বিশ্ব

১০০ মাইল হাঁটার ঘুম ট্রেনের চাকায়ও ভাঙল না, রইল পড়ে বাসি রুটি!

১০০ মাইল হাঁটার ঘুম ট্রেনের চাকায়ও ভাঙল না

১০০ মাইল হাঁটার ঘুম ট্রেনের চাকায়ও ভাঙল না, রইল পড়ে বাসি রুটি! ।। রাতভর হাঁটার পর ক্রমশ পা ভারী হয়ে আসছিল। ক্লান্ত, অবসন্ন শরীরটা আর এগোচ্ছিল না। উপায় না দেখে তাই রেল লাইনের উপরই বসে পড়েছিলেন। ভেবেছিলেন, লকডাউনের সময় ট্রেন তো চলছে না। তাই লাইনের উপর বসে খানিক জিরিয়ে নিয়ে ফের রওনা দেবেন। কিন্তু পুঁটলিতে রাখা শুকনো রুটি মুখে পুরতেই বন্ধ হয়ে এসেছিল দু’চোখ। এলিয়ে পড়েছিলেন সকলে।

কিন্তু ক্লান্তির জেরে মালগাড়ির শব্দ যে তাঁদের কানে পৌঁছবে না, একেবারে চিরঘুমে চলে যেতে হবে, তা বুঝে উঠতে পারেননি কেউই। মরতে মরতে যে ক’জন প্রাণে বেঁচেছেন, ধাতস্থ হতে পারছেন না তারাও। রেললাইনের উপর রক্তভেজা ছেঁড়া কাপড়ের সঙ্গে লেপ্টে থাকা দেহাংশ বার বার চোখের সামনে ভেসে উঠছে তাদের। এঁদের মধ্যে কেউ এখনো কথা বলার মতো অবস্থায় নেই বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের আওরঙ্গবাদের সিনিয়র পুলিশ অফিসার মোক্ষদা প্যাটেল।

স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনে রোজগার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মধ্যপ্রদেশের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় ২০ জন পরিযায়ী শ্রমিকের একটি দল। মহারাষ্ট্রের জলনা থেকে ১৫৭ কিলোমিটার (প্রায় ৯৮ মাইল) পেরিয়ে এ দিন ভোরে ভুসাবল পৌঁছন তাঁরা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর ক্লান্তিতে অবসন্ন হয়ে পড়েন তারা। তাই ভুসাবলে বদনাপুর এবং কর্মাড স্টেশনের মাঝে রেললাইনের উপর খানিক ক্ষণ জিরিয়ে নেবেন বলে ঠিক করেন। লকডাউনে ট্রেন চলাচল যেহেতু বন্ধ, তাই নিশ্চিন্তে লাইনের উপরই ঘুমিয়ে পড়েন তারা। সেই অবস্থাতেই ভোর সোয়া ৫টা নাগাদ তাদের উপর দিয়ে চলে যায় একটি মালগাড়ি।
ট্রেনের শব্দে ঘুম ভেঙে গেলে কোনোরকমে লাইন থেকে সরে যেতে সক্ষম হন পাঁচ জন। তাদের মধ্যে এক জন আবার লাইন থেকে সরে যাওয়ার সময় মালগাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হন। কিন্তু বাকি ১৫ জনই মালগাড়িতে কাটা পড়েন।

চেষ্টা সত্ত্বেও মালগাড়ির চালক সময় মতো ট্রেন থামাতে পারেননি বলে রেলমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। টুইটারে বলা হয়, ‘বদনাপুর এবং কর্মাড স্টেশনের মাঝে রেল লাইনে শ্রমিকদের দেখে ট্রেন থামানোর চেষ্টা করেছিলেন মালগাড়ির চালক। কিন্তু ট্রেন থামাতে পারেননি তিনি। দুর্ঘটনার পর আহতদের আওরঙ্গবাদ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গোটা ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

ঘটনার পর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যে যে ছবি সামনে এসেছে, তাতে দেখা গেছে, লাইনের উপর পড়ে রয়েছে বাসি শুকনো রুটি। ইতস্তত ছড়িয়ে রয়েছে তাপ্পি দেওয়া হাওয়াই চটি। তারই মধ্যে ছিন্নভিন্ন দেহগুলো পড়ে রয়েছে।

সূত্র- আনন্দবাজার।

 

সিবিএনএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

 

সংবাদটি শেয়ার করুন