স্ত্রী নয়; তালাক দিয়েছে তার বড়বোন
শ্যালিকার সাথে ১১ মাসের সংসার, অতঃপর…
বিয়ের ১১ মাস পর তালাকের কাগজ হাতে পেয়েছে মোহাম্মদ শাকিল। সুখের সংসারে হঠাৎ স্ত্রীর কাছ থেকে তালাকনামা পেয়ে হতাশাগ্রস্থ হওয়ার পাশাপাশি আঁতকে উঠেন শাকিল।
তালাকনামায় দেখতে পান স্ত্রী আয়েশা তাকে তালাক দেয়নি, দিয়েছে তার বড় বোন সুরাইয়া। এ ঘটনায় গোটা এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। জানা গেছে, জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের সিন্নিরচর গ্রামের জয়নাল খানের ছেলে শাকিলের সাথে একই গ্রামের আবুল কালাম ফরাজীর মেয়ে আয়েশা আক্তারের বিয়ে হয় ১০ মাস আগে। ১১ মাসের মাথায় শাকিলকে তালাক দেওয়া হয়। তালাকনামায় আয়েশার জায়গায় রয়েছে তার বড়বোন সুরাইয়ার নাম। সেই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে কাবিননামা তুলে শাকিল দেখতে পায়, কাগজে কলমে সুরাইয়ার সাথেই তার বিয়ে হয়েছে। আর সুরাইয়ার ছোট বোন তথা শ্যালিকা আয়েশাকে স্ত্রী ভেবে ১১ মাস সংসার করেছেন শাকিল। কাগজে-কলমে যার সাথে শাকিলের বিয়ে হয়েছে সেই সুরাইয়ার রয়েছে স্বামী ও দুই সন্তান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মোহাম্মদ শাকিল বলেন, আয়েশার সাথে আমি ঘর-সংসার করেছি। অতিসম্প্রতি দাম্পত্য কলহের কারণে আয়েশা আমার সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ার পর সুরাইয়া আমাকে তালাকনামা পাঠিয়েছেন। ওরা ইচ্ছাকৃতভাবে জালিয়াতি করেছেন। পরিবারসহ আমার মানসম্মান নষ্ট হয়েছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
শাকিলের বাবা জয়নাল খান বলেন, বিবাহের সময় মেয়ের বাড়ি থেকে কাজীকে যে জন্মনিবন্ধন দেওয়া হয়েছে তিনি তা দেখেই লিখেছেন। ছেলে ও তার স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্যর পর আয়েশা তাদের বাড়িতে চলে যাবার পর আমি তাকে (ছেলের বউ) কয়েকবার আনতে গেলেও তার বাবার বাড়ির লোকজনে আসতে দেয়নি। কয়েকদিন আগে আমার ছেলের স্ত্রীর বড়বোন সুরাইয়া তালাকনামা পাঠিয়েছে। পরে কাবিননামা তুলে দেখতে পাই ছেলের বউয়ের নাম সুরাইয়া লেখা আছে। কিন্তু আমার ছেলেতো ঘর সংসার করেছে আয়েশার সাথে।
শাকিলের শাশুড়ি হাজেরা বিবি বলেন, যে কাবিননামা করেছেন সেই কাজীর কারণে এ সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে সুরাইয়া বলেন, আমার স্বামী ও সংসারে দুইটি সন্তান রয়েছে। শাকিলের সাথে আয়েশার বিয়ে হয়েছে। সেখানে আমার নাম আসার কথা নয়। বিয়ের কাজীর কারণেই এমনটা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এদিকে বিয়ে ও তালাকের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের কাজী একেএম সিরাজুল ইসলাম। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ফরাজী জানান, এ বিষয়ে তার কাছে কিংবা গ্রাম আদালতে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মেয়ের মা এবং বিয়ের কাজীর পরস্পরের ওপর দোষ চাপালেও প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিয়ের সময় আয়েশার বয়স ১৮ বছর না হওয়ায় বড় মেয়ে সুরাইয়ার জন্মনিবন্ধন দিয়ে ছোট মেয়ে আয়েশার বিয়ের রেজিষ্ট্রি সম্পন্ন করা হয়েছে।