শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের নৈতিক বৈধতা ||| বশির আহমদ জুয়েল
রাষ্ট্র কখনো শূন্য থাকে না। কিন্তু রাষ্ট্রের বৈধতা থাকে সেই নেতৃত্বে, যিনি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে শপথ নিয়ে থাকেন। ২০২৪ সালের জুলাই- আগস্ট ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের এক দুঃসময়। রাজধানীসহ দেশ তখন জ/ঙ্গি, বিদ্রোহী ও বিভ্রান্ত অংশের হাতে প্রায় অবরুদ্ধ। রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ভেঙে পড়ছিল, সেনা সদরেও ছিল অনেক বিভাজন। ঠিক সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জীবন ও রাষ্ট্ররক্ষার স্বার্থে, সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে নিরাপদ স্থানে যেতে বাধ্য হন। এ ক্ষেত্রে সেনা সমর্থন ছিলো শতভাগ।
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাননি —কারণ পালানো মানে দায়িত্ব ফেলে যাওয়া, অথচ তিনি তাঁর সাংবিধানিক দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেননি, কোনো সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ক্ষমতা ছাড়েননি। যদি তিনি সত্যিই পালিয়ে যেতেন, তাহলে যেসব সেনা কর্মকর্তা তাঁকে নিরাপদে পৌঁছে দিলেন, তাদের বিরুদ্ধে কেন কোর্ট মার্শাল হয়নি কেনো? জবাব একটাই রাষ্ট্র জানতো—এটা পলায়ন নয়, এটা সাময়িক আত্মরক্ষা, রাষ্ট্রনেত্রীর জীবন বাঁচানোর কৌশল।
আজ প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেছে। এ সময়ে দেশে “জুলাই সনদ” নামে যেসব সিদ্ধান্ত, চুক্তি বা আদেশ কার্যকর করা হয়েছে—সেগুলোর কোনোটিই নির্বাচিত সরকারের অনুমোদনে হয়নি। তাই শেখ হাসিনা দেশে ফিরে এলে, তাঁর সাংবিধানিক ও নৈতিক অধিকার থাকবে এই সমস্ত অবৈধ কর্মকাণ্ডকে এক সিগনেচারে বাতিল করার।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মতে—বৈধতা (Legitimacy) আসে জনগণের ম্যান্ডেট থেকে,অস্থায়ী ক্ষমতা বা জোরজবরদস্তি থেকে নয়। তাই “জুলাই সনদ” দখলকারী বা ষড়যন্ত্রের একটি প্রশাসনিক কাগজ হতেই পারে, কিন্তু এটি কখনোই একটি জাতির রাজনৈতিক বৈধতা হতে পারে না।
শেখ হাসিনার ফেরা তাই শুধু ব্যক্তির প্রত্যাবর্তন নয়,
এটা হবে রাষ্ট্রের বৈধতার পুনর্জন্ম। তিনি ফিরলে, বাংলাদেশ আবার তার সাংবিধানিক পথের ওপর দাঁড়াতে পারবে—যেখানে শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারাটি আবার জেগে উঠবে।