‘সংখ্যার চেয়ে ভালো কাজই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ’ । মডেল-অভিনেত্রী ঊর্মিলা শ্রাবন্তী কর বর্তমানে টিভি নাটকে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। এর বাইরে একটি চলচ্চিত্রের শুটিংও শেষ করেছেন তিনি। অভিনয় ক্যারিয়ার ও সমসাময়িক নানা প্রসঙ্গে তার সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন এন আই বুলবুল ।
গেল বছরে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। সেই ছবির বিষয়ে জানতে চাই।
শাহনেওয়াজ কাকলীর ‘ফ্রম বাংলাদেশ’ শিরোনামের চলচ্চিত্রে আমাকে দেখা যাবে। গেল বছরের ১০ই অক্টোবর থেকে এটির শুটিং শুরু করি। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার প্রেক্ষাপট নিয়ে এ ছবির গল্প। চলতি বছরেই ছবিটি দর্শক দেখতে পাবেন বলে আশা করছি। এতে আরো অভিনয় করেছেন শক্তিমান অভিনেত্রী ফেরদৌসী মজুমদার।
চলচ্চিত্র নিয়ে পরিকল্পনা কি?
চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় করতে চাই।
চলতি বছরে আরো দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার কথা রয়েছে। টিভি নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের দিকে মনোযোগ দিয়েছি। আমাদের চলচ্চিত্রে বেশ পরিবর্তন আসছে। গল্পেও নতুনত্ব থাকছে। আশা করছি টিভি নাটকের মতো চলচ্চিত্রেও ভালো কিছু করতে পারবো।
টিভি নাটকের ব্যস্ততা নিয়ে বলুন।
টিভি নাটকে নিয়মিত কাজ করছি। এখন টেলিভিশনের পাশাপাশি ইউটিউবের জন্যও বিভিন্ন নাটকে কাজ করছি। এরমধ্যে একটি হলো ওয়েব সিরিজ। সম্প্রতি আনিসুর রহমান রাজিবের নিদের্শনায় ‘পাগলে কি না বলে’ এবং ফরহাদ ফয়সলের ‘নীল পাথরের অন্তর্দাহ’ শিরোনামের দুটি একক নাটকের শুটিং শেষ করেছি। নাটক দুটিতে জুটিবদ্ধ হয়েছি সালাউদ্দিন লাভলু ও চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে। এছাড়া আশরাফুজ্জামানের ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা এখন ঢাকায়’, সকাল আহমেদের ‘শান্তিপুরের অশান্তি’, জাহিদ হাসানের ‘হুলস্থুল’ ধারাবাহিক নাটকগুলোতে কাজ করছি।
নাটকে অভিনয়ের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন?
গল্প ও চরিত্র দুটিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকি। দুটির একটিতে এলোমেলো থাকলে সেই কাজ কখনো ভালো হয় না। এছাড়া সংখ্যার চেয়ে ভালো কাজই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের দর্শক পাশের দেশের টিভি সিরিয়ালে বেশি মুগ্ধ। চলতি সময়ে দেশীয় টিভি চ্যানেলের ধারাবাহিকগুলো তেমন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে না। তার কারণ কি মনে করেন?
আমাদের এখন টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা অনেক বেশি। প্রতিটি চ্যানেলে প্রতিদিন একাধিক ধারাবাহিক নাটক প্রচার হচ্ছে। যার কারণে কখন কোন চ্যানেলে কোনটি যাচ্ছে দর্শক তা সঠিকভাবে জানে না। আমি মনে করি, আমাদের নাটক ভালো ভালো গল্পে নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু দর্শকের কাছে সেগুলো সঠিক ভাবে পৌঁছানো যাচ্ছে না বলে এমন নেতিবচাক কথা শুনতে হচ্ছে।
ইউটিউবে ভিউর জন্য অনেক সস্তা গল্পের নাটক নির্মাণ হচ্ছে বলে কেউ কেউ বলছেন। আপনি এ নিয়ে কি বলবেন?
এই সময়ে বিনোদনের অন্যতম একটি মাধ্যম ইউটিউব। একে বাদ দেয়ার মতো কিছু নেই। কিন্তু এর অপব্যবহার আমাদের জন্য ক্ষতিকর। বেশি ভিউয়ের জন্য অনেকে নাটকে বিভিন্ন ধরনের সংলাপ ব্যবহার করছেন। আমি মনে করি স্বাধীনভাবে কাজ করার অর্থ এই নয়, যা ইচ্ছে তা নির্মাণ করবো। আমি মনে করি, আমাদের ঐতিহ্য নষ্ট হবে এমন কিছু না করা সবার জন্য মঙ্গল।
নাটকে নতুন দর্শক তৈরির জন্য কি করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
এখন নাটক শুধু টেলিভিশনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। টেলিভিশনের বাইরে ইউটিউব ও বিভিন্ন অ্যাপসের জন্য নাটক নির্মাণ হচ্ছে। এ সময়ে নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্মাতাদের নির্মাণশৈলির দিকে একটু মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন। বিভিন্ন ধরনের গল্প নিয়ে কাজ করলে আমাদের নাটকে নতুন দর্শক তৈরি হবে। দর্শক এখন সারা বিশ্বের নাটক-চলচ্চিত্র দেখছে। সেখানে আমাদের পিছিয়ে থাকলে চলবে না। আমার কাছে মনে হয় ‘সংখ্যার চেয়ে ভালো কাজই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ’ ।