রূপকথা ||| ইফতেখার ফয়সাল
রসগোল্লা দিয়ে বানানো এক পরি ছিলো ওই দিগন্তের পরের দেশের পরের দেশে। কোনো জনমানব ছিলো না। মাছি ছিলো। মৌমাছিও ছিলো। পরির শরীরে বসে তারা গান গাইতো। আর মিষ্টি রস খেতো। পরি তাদের ভালোবাসতো। পরি জানতো না, মৌচাক বানাচ্ছে মৌমাছিরা। একদিন পরি বললো, আমি খুব ক্লান্ত। অনেক তো হলো। এবার একটু ঘুমাই। বলেই পরি মরে গেলো। মাছিরা তার পচা শরীর খাওয়ার অপেক্ষায় বসে রইলো।
মৌমাছিরা উড়ে গেলো মৌচাকে। মধু খেতে শুরু করলো। কয়েকদিন পর পরি পচে গেলে মাছিরা অনেক ভনভন করলো। তেমন কিছু খেতে পারলো না। তবু ভনভন। মৌমাছিরা পরির দিকে আর পা বাড়ালো না। তারা দিগন্তের পরের দেশের পরের দেশে এসে চিনির খোঁজ করলো। প্রথমে মানুষের শরীরে। অনেক দিন পর তারা পৌঁছে গেলো ফুলে। তারা মৌচাক বানায়। কিন্তু কে যেন খেয়ে ফেলে। এভাবে চলতেই থাকলো। তারা ভাবলো আমাদের জমানো মধু অন্য কারো জন্যই। আমাদের জন্য না। মৌচাক বানানোতেই আমাদের জীবনের সার্থকতা। তারা গাইলো, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে। একদিন তারা জানতে পারলো মাছিরা চিনি, মিষ্টি খায়, এমনকি মানুষের শরীরে ক্ষত হলে সেখানেও আনন্দ করে। তারা মরা মানুষ ঘিরেও ভনভন। তারা চায় কবরপ্রথা উঠে যাক। মরা মানুষ খাওয়া নিরাপদ। বাধা দিতে পারে না। মৌমাছিরা স্থির করলো তারা মৌচাক বানিয়েই যাবে। মৌচাক নিতে এসে কেউ যদি তাদের হত্যা করে তারা মনে কিছু করবে না। আনন্দ পাবে। মাছি স্থির করলো, তারা সব খাবে। শেষমেষ মানুষের লাশও তাদের খেতে হবে। এতেই তাদের আনন্দ। তারা ভাবলো, মৌমাছিরা বোকা। তারা চালাক।
পরির নাম ছিলো জীবন বেগম। একজন জানতে চাইলো, জীবন কি স্ত্রীবাচক? জবাব এলো, হ্যাঁ। আদি জীবনের মৃত্যু থেকেই এই জীবনজোয়ারের শুরু।
মোরাল ইজ, মানুষ ২ প্রকার। মাছি ও মৌমাছি।