হাফ মিলিয়ন ডলার খরচ করে পছন্দের নারীকে বিয়ে করলেন বাংলাদেশী লেসবিয়ান ইয়াশরিকা!
নিউ ইয়র্ক: প্রায় অর্ধ মিলিয়ন ডলার খরচ করে নিজের পছন্দের নারী আমেরিকান লেসবিয়ান এলিকা রুথ কুকলির (৩১) কে বিয়ে করে ঘরণী হলেন বাংলাদেশী লেসবিয়ান নারী ইয়াশরিকা জাহরা হক (৩৪)। সম্ভবতঃ ইয়াশরিকাই প্রথম বাংলাদেশী লেসবিয়ান নারী যিনি উত্তর আমেরিকায় ভালোবেসে আমেরিকান আরেক লেসবিয়ান নারীকে বিয়ে তার স্ত্রী হয়েছেন। পেতেছেন ভালোবাসার সংসার।
ইয়াশরিকা এবং কাকলির এই বিয়ে নিয়ে ঘটে করে “দে বন্ডেড ওভার ক্যারামেল পাই” হেডলাইন দিয়ে রিপোর্ট করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। গত ৭ জুন ২০১৯ বাংলাদেশী কায়দায় বাংলাদেশী লেসবিয়ান ইয়াশরিকা তার পছন্দের নারী লেসবিয়ান এলিকা রুথ কুকলিকে বিয়ে করে তাঁকে স্বামী হিসাবে গ্রহণ করে নিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের রেপিড সিটি সাউথ ডাকোটার বাংলাদেশী বাসীন্দা ইয়াসমীন হক এবং ইয়ামীন হকের কন্যা ইয়াশরিকা ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করেছেন। ২০১৫ সালে একটি এলজিবিটি মার্চে মার্কিন যুবতী এলিকা রুথ কুকলির (৩১) সঙ্গে প্রথমবারের মত দেখা হয় জাহরা হকের। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে পরিণয়। আর সেই ভাল লাগা থেকেই ২০১৯ এর ৬ জুন তারা বিবাহবন্ধনে আবন্ধ হন। তাদের এই বিয়ে আমেরিকায় হলেও বিয়ের সমস্ত আয়োজনেই ছিলো বাঙালিয়ানার ছোঁয়া।
নিজেদের প্রেমের কথা জানাতে গিয়ে ইয়াশরিকা বলেন, কুকলিকে প্রথম দেখার পর আমার যে কেমন লেগেছিল তা বলতে পারব না। তখন সে একা ছিল। আমিও তার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম। পরেরবার দেখা হবার পর আমাদের কথা হয়।
কয়েকমাস পর তাদের আবার দেখা হয় এক বন্ধুর পার্টিতে। কুকলি বলেন, আমি ততদিনে বুঝতে পেরেছিলাম যে আমাকে ইয়াশরিকা পছন্দ করে। সেদিন আমরা সারারাত একসঙ্গে গল্প করেছিলাম। কুকলি আরো বলেন, সে খুবই মায়াবী আর যত্মশীল একটি মেয়ে। যা-ই হোক না কেন সে আমার পাশেই থাকবে। ইয়াশরিকা বলেন, তখনও অবিবাহিত থাকার বিষয়টি ধরে রাখার চেষ্টা করচিলাম, “কিন্তু মনে হয়েছিল চুম্বককে একসাথে টেনে তোলা হচ্ছে, এবং আমি কেবল পালানোর চেষ্টা করছিলাম। কারণ আমি মনে করি না কারও সাথে থাকা আমার পক্ষে সঠিক ছিল। বিয়ের পর এখন আমার মনে হয় যে এতদিনে দুটো চুম্বক জোড়া লাগল। আমি খুবই খুশি।
ইয়াশরিকা জাহরা হক ওয়াশিংটনের জর্জটাউন ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করেছেন। তারপর ইলিনয়েসের নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি নিয়েছেন। তিনি বর্তমানে একটি ল’ ফার্মে এসোসিয়েট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাদের বিয়ের সম্পূর্ণ আয়োজনটি ব্রুকলিনের ২৪০ কেন্ট এভিনিউতে হলেও আয়োজনটি ষোলো-আনাই ছিলো বাঙ্গালীত্বে ভরা। ঐতিহ্য অনুযায়ী ইয়াশরিকা হকের পরনে ছিল লাল টুকটুকে বেনারসি। দু’হাতের কনুই থেকে হাতের তালু পর্যন্ত মেহেদির আলপনা।
এলিকা রুথের পরনে ছিল অফ হোয়াইট কালার শেরওয়ানি, লাল পাজামা। লাল বেনারশীর সাজে ইয়াশরিকার দু’হাতে মেহেদির নকশা। গলায় মুক্তার মালা। কপালে স্বর্ণের টিকলী সম্পূর্ণ বাংলাদেশী ট্রাডিশনাল ভাবেই বিয়ে বসে অডিওলজিস্ট এলিকা কাকলিকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেছেন বাংলাদেশী ইয়াশরিকা!