বিশ্ব প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে থমকে গেছে সারা দুনিয়া। ঘরবন্দি হয়ে পড়েছে জনজীবন। নেই আগের মত কাজকর্ম। বন্ধ হয়ে গেছে বিনোদনের সকল জায়গা। বড়দের পাশাপশি শিশু-কিশোররা ঘরবন্দি হয়ে ভুগছে বিষন্নতায়। বন্ধ রয়েছে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সহপাঠি ও বন্ধুবান্ধবদের সাথে আগের মত হচ্ছে না দেখা, গল্প করা এবং খেলাধুলার সুযোগ।
তাই একটু বন্দিদশা থেকে পরিত্রাণ পেতে শিশু-কিশোররা বিনোদন হিসাবে প্রতিদিনই ঘুড়ি উড়ানো উৎসবে মেতে উঠেছে। আর এমনই উৎসবে মেতে উঠেছে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার শিশু-কিশোররা। শুধু দিনের আকাশে নয়, রাতের আকাশেও তারা উড়াচ্ছে শতশত রঙিন ঘুড়ি। এমন দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন উপজেলাবাসীরা। ঘুড়িগুলোর মধ্যে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে নানা রঙের বাতি। এ ঘুড়ি উড়ানোর দৃশ্য রাতের প্রকৃতিতে যোগ হয়েছে ভিন্ন মাত্রা।
এলাকাবাসী বলছেন, মনোমুগ্ধকর এই আয়োজন যেন এক নতুন বার্তা। করোনা পরিস্থিতে থমকে যাওয়া জনজীবনে স্বস্তির এক ছোঁয়া নিয়ে ধনবাড়ী উপজেলার আকাশে উড়ছে শতশত বাহারি ঘুড়ি। লাল, নীল, সাদা, কালো, হলুদ, খয়েরি এ যেন প্রকৃতির এক অবাক করা মনোরম দৃশ্য। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন গ্রামের মাঠে, শহরের বিভিন্ন বাসা বাড়ির ছাদে, খোলা মাঠে এ যেন বাঙলার অপরুপ সৌন্দর্যে শোভিত এক রঙিন পরিবেশ।
ছোট, বড়, লম্বা, চিকন অনেক রকম ঘুড়ি উড়ছে আকাশজুড়ে। অনেকে আবার একত্রে হয়ে নানা ধরনের ঘুড়ি বানিয়ে বাজারেও বিক্রি করছেন। তারা তৈরী করছেন, মিসাইল ঘুড়ি, কয়রা ঘুড়ি, চিল ঘুড়ি, সাপ ঘুড়ি, চং ঘুড়ি, লন্ঠন ঘুড়ি। এসব ঘুড়িতে তারা সংযোগ করছেন বাহারী রঙের বাতি।
উপজেলার কয়ড়া গ্রামের শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর আলম, জাহিদ হাসান, নাঈম আহমেদ, কৃষ্ণ সূত্র ধর ও শিমুল আহমেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাসের জন্য তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সকল বিনোদনের জায়গা। কোথাও যাওয়া যাচ্ছে না। তাই একটু মানসিকভাবে আনন্দের জন্য তারা নানা ধরনের ঘুড়ি বানিয়ে উড়াচ্ছে। তাতে তাদের অনেক আনন্দ। এরকম বিনোদন আর কখনো পাইনি তারা।
শহর থেকে আসা শিক্ষার্থী আইমন হোসাইন অদ্রি বলেন, টিভিতে ঘুড়ি উৎসব দেখেছি। কিন্তু কখনো বাস্তবে ঘুড়ি উড়াইনি। এই প্রথম আমি নানুর বাড়ীতে এসে ঘুড়ি উড়ালাম। অনেক মজা পেলাম। শহরের কোলাহল থেকে গ্রামের ঘুড়ি উড়ানোর অভিজ্ঞতা বন্ধুদের সাথে গল্প করতে পারবো।
স্থানীয় শিক্ষক শাহদত হোসেন জগলু বলেন, আগে দেখতাম শিশু-কিশোররা দিনের বেলাতে ঘুড়ি উড়াতো। এই করোনা পরিস্থিতিতে সময় কাটানোর জন্য রাতের আকাশেও তারা ঘুড়ি উড়াচ্ছে। শতশত ঘুড়ি ছুটোছুটি করছে। এমন দৃশ্য আগে দেখা যায়নি।
এ ব্যাপারে ধনবাড়ী উপজলা মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সভাপতি আব্দুল্লাহ আবু এহসান বলেন, শিশু কিশোররা দিনে ও রাতে শতশত ঘুড়ি উড়াচ্ছে। এ দৃশ্য কেউ না দেখলে বুঝতে পারবে না তা কতটা মনোমুগ্ধকর। তাছাড়া বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের মধ্যেও ব্যাপকভাবে সারা জাগিয়েছে ঘুড়ি ওড়ানোর এমন আয়োজন।
তিনি আরও বলেন, এভাবেই আর কিছুদিন আমাদের কষ্ট করে ঘরে অবস্থান করতে হবে এবং নিরাপদ দূরত্ব মেনে চলতে হবে। করোনার আধাঁর একদিন কেটে যাবে। সামনে আমরা করোনামুক্ত নতুন ভোর দেখতে পাবো।-বিডি-প্রতিদিন
সিএ/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন