মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকর করার আগে পাকিস্তানের সাবেক সামরিক শাসক জেনারেল (অব.) পারভেজ মোশাররফ মৃত্যুবরণ করলে তার মরদেহ রাস্তায় তিন দিন ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির একটি বিশেষ আদালত। তবে এমন রায়ের কারণে বিচারক প্যানেলের প্রধানকে অপসারণ করতে চাচ্ছে সরকার।
গত মঙ্গলবার পেশোয়ার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ওয়াকার আহমেদ শেঠের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ রাষ্ট্রদ্রোহের দায়ে পারভেজ মোশাররফকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ১৬৯ পাতার ওই রায়ের বিস্তারিত প্রকাশ হলে তা থেকেই এই তথ্য জানা গেছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক গণমাধ্যম ডন।
রায়ে বলা হচ্ছে, ‘আইন প্রণয়নকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিচ্ছি পলাতক দোষী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের জন্য সবরকম চেষ্টা চালাতে হবে। কিন্তু সাজা কার্যকরের আগেই যদি তার মৃত্যু হয়, তাহলে ইসলামাবাদের ডি-চকে তার মরদেহ নিয়ে সেখানে তিন দিন ঝুলিয়ে রাখতে হবে।’ ডি-চক স্থানটি পাকিস্তান পার্লামেন্টের কাছেই।
তবে মোশাররফের আইনজীবী এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী ফারোগ নাসিম বলেন, ‘ওই তিন সদস্যের বিচারক প্যানেলের প্রধানকে অপসারণ করতে চাচ্ছে সরকার। বিচারক ওয়াকার আহমেদ শেঠ বিচারিক বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন বলে দাবি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের জবাব হচ্ছে, এ ধরনের বিচারক হাইকোর্ট কিংবা সুপ্রিমকোর্টে বিচার পরিচালনার কর্তৃত্ব রাখেন না। তিনি অযোগ্য।’
এদিকে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলেন, আদালতের ঘোষণা প্রমাণ করছে, বিচারের মূল রায়ে ত্রুটি রয়েছে। আজকের রায়ে বিশেষভাবে যে সব ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা মানবতা, ধর্ম, সভ্যতা ও আমাদের মূল্যবোধের বাইরে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছেন সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া।
২০০৭ সালে সংবিধান লঙ্ঘন করায় উচ্চতর রাষ্ট্রদ্রোহের প্রমাণ পাওয়ার পর ২০১৩ সালে ৭৬ বছর বয়সী মোশাররফের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালে তিনি ক্ষমতা দখল করেছিলেন।
তার মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিত করতে বর্তমানে দুবাইয়ে চিকিৎসাধীন জেনারেলকে গ্রেপ্তার করতে নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।