দেশের সংবাদ ফিচার্ড

স্বর্ণময়ীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন, ঢাকা স্ট্রিমের সম্পাদকের কাছে ৫ নারীর চিঠি

ঢাকা স্ট্রিমের গ্রাফিক্স ডিজাইনার স্বর্ণময়ী বিশ্বাস। ছবি: সংগৃহীত

স্বর্ণময়ীর মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন, ঢাকা স্ট্রিমের সম্পাদকের কাছে ৫ নারীর চিঠি

সম্প্রতি যাত্রা করা অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘ঢাকা স্ট্রিম’-এর এক কর্মীর মৃত্যু ঘিরে সোশাল মিডিয়ায় আলোচনার মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির সম্পাদকের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন পাঁচ বিশিষ্ট নারী অধিকার কর্মী।

ঢাকা স্ট্রিমের গ্রাফিক্স ডিজাইনার স্বর্ণময়ী বিশ্বাসের মৃতদেহ শনিবার রাতে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করা হয় বলে জানান তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার ইবনে মিজান। ২৮ বছর বয়সী ওই তরুণী আত্মহত্যা করেছেন বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে অনেকেই মনে করছেন, তাঁর মৃত্যুর পেছনে দায় রয়েছে অফিসের এক শীর্ষ কর্মকর্তার। সেই কর্মকর্তা আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে স্বর্ণময়ীসহ ২৬ জন কর্মী যৌন নিপীড়ন ও অশালীন আচরণের অভিযোগ করেছিলেন।

এই প্রেক্ষাপটে ঢাকা স্ট্রিমের সম্পাদক গোলাম ইফতেখার মাহমুদের বরাবর চিঠি পাঠান পাঁচ বিশিষ্ট নারী— অধ্যাপক রেহনুমা আহমেদ, অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, গবেষক ও অ্যাক্টিভিস্ট সায়দিয়া গুলরুখ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সামিনা লুৎফা।

চিঠিতে তাঁরা নিজেদের নারী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন এবং চিঠিটি নিজেরাই সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানতে পারি, আপনার নিউজপোর্টালে কর্মরত গ্রাফিক্স ডিজাইনার স্বর্ণময়ী বিশ্বাস আত্মহত্যা করেছেন। একই সঙ্গে জানতে পারি, তিনি ও আরও কয়েকজন নারী সহকর্মী বাংলা বিভাগের প্রধান আলতাফ শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন।”

নারী অধিকার কর্মীরা বলেন, “উচ্চ আদালত থেকে ২০১০ সালে কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আপনার প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগ কর্তৃক প্রচারিত বিবৃতি পড়ার পর আমাদের মনে কিছু প্রশ্ন জেগেছে।”

তাঁরা জানতে চান, “এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপনি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন? তদন্ত কমিটিতে নারী-পুরুষের অনুপাত রক্ষা করা হয়েছিল কি না, বহিঃস্থ সদস্য ছিলেন কি না— জানতে চাই। কমিটির কার্যপরিধি কী ছিল? কারণ অভিযোগ ছিল যৌন হয়রানির, ‘অসৌজন্যমূলক আচরণের’ নয়।”

চিঠিতে আরও বলা হয়, “বার্তাকক্ষ থেকে একজন বিভাগীয় প্রধানকে প্রত্যাহার করাটা যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নয়। কারণ, এ ধরনের ঘটনায় অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্তের বিধান রয়েছে। আপনার প্রতিষ্ঠান যে তা করেনি, তা আপনাদের বিবৃতি থেকেই স্পষ্ট।”

নারী অধিকার কর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, “আপনাদের দাবি অনুযায়ী অভিযোগকারীরা পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন— এর কোনো প্রমাণ আছে কি না?”

চিঠিটি সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। নারী অধিকার কর্মীদের এই প্রশ্নের জবাবে এখনো কোনো মন্তব্য জানায়নি ‘ঢাকা স্ট্রিম’।

-সূত্রঃ বাংলাদেশ জার্নাল

এসএস/সিএ
সংবাদটি শেয়ার করুন