাদের যুক্তি, পুলিশের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও জাতিগত বিভেদ দূর করতে পুলিশ বিভাগের বাজেট কমানো উচিৎ। সেই অর্থ সামাজিক কর্মসূচিতে ব্যয় করা দরকার।
পুলিশ বিভাগ ভেঙ্গে দেওয়ার ইস্যুটি এখন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে আলোচনার অন্যতম বিষয়। তবে চলমান ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিয়ে নতুন জননিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে কয়েকমাস লেগে যেতে পারে।
উল্লেখ্য, ২৫ মে মিনেয়াপোলিসে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের ঘারে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করেন পুলিশ অফিসার শাওভিন। সঙ্গে তার আরো তিন সহকর্মীও ছিলেন।
এরপরই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। সেই বিক্ষোভের আগুন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
সি/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন