ফিচার্ড ভ্রমণ

রকি পর্বতমালা আর ডাইনোসরের রাজ্যে |||  ড. শোয়েব সাঈদ

রকি পর্বতমালা আর ডাইনোসরের রাজ্যে |||  ড. শোয়েব সাঈদ

“ভূস্বর্গ” শব্দটি প্রকৃতির অপরূপ নান্দনিকতার বাচনিক অভিব্যক্তি। পাক-ভারত উপমহাদেশের কাশ্মীর আর ইউরোপের সুইজারল্যান্ডকে ছোটবেলায় থেকেই জেনে আসছি ভূস্বর্গ, পৃথিবীতে  স্বর্গের এক একটি রেপ্লিকা। যুদ্ধ বিধ্বস্ত কাশ্মীর দেখা হয়নি, কিন্তু সুইজারল্যান্ডকে ব্যাপকভাবে মন্থন করার সুযোগে একথা বহুবার ভাবনায় এসেছে যে সৃষ্টিকর্তা খুব মনোযোগের সাথে সুইজারল্যান্ডকে বানিয়েছে। কাশ্মীর আর সুইজারল্যান্ডের পাশাপাশি “ভূস্বর্গ” অভিধায় খুব সহজেই অভিষিক্ত করা যায় রকি পর্বতমালার কানাডা অংশকে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় কানাডার অর্থাৎ পশ্চিম কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া আর আলবার্টার রকি পর্বতমালার অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য “ভূস্বর্গ” এই বাচনিক অভিব্যক্তিকে ছাড়িয়ে অনেক বেশী বাস্তব আর প্রাণবন্ত, যেন নন্দনকাননের সৌর জাগতিক সংস্করণ।

বিশাল ভূখণ্ডের এই কানাডাকে প্রকৃতি ভালবেসেছে উজার করে। মিঠা পানির গ্রেট লেকস, ফলস, গ্লেসিয়ার, অরোরার মত প্রকৃতির রকমারি বিস্ময়। ক্যালগেরীর নিকটবর্তী রকি পর্বতমালার পাদদেশের ছোট্ট শহর BANFF বিশ্বখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। “ভূস্বর্গ” শব্দটিকে চাক্ষুষ অভিজ্ঞতার আঁচলে বাঁধতে হলে BANFF দর্শন যে করতেই হয়।

মন্ট্রিয়ল থেকে আলবার্টার প্রধান নগরী ক্যালগেরীর দূরত্ব ৩ হাজার ৬ শত কিলোমিটার আর ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার প্রধান নগরী ভ্যাঙ্কুবারে যেতে বিমানেই লাগে প্রায় সাড়ে ৫ ঘণ্টা। বিমানে উড়ে এক শহর থেকে আরেক শহরে ভ্রমণ নয়, রকির নান্দনিকতাকে উপভোগ করতে হলে পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে বিখ্যাত ট্রেন জার্নি  নতুবা গাড়ী দিয়ে মন্থন করা ছাড়া বিকল্প নেই। কিন্তু  তার জন্যে ভ্যাকেশন প্ল্যান কিংবা কোন এক উছিলার প্রয়োজন।

এরকম একটি উছিলা জুটেছিল ভাগ্যে আর সেটির সদ্ব্যবহারে ছিলনা কোন প্রকার দ্বিধা। এক ভাগ্নের বিয়ে উপলক্ষ্যে সপরিবারে ক্যালগেরীতে যাওয়া, বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে রকি মন্থনের ইচ্ছেটুকুর যথাসাধ্য বাস্তবায়ন।

ক্যালগেরীতে ভ্যাকেশনে যাবার আগে আগে ২০১৭ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে  কনফারেন্সে অংশ নিতে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের কলারাডোর ডেনভারে। মজার বিষয় হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এই অংশটি আবার রকি পর্বতমালা বেষ্টিত। রকি পর্বতমালা ৩ হাজার মাইল দীর্ঘ। কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, আলবার্টা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইদাহো থেকে কলারাডো হয়ে দক্ষিণে নিউ মেক্সিকো পর্যন্ত বিস্তৃত।

মন্ট্রিয়ল থেকে চার ঘণ্টার ফ্লাইটে বিশাল বিরানভুমির মাঝে কিছুটা মরু আবহাওয়ায় আকারের দিক থেকে উত্তর আমেরিকার বৃহত্তম বিমানবন্দর হচ্ছে ডেনভার; বিশ্বে দ্বিতীয়, সৌদির কিং ফাহাদ বিমানবন্দরের পরে। মরুভূমির তাবু সংস্কৃতির ধাঁচের এই বিমানবন্দরের ৫টি  রানওয়ে, যার মধ্যে একটি ৪.৮ কিমি, যা যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘতম। রকি পর্বতমালা বেষ্টিত আর কলারাডো নদী বিধৌত কলারাডো অঙ্গরাজের রাজধানী ডেনভার বিমানবন্দর থেকে বেশ দূরে।

সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১ মাইল উচ্চতায় অবস্থান বলে ডেনভারকে মাইল সিটি বা এক মাইল উচ্চতার শহর বলে। ওয়াইল্ড ওয়াইল্ড ওয়েস্ট মুভিতে যুক্তরাষ্ট্রের যে ইমেজ, কলারাডো অঙ্গরাজ্য আর ডেনভার শহর সেই ইতিহাসের অংশ। ইন্ডাস্ট্রিয়াল মাইক্রোবায়োলজি কনফারেন্সের অবসরে ডেনভারের ঐতিহ্য আর আধুনিক ডেনভার উভয় আঙ্গিকে একটু পরখ করে দেখার সুযোগ হয়েছে।

থাকতে হয়েছে কনফারেন্সের ভেন্যু ডাউনটাউন শেরাটন হোটেলে। বেশ কয়েক ঘণ্টার হাঁটা আর গণপরিবহণ ব্যবহারে কলারাডো বিশ্ববিদ্যালয় সহ শহরটির কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক স্পট  দেখতে গিয়ে ব্যতিক্রমধর্মী অভিজ্ঞতাটি ছিল টাইটানিক জাহাজডুবি থেকে বেঁচে যাওয়া তৎকালীন মেডাম ধনকুবের মলি ব্রাউনের বাড়িটি দেখা। ১৯১২ সালের ১৫ই এপ্রিল আরএমএস টাইটানিক জাহাজ ডুবিতে প্রথম শ্রেণীর যাত্রী মলি ব্রাউন ৬ নম্বর লাইফবোটে নিজেকে রক্ষার পাশাপাশি অন্যদের উদ্ধারেও সাহসী ভূমিকা রাখেন।

কনফারেন্স শেষে ভ্যাকেশন শুরু করতে আমি ডেনভার থেকে ফ্লাই করি ক্যালগেরীতে। আমার পরিবারের সদস্যরা আমার ল্যান্ড করার কাছাকাছি সময়ে মন্ট্রিয়ল থেকে ফ্লাই করে এসে পৌছায় ক্যালগেরী বিমানবন্দরে। আমাদের ভ্যাকেশন পরিকল্পনার ছিল ক্যালগেরী এয়ারপোর্ট থেকে রেন্টাল কার নিয়ে হাজার হাজার কিলোমিটার ড্রাইভ করে ভ্যাঙ্কুবার বিমানবন্দরে গাড়ী জমা দিয়ে মন্ট্রিয়লে উড়ে ফেরত আসা। একটি বিমানবন্দর থেকে গাড়ী ভাড়া নিয়ে ঐ বিমানবন্দরে  ফেরত না দিয়ে হাজার কিলোমিটার দূরের অন্য বিমানবন্দরে ফেরত দেওয়া অনেক বেশী ব্যয়বহুল, ভ্রমণের কৌশলগত কারণে অনেক সময় এই ব্যবস্থা ছাড়া উপায় থাকে না।

ক্যালগেরী বিমানবন্দরের রেন্টাল গাড়ী বুথে অনলাইন রিকিউজেশন দেওয়া ছিল গ্র্যান্ড চেরুকী। মাঝারি আকারের উচ্চ হর্স পাওয়ারের এই এসইউভি গাড়ীটি যুক্তরাষ্ট্রের জীপ কোম্পানির এবং পাহাড় পর্বত পেরিয়ে হাজার কিলোমিটার ড্রাইভে শক্তিমত্তার পাশাপাশি আরামাদায়কও বটে। কিন্তু রেন্টালকার বুথে প্রতারিত হলাম। চেরুকীর বদলে গছিয়ে দিল রেংগ্লার জীপ, শক্তিশালী গাড়ী কিন্তু এসইউভির মত আরামদায়ক ছিলনা। উপায় না থাকায় এই জীপটি সাথী হল আমাদের। আমার ছেলে আসাহী ড্রাইভটা শুরু করে এবং মাত্র ৩০ মিনিটে পৌঁছে গেলাম  ক্যালগেরী শহরের ক্ল্যারিওন হোটেলে।

বাংলাদেশের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু পরিচিত মুখ থাকে ক্যালগেরীরতে। ছাত্রজীবন থেকেই পরিচিত সংঘটক জাহিদ সবুজ আর মেজবাহ-অপু দম্পতি দেখা করতে  এলো হোটেলে। বেশ কয়েকটি কৃষিবিদ পরিবারের (নাহিদ, শম্পা, আরিফ, মাসুক, শাহিদ, লিটন, ফায়জুল-কনক, আলম) সাথে পিকনিক করতে গিয়ে ঘুরে দেখা হল BANFF এর সৌন্দর্য।  ক্যালগেরীর কৃষিবিদ পরিবারগুলোর আন্তরিকতা  ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ দিনগুলোতে।

বেমফ ন্যাশনাল পার্কে ড্রাইভ করতে গিয়ে পাহাড়ের সাথে আকাশের আর সমতলের মিতালীর  নৈসর্গিকতা দৃষ্টিতে নয়, গেঁথে যায় হৃদয়ে। আপনার সম্মুখ দৃষ্টিতে ঐ দূরে আকাশ ছোঁয়া সারিসারি পাহাড়ের কাছে যাবার আকুতি আবার একই সময় গাড়ীর রিয়ার আর সাইড গ্লাসের দিকে তাকান দেখবেন পেছনও নীলিমায় মিশে যাওয়া পাহাড়ের সারি ক্রমশ আপনাকে বাহারি রূপে বিদায় জানিয়ে ধীরলয়ে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ। কানাডার রকি পর্বতমালার বেমফ বিশ্বখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। কানাডার রকি ট্রেন ভ্রমণে বিশ্বখ্যাত স্পটও বটে আর তাই রকি ড্রাইভে পাহাড়ের খাঁদে ট্রেন লাইন কিংবা রেল টানেলে হারিয়ে যাওয়া  বা বেরিয়ে আসা ট্রেনের মুগ্ধতায় আবেশিত হতেই পারেন।

রকি পর্বতের ভাঁজে ভাঁজে ছোট বড় নানা আকারের জলাধারের সমাহার। পরিস্কার আকাশে কোন কোন জলাধার হঠাৎ আপনাকে চমকে দেবে সুউচ্চ কোন এক পর্বতশৃঙ্গের প্রতিবম্ব তার টলটলে পানিতে এঁকে দিয়ে। আলবার্টায়  ব্রিটিশ কলাম্বিয়া সীমান্তের কাছে বেমফ ন্যাশনাল পার্কের কানেডিয়ান রকির চমৎকার প্রতিবিম্বের জন্যে বিখ্যাত। হিমবাহের পানিতে সৃষ্ট লেক লুইস যেন ভূস্বর্গের প্রাণকেন্দ্র। এর চারপাশের জনবসতিকে বলা হয় লেক লুইস হেমলেট  আর এই হেমলেট একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। ব্রিটিশ কলাম্বিয়া সীমান্ত পেরিয়ে গেলে দেখা মিলবে ইয়োহো ন্যাশনাল পার্কের ডেলি গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ থেকে সৃষ্ট তাকাকাউ ঝর্না।

বিয়ের নানান আনুষ্ঠানিকতার ফাঁকে ফাঁকে সময়ের সদ্ব্যবহারে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে ক্যালগেরীর আশেপাশ পর্যটনে।ঘোড়া আর অন্যান্য পশুর দৌড় প্রতিযোগিতার জন্যে ক্যালগেরীর বিশ্বখ্যাতি স্টেমপেড সিটি হিসেবে। এসব ঐতিহাসিক স্থাপনা দর্শন ব্যতিত ভ্রমণটা অসম্পূর্ণ থেকে যায়।

আলবার্টা প্রদেশের সাথে ডাইনোসরের প্রেম প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে। জুরাসিক পার্ক মুভির ডাইনোসরের বিচরণভূমি ছিল একদা এই আলবার্টা। ডাইনোসর এবং আলবার্টার এই উপাখ্যান  পরম মমতায় সংরক্ষিত আছে এখানে। ক্যালগেরী গিয়ে ডাইনোসরের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো দেখবেন না, কিংবা কিছুক্ষণের জন্যে ডাইনোসরের প্রেমে মগ্ন হবেন না, এতোটা বেরসিক হওয়া উচিত নয়।

২২৮ -৬৫ মিলিয়ন বছর আগ পর্যন্ত পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরণের ডাইনোসরের বিচরণ সময় অর্থাৎ বিলুপ্ত হয়েছে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে। ১৫০ মিলিয়ন বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে এদের বসবাস থাকলেও মিলিয়ন’স বছরের ব্যবধানে এদের দেহাবশেষ বা প্রামাণিক নিদর্শনগুলো খুঁজে পাওয়া সহজসাধ্য নয়। কানাডার আলবার্টা অঞ্চলের ভূতাত্ত্বিক আর আবহাওয়াগত অবস্থান নিদর্শনগুলো সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আরমার্ড ডাইনোসরের (নডোসর) যে ফসিলটি ২০১১ সালে আলবার্টায় তৈলকূপ খননের সময় আবিষ্কার করা হয় সেটিকে বলা হয় “Best preserved ever”। ক্যালগেরীর থেকে ঘণ্টা দেড়েকের ড্রাইভে ছোট্ট শহর Drumheller এর The Royal Tyrrell Museum টি ডাইনোসর সম্পর্কে জানবার যোগ্য জায়গা বটে। মিউজিয়াম দেখা শেষ হলে আরও ঘণ্টা দেড়েকের ড্রাইভে চলে গেলাম ডাইনোসর প্রাদেশিক পার্ক দেখতে। আলবার্টায় ড্রাইভ করার বিশেষত্ব হচ্ছে হলুদ বর্ণের বিস্তীর্ণ ক্যানোলা ক্ষেতের মাঝখান দিয়ে শতশত মাইল ড্রাইভ করা। ক্যানোলা  তেল   আলবার্টা তথা কানাডার অন্যতম অর্থকরী ফসল। ক্যানোলার আবিস্কারক কানাডা সঙ্গত কারণেই বিশ্বের এক নম্বর ক্যানোলা উৎপাদক আর রপ্তানীকারক দেশ।

অদ্ভুত সুন্দর ল্যান্ড স্কেপ ডাইনোসরের প্রাদেশিক পার্ক এলাকাটির। খনন কাজ অব্যাহত আছে। শতবর্ষের খনন কাজে  ১৫০ টি পূর্ণাঙ্গ ডাইনোসরের কংকাল আবিষ্কার হয়েছে এই এলাকায়। প্রায় ৫০ ধরণের  ডাইনোসর প্রজাতি পাওয়া গেছে এখানে। ৭৫ মিলিয়ন বছর আগে বড় বড় নদীর বালু আর কাদা জমে এই উপত্যকার  মাটির স্তরগুলো তৈরি হয়েছে।

সর্বশেষ ররফ যুগের  বরফগলা পানির প্রভাবে নানা আকারের নানা বর্ণের মাটির স্তরের অতুলনীয় ল্যান্ডস্কেপটির উৎপত্তি। বিশেষ এই ল্যান্ডস্কেপের জীববৈচিত্র্যও ইউনিক। প্রাদেশিক পার্কে কয়েক ঘণ্টার হাইকিং শুধু  ডাইনোসর নয়, ভূতত্ত্বের এক নান্দনিক উৎস সম্পর্কেও অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতায় সিক্ত হবেন।

ভাগ্নের বিয়ে উপলক্ষ্যে ক্যালগেরী মন্থনের সুযোগ। বর স্বপ্নিল ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল গ্রাজুয়েট হয়ে ম্যাকমাস্টারে ইন্টারনাল মেডিসিনে রেসিডেন্সি করছিল। কনে প্রিমা ক্যালগেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিক্যাল গ্রাজুয়েট হয়ে ম্যাকমাস্টারে অফথালমোলজিতে রেসিডেন্সি করছিল। বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ারদের হাব হিসেবে পরিচিত ক্যালগেরী। গাঁয়ে হলুদ আর বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো ছিল মূলত ক্যালগেরীর শতশত বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়ারদের সমাবেশ কনের বাবার ইঞ্জিনিয়ার পরিচয়ের সুবাদে।

বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে আবারো রকি মন্থনে। ড্রাইভ করতে হবে আলবার্টা থেকে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় কেলোনায়। ক্যালগেরী থেকে বেনফ ন্যাশনাল পার্ক হয়ে  স্বল্প দূরত্বের রাস্তায় না গিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম উত্তরে আলবার্টার রাজধানী এডমন্টন হয়ে বেশ লম্বা পথে পশ্চিমে জেস্পার ন্যাশনাল পার্ক হয়ে দক্ষিণে নেমে কেলোনা যাবার। রকি মন্থনে এই সিদ্ধান্তের কারণ এডমন্টনে ফার্মাসিস্ট দম্পতি রবিন-মৌসুমির আমন্ত্রণে একদিনের জন্যে বেড়িয়ে যাওয়া। সেখানে দেখা হল কৃতি কৃষিবিদ হাবিব ভাইয়ের সাথে।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোডাক্ট ডঃ হাবিব এখন আলবার্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সেলিব্রেটি/গুনী অধ্যাপক। কানাডার অর্থনীতিতে ২৬ বিলিয়ন ডলার অবদানের ফসল ক্যানোলা নিয়ে আগেই বলেছি। ক্লাবরুট রোগ ক্যানোলা উৎপাদনে প্রবল হুমকী হয়ে দাড়িয়েছিল। ডঃ হাবিব রোগ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন করে কানাডার ক্যানোলা চাষিদের মুখে শুধু হাসিই ফুটাননি, কানাডার কৃষি অর্থনীতিতে রেখেছেন বিশাল অবদান। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার পথে এডমন্টনে কিছুটা সময় কাটিয়ে গেলাম হাবিব ভাই-ভাবীর আতিথিয়তায়, রবিন-মৌসুমির যত্ন-আত্তিতে আর কৃষিবিদ বাবুর সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে। ক্যালগেরী থেকে এডমন্টন পর্যন্ত ড্রাইভটি আমার কাছে অনেকটাই সাদামাটা মনে হয়েছে, অন্যান্য ইন্টারসিটি যোগাযোগের মত। তবে সামনে হয়তো অপেক্ষা করছিল প্রকৃতির উজার করা  সৌন্দর্যের অবগাহনে একটি ড্রাইভিং।

রকি পর্বতমালা মন্থনের এই পর্যায়ে আলবার্টার এডমন্টন থেকে প্রায় হাজার কিমি ড্রাইভ করে বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্য জেস্পার ন্যাশনাল পার্কের পাথুরে পাহাড়, পাহাড়ের খাঁদে হিমবাহের বরফ গলা নদী, মিঠা পানির লেক, মুক্ত মনে ঘুরে বেড়ানো প্রাণীকুলকে আরও কাছে থেকে দেখতে গাড়ী থামিয়ে চুপচাপ অবস্থান, এরকম নানা রকমারি বিনোদনে ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার বিশ্বখ্যাত টুরিস্ট শহর কেলোনার দিকে  ড্রাইভ করতে থাকা।

জেস্পার ন্যাশনাল পার্কে  রয়েছে বেশ কয়েকটি লেক। মাঝখানে একটি লেকে নেমে কিছুক্ষন কায়াকিং করে আবারো  বাপ-ছেলের পালাবদল করে ড্রাইভিং। বেমফ ন্যাশনাল পার্কের  সাথে জেস্পার ন্যাশনাল পার্কের পার্থক্য হচ্ছে প্রথমটি আপনাকে উপহার দেবে প্রকৃতির প্যানোরমিক ভিউ আর দ্বিতীয়টি আপনাকে নিয়ে যাবে প্রকৃতির আঁচলে, জীববৈচিত্র্যের পরশে।  কানাডার রকি ভ্রমণে গ্লেসিয়ার বা হিমবাহ দর্শন অন্যরকম এক অভিজ্ঞতা। ইউরোপের সুইজারল্যান্ড আর কানাডা রকি পর্বত  প্রযুক্তির স্পর্শে পর্যটকদের হিমবাহ উপভোগ করার জনপ্রিয় ভ্যেনু বটে।

জেস্পার পার্ক থেকে দক্ষিণে ড্রাইভ করে বেম্ফের কাছাকাছি এসে আমরা মিলিত হই ট্রান্স কেনেডিয়ান হাইওয়ে ওয়ানে। ট্রান্স কেনেডিয়ান হাইওয়ে এক পশ্চিম কানাডায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় প্রান্তের মূল যোগাযোগ সূত্র। ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ক্যাম্পলুপ্স সংলগ্ন দাবালন উপদ্রুত এলাকার পাহাড়ি এলাকার দৃষ্টিনন্দ এক্সপ্রেসওয়ের ধরে যাবার সময় কিছুটা দূরের পাহাড়ে দাবানলটি দেখা যাচ্ছিল।  উদ্ভূত ধুয়া আর পোড়া গন্ধে পাহাড় ডিঙ্গিয়ে বহে যাওয়া ১২০ কিমি গতির বিশ্বের অন্যতম সেরা সিনিক বিউটির হাইওয়েতে ড্রাইভিংটা বেশ কম্প্রোমাইজ হচ্ছিল। দাবানলকে দূর থেকে চাক্ষুস দেখার আগ্রহের কারণে  ক্যাম্পলুপ্স শহরে কাছ দিয়ে কিছুটা  ঘুরে কেলোনাতে আসাতে সময় বেশী লেগেছিল।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার ১ লক্ষ ৩০ হাজার জনসংখ্যার মাঝারী আকারের শহর কেলোনা। ইতিহাস ঐতিহ্যে আর পর্যটনে বেশ নামডাক।  রকি মন্থনে কেলোনায় রাত্রি যাপনের সিদ্ধান্তে শহরের কেন্দ্রে হোটেল বেছে নেই। হাইওয়ে  ৯৭ দিয়ে শহরে প্রবেশের মুখে  ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ওকানাগান লেকের উপরে উইলিয়াম বেনেট ভাসমান সেতুটি দৃষ্টি কাড়ে। চমৎকার এই সেতুটি দেখে মনে হয়েছিল এই শহরটিতে রাত্রিযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক কাজই করেছি। সেতুর আশেপাশের পার্ক, হারবার আর রেস্তোরা পাড়া আমাদের কেলোনা ভ্রমণকে উপভোগ্য করে তোলে।

পরের দিন ওকানাগান লেকের আঁচলে আশ্রিত খুব সুন্দর শহর এই কেলোনা থেকে ৫০০ কিমি ড্রাইভ করে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সুন্দর এবং বৃষ্টিবহুল শহর ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের রাজধানী সিয়াটলে পৌঁছাই। বোয়িং আর বিল গেটসের মাইক্রোসফটের হেড কোয়াটার সিয়াটলে। বোয়িং প্রোডাকশন সাইট আর মিউজিয়াম দর্শন মিস হওয়া উচিত নয়। বোয়িং মিউজিয়ামে ৭৭৭ সিরিজের উচ্চ প্রযুক্তির এয়ারক্রাফটটি আর বাংলাদেশের পতাকাটি চোখ এড়ায়নি।  মিউজিয়ামের উপর তালা থেকে একের পর নানা ধরণের বোয়িং বিমানের টেস্টিং ফ্লাইট দেখা  বিরল অভিজ্ঞতা বটে।

সিয়াটলের অন্যতম আকর্ষণ প্রশান্ত মহাসাগরের তীরে সি ফুডের জন্যে বিখ্যাত ঐতিহাসিক পাইক প্লেস মার্কেট। জাপানে চাকুরীকালীন সময়ে প্রোজেক্টের কাজে সিয়াটলের বাস্টির বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুবার আসা হয়েছে, ফলে এটি আমার খুব পরিচিত একটি শহর। জাপানি সহকর্মীদের সাথে দেড় দশক আগে সিয়াটল মেরিনারস স্টেডিয়ামে বিখ্যাত জাপানি বেসবল খেলোয়াড় ইচিরু’র খেলা দেখার সুযোগ হয়েছিল।

প্রবাসী কফি প্রেমিকদের বিশ্বখ্যাত কফিসপ চেইন স্টারবাকসের (Starbucks) নাম না জানার কথা নয়। স্টারবাকসের প্রথম স্টোরটি 1971 সালে শুরু হয়  সিয়াটলের এই পাইক মার্কেটে। কফির জন্যে লাইনে  দাঁড়িয়েছিলাম, দীর্ঘ লাইন থাকায় আর ভ্যাংকুবারের ফেরার তাড়া থাকায় সপরিবারে কফি খাওয়া হয়নি প্রাচীনতম এই স্টারবাকসে। তবে সীফুড রেস্তোরাঁয় লাঞ্চ করতে ভুলিনি।

সিয়াটল থেকে আবার কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় ফেরা। এবার প্রশান্ত মহাসাগরের কোল ঘেঁসে কানাডার তৃতীয় বৃহত্তম শহর রূপবতী ভ্যাংকুবারের। কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের বর্ডারে ভিড়ের কারণে ইমিগ্রেশন পার হতে বেশ সময় লেগে যায়।ভ্যাংকুবারে প্রকৃতির নান্দনিকতা উপভোগ করার আগে ফ্যামিলি ফ্রেন্ডদের কিছুটা সময় না দিলেই নয়। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট ভাই  বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতা কৃষিবিদ ডঃ আবু আলী, জাপানে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার পিএইচডিমেট বন্ধুবর ডঃ রব্বানী আর আনন্দমোহন কলেজের পরিচিত মুখ খোকা ভাইয়ের  সাথে কেটেছে বেশ  কিছুক্ষণ।

পরের দিন ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রদেশের রাজধানী ভিক্টোরিয়া ভ্রমণ, যেতে হবে ভ্যাঙ্কুবার আইল্যান্ডে ফেরিতে গাড়ী উঠিয়ে এবং ঐ দিন সন্ধ্যার আগেই ফিরতে হবে বিধায় সকাল সকাল রওয়ানা দিলাম। প্রশান্ত মহাসাগরের বর্ধিত অংশ হারো প্রণালী ভ্যাঙ্কুবার আইল্যান্ড/ভিক্টোরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করেছে ভ্যাঙ্কুবার সিটি থেকে এবং একই সাথে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও। এই প্রণালীটি কানাডা আর যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সীমান্ত।

ফেরির বেসমেন্টে গাড়ী পার্ক করে উপরের দিকে যাত্রীদের বসার আরামারদায়ক জায়গা। ঘণ্টা দেড়েকের খুব আয়েশি ফেরি ভ্রমণে হারো প্রণালীর ইকো সিস্টেমের সাথে এক ধরণের ভাল লাগায় পৌঁছে গেলাম ভিক্টোরিয়ায়। ভিক্টোরিয়া বিশ্বব্যাপী টুরিস্টদের কাছে ভীষণ আকর্ষণীয় একটি ভেন্যু। বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দ বোটানিক্যাল গার্ডেন Butchart Gardens  ভিক্টোরিয়ার পর্যটনকে অন্যরকম উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

প্রাদেশিক পার্লামেন্ট, ভিক্টোরিয়া বিমানবন্দর, হারবার সহ কিছু দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার আগেই বুচার্ট গার্ডেন দেখার পর্বটি সেরে ফেলি।  ভীষণ সুন্দর একটি ল্যান্ডস্কেপে পুরো গার্ডেনটি। কানেডিয়ান উদ্যোক্তা, জাপানি আর ইতালিয়ান ডিজাইনারদের মমতায় তৈরি হয়ে গেল বৈশ্বিক ফুল আর উদ্ভিদ প্রেমিকদের আকর্ষণীয় একটি বাগান। বছরে মিলিয়ন দর্শক ছুটে আসে কানাডার এই জাতীয় হিস্টোরিক সাইটটি দেখতে। বাহারি ফুলের, গাছপালা, পাখি আর নান্দনিক স্থাপনার পাশাপাশি  জাজ উৎসব, আতসবাজির উৎসব অন্যরকম মাত্রা দিয়েছে এই গার্ডেনটিকে।

রকি মন্থনে শুধু রকির প্যানোরেমিক দৃশ্যেই সন্তুষ্ট থাকার কোন মানে হয় না। এবার যে রকি পর্বতে চড়তে হবে। ভিক্টোরিয়া দেখার পর ভ্যাঙ্কুবারের বাসিন্দা বন্ধুবর রাব্বানীর পরিবারের সাথে  রকি আরোহণ ছিল আমাদের আরেকটি  এডভ্যাঞ্চার।

হুইস্লার, ভ্যঙ্কুবার সিটির উত্তরে একটি পর্যটন কেন্দ্র, ২০১০ সালের শীতকালীন অলিম্পিক ভ্যানু ছিল। ল্যান্ডস্কেপের নান্দনিকতায় হুইস্লার সংলগ্ন এলাকায় হুইস্লার আর ব্ল্যাককম্ব পর্বতের সমন্বয়ে গঠিত রকিরেঞ্জ এক কথায় অপূর্ব, বিশ্বের অন্যতম দৃষ্টিনন্দ ন্যাচারাল বিউটি। হুইস্লার পৃথিবীর দীর্ঘতম স্কি রিসোর্টের জন্য বিখ্যাত। রোপওয়ে/গন্ডোলা দিয়ে প্রায় দশ হাজার ফিট উচ্চতায় উঠে রকির সৌন্দর্য উপভোগ করা অন্যরকম এক ভাললাগা। হুইস্লারে রকিতে উঠতে রোপওয়ের একাধিক স্তর আছে। বেশ সাহসী না হলে রোপওয়ের সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছা হয়ে উঠেনা গৃহকর্ত্রীদের অনেকেরই  উচ্চতা ভীতি থাকে, আমাদের ক্ষেত্রে তাই হল, কর্ত্রীরা বেশী উপরে উঠতে চাইলেননা। পর্বতারোহণে আমি আর আমার ছেলেমেয়েরা অভ্যস্ত তাই বাচ্চাদের সাথে যতটুকু উপরে যাওয়া যায় উঠে গেলাম। রব্বানী পরিবার রকির চূড়ায় একটি রোপওয়ে স্টেশনে জোহরের নামাজ সেরে নিলেন।  পাহাড়ের চূড়ায় উঠার মত বিনোদনের সময় ওয়াক্ত অনুসারে নামাজ পড়তে পেরে এই ধার্মিক পরিবারটির যে প্রশান্তি, জাগতিক বিনিময়ে এটি অতুলনীয় বটে।

ধাপে ধাপে চূড়ায় উঠার জন্যে বিভিন্ন সক্ষমতার রোপওয়ে/গন্ডোলা থাকে। বেঞ্চি ধরণের উন্মুক্ত রোপওয়ে সাধারণত স্বল্প দূরত্বে যায়, পা ছড়িয়ে বসে উপরে নীচে চারিদিকে দেখাটি রোমাঞ্চকর বটে। দূরপাল্লার যাত্রায় কিংবা গভীর খাঁদের এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যেতে ব্যবহৃত  গন্ডোলা হচ্ছে  ক্লোজড বক্স ধরণের। গন্ডোলা দিয়ে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাবার আমার জাপান আর ইউরোপের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে দ্বিধা নেই এই রকিরেঞ্জের খাঁদগুলো অনেক বেশী গভীর। নীচের দিকে তাকালে ঘর বাড়িগুলো যে রকম ছোট দেখায় তাতে কতোটা উঁচুতে ধাতব তারের কৃপায় ঝুলে আছেন অনুভবে অসুবিধে হয়না, উচ্চতা ভীতি আছে যাদের তাঁদের জন্যে  অবশ্য এই  আয়োজন নয়।

রকি থেকে ফিরে ভ্যাঙ্কুবারের বিখ্যাত স্টেনলি পার্ক, ডাউন টাউন  আর ভিন্ন ধরণের স্থাপত্যের প্যান প্যাসিফিক হোটেল এলাকা বেড়ানোর কাজটি সেরে ফেলি। বিশ্বের বিভিন্ন মহাদেশে বহু দেশে প্যান প্যাসিফিক হোটেল অবস্থানে সুযোগ হয়েছিল। জাপানে থাকাকালীন সময়ে প্রথববারের মত পেশাগত কাজে ভ্যাঙ্কুবারে এসে এই হোটেলটির দৃষ্টিনন্দ স্থাপত্য আর লোকেশন দৃষ্টি কেড়েছিল বটে।

রকি পর্বতমালা দর্শনে পারিবারিক এই আয়োজনে কানাডা আর যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম কোস্টে প্রায় সাড়ে তিনহাজার কিমি ড্রাইভের সিংহভাগ করেছিল আমার ছেলে আসাহী। এই লং ড্রাইভের শেষ পর্যায়টি ছিল ভ্যাঙ্কুবার বিমান বন্দরে ভাড়া করা রেংগ্লার জীপটি জমা দিয়ে বিমানে মন্ট্রিয়লে ফেরা। চেক ইন আর সিকিউরিটি পেরিয়ে চলে গেলাম এয়ার কানাডার এক্সেকিউটিভ লাউঞ্জে। এয়ার কানাডার অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত যাত্রী হবার কারণে পুরো পরিবার নিয়ে লাউঞ্জের সুবিধেভোগী। এই সুবিধেগুলো উপভোগে বাচ্চাদের আগ্রহ বরাবরই বেশী থাকে, বিশেষ করে খাবারের রকমারি আইটেমে। রাতের খাবার আর কম্পিউটারে কিছুটা কাজ সেরে নিলাম লাউঞ্জে।

ভ্যাঙ্কুবার থেকে এয়ার কানাডার বোয়িং ৭৭৭ এর রাত্রিকালীন রেডআই ফ্লাইটটি যখন ভ্যাঙ্কুবার ত্যাগ করছিল আমাদের অভিজ্ঞতার ঝুলিতে তখন জমা হয়ে গেছে রকি আবাহন আর ডাইনোসরের হারানো রাজ্যের পুঞ্জিভূত স্মৃতি।

লেখক: কলামনিস্ট  এবং বায়োটেক  বিষয়ে বহুজাতিক কর্পোরেটে  ডিরেক্টর পদে কর্মরত।

ছবি: লেখকের নিজস্ব

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

 

 

সংবাদটি শেয়ার করুন