সৌদি আরবে বাংলাদেশি নারী শ্রমিক সেলিনা আক্তার
সৌদি আরবে নির্যাতিত নারী শ্রমিক সেলিনা আক্তার দেশে ফেরার আকুতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সহায়তা চেয়েছেন।
এক ভিডিওবার্তায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি এ সহযোগিতা চেয়েছেন। এরইমধ্যে ভিডিওটি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওবার্তায় সেলিনা আক্তার বলেন, ‘হাজার হাজার মেয়ে সৌদি আরবে নির্যাতিত হচ্ছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন নারী। তিনি সরকারে আছেন। কেন আমাদের সাহায্য করছেন না?
তিনি আরও বলেন, কেন আমাদের ধুঁকে ধুঁকে মরতে হচ্ছে? তার কাছে আমার একটাই অনুরোধ- আমাকে আমার স্বামী-সন্তানের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হোক। আমি আমার স্বামী-সন্তানের কাছে যেতে চাই।’
এর আগে সেলিনা আক্তার একাধিক ভিডিওতে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানিয়েছেন বলে তার স্বামী উজ্জ্বল জানান।
সেলিনা বলেন, বিনা কারণেই আমাকে প্রায় প্রতিদিনই মারধর করে নিয়োগকর্তা ও তার স্বজনরা। গরম ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাকা দিতে আসে, চুল কেটে দিতে আসে। আমার পুরো শরীরে মারের (নির্যাতন) দাগ। পিঠে মারে, বুকে-মাথায় মারে। এসব জায়গা তো আর দেখানো যায় না। আমি বার বার বলছি, আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান। কেন নিচ্ছেন না?’
জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার কদমতলী থানার পূর্ব জুরাইনের মো. উজ্জলের স্ত্রী সেলিনা আক্তার (বিএক্স-০৭১৩৯১৭) গত বছরের ডিসেম্বরে মেসার্স মিলেনিয়াম ওভারসিজ লিমিটেডের মাধ্যমে সৌদি আরবে যান।
যাওয়ার পর সেলিনা তার স্বামী এবং স্বজনদের কাছে এক ভিডিওবার্তা পাঠিয়ে নিয়োগকর্তা ও তার স্বজনদের শারীরিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। এরপর প্রায় প্রতিদিনই ভিডিওবার্তায় তার ওপর শারীরিক, মানসিকসহ নানা নির্যাতনের কথা জানিয়ে আসছিলেন।
তবে সেলিনা আক্তার দীর্ঘদিন ধরে দেশে ফেরার আকুতি জানালেও তাকে এখনও দেশে ফেরাতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।
সূত্রে জানা গেছে, সেলিনাকে সৌদি আরবে পাঠানো মেসার্স মিলেনিয়াম ওভারসিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের কাছে দীর্ঘদিন ধর্না দিয়ে স্ত্রীকে ফেরাতে না পাওয়ায় গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) বরাবর আবেদন করেন তার স্বামী মো. উজ্জল।এরপর গত ২৪ নভেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ওয়েজ আর্নার্স ওলেফেয়ার বোর্ডেও আবেদন করেন তিনি।পরে সেলিনা আক্তারকে উদ্ধার করে দেশে পাঠানোর জন্য বিএমইটি এবং ওয়েজ আর্নার্স ওয়েল ফেয়ার বোর্ড থেকে সৌদি আরবের রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইংয়ে চিঠি লেখা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেই চিঠির কোনো জবাব দেয়নি দূতাবাস।
এ বিষয়ে ওয়েজ আর্নার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ডের উপপরিচালক জাহিদ আনোয়ার বলেন, আমরা চিঠি লিখেছি। এখন তারা বিষয়টি দেখছে। দূতাবাস থেকে এখনও আমাদের কিছু জানানো হয়নি।