কমলগঞ্জের সংবাদ পরিক্রমা
চাতলাপুর চেকপোস্ট দিয়ে তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক ও জুস রপ্তানি বন্ধ করলো ভারত
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নে অবস্থিত চাতলাপুর স্থল শুল্ক স্টেশন দিয়ে তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক সামগ্রী ও জুস রপ্তানি বন্ধ করেছে ভারত সরকার। গত সোমবার (১৯ মে) থেকে এই পণ্যগুলো রপ্তানি বন্ধ করা হয়েছে। চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা তারিক মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরগর-চাতলাপুর রোড দিয়ে এখনো নিয়মিত রপ্তানি হচ্ছে মাছ, সিমেন্ট, প্লাস্টিক সামগ্রী, জুসসহ নানা ধরনের পণ্য। তৈরি পোশাক এ দিক থেকে রপ্তানি করা না হলেও নতুন করে প্লাস্টিক ও জুস পণ্য রপ্তানি বন্ধ করায় ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
আমদানি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ফাবি এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন বলেন, গত সোমবার থেকে প্লাস্টিক সামগ্রী, তৈরি পোশাক ও জুস রপ্তানি বন্ধ করলো ভারত। এখান দিয়ে আমরা নিয়মিত প্লাস্টিক সামগ্রী ও জুস রপ্তানি করতাম। কয়েকদিন আগেও প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি করেছি।
চাতলাপুর শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা তারিক মিয়া বলেন, আমরা ভারতের পক্ষ থেকে চিঠি পেয়েছি এই রোডে প্লাস্টিক, তৈরি পোশাক ও জুস জাতীয় পণ্য রপ্তানী না করার জন্য। এই পণ্যগুলো রপ্তানি ভারতের পক্ষ থেকে বন্ধ করা হয়েছে।
কমলগঞ্জের শমশেরনগর বাজারে সরকারি জমি দখল করে দোকানপাঠ; ঝিলের পানি প্রবাহের নালার মুখ বন্ধ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা বিদ্যালয় এর বিপরীতে সরকারি রাস্তার জমি দখল করে দোকানপাঠ করা হয়েছে। নালার মুখে ময়লা আবর্জনার ¯ু‘প জমে বন্ধ করায় ঝিলের পানি প্রবাহের বিঘœ ঘটছে। বর্ষায় জলাবদ্ধতা হয়ে আবাসিক এলাকায় পানি উঠার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
শমশেরনগর বাজারের ভানুগাছ রোডে হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বিপরীতে রাস্তার সরকারি জমি দখল করে প্রায় ১৫/২০ বছর ধরে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি দোকান। ফলে সাধারণ পথচারী চলাচলের রাস্তা বন্ধ সহ পানি প্রবাহে বিঘœ সৃষ্টি করছে।
আলাপকালে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, কালিবাড়ি মার্কেটের বিপরীতে চা বাগান ঝিলের সীমানা প্রাচীরের বাহিরে গত ১০/১৫ বছর আগে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি রাস্তার সরকারি জমি দখল করে সেখানে দোকান স্থাপন করে। পরে এসব দোকান সিকিউরিটির টাকা নিয়ে ভাড়া দিয়েছেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে রাস্তার সরকারি জমিতে একটি ভলকেনাইজিং, ২টি রেস্তোরাঁ, ২টি স্টেশনারী দোকান, সাইকেল মেকারের দোকান, সিএনজি অটোরিকশা চালক সমিতি, মাইক্রোবাস (লাইটেস) চালক সমিতি ও ট্রাক, পিকআপ চালক সমিতির অফিস স্থাপন করা হয়। এ পথে সরকারী অনেক কর্মকর্তা ও সড়ক জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা যাতায়াত করলেও এসব স্থাপনা উচ্ছেদে কোন পদক্ষেপ নেন না।
অপরদিকে দখলকৃত জমির পিছনে শমশেরনগর কাঁচা বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলে চা বাগানের ঝিলের পানি প্রবাহের নালার মুখ বন্ধ হয়েছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। ময়লা আবর্জনায় নালার মুখ বন্ধ হওয়ায় মাছ বাজারসহ বাসা বাড়ির ময়লা কালো পানি রাস্তার উপরে চলে আসছে। ফলে এসব ময়লা পানি মাড়িয়ে চলাচলে এ এলাকায় জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে।
শমশেরনগর-কমলগঞ্জ সড়কের আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেন স্কুল ও হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী চা বাগানের ঝিল। প্রতিদিন ময়লা আবর্জনা ফেলে এ ঝিলের পানি প্রবাহের দেয়ালের বাহিরের ও ভিতরের নালার মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। টানা কয়েক মাস খরা ও অনাবৃষ্টি থাকায় ঝিল শুকিয়ে যায়। তবে দেয়ালের বাহিরের অংশ দিয়ে মাছ বাজারসহ আবাসিক এলাকার বাসা বাড়ির ময়লা পানি প্রবাহিত হয়। নালার মুখ বন্ধ থাকায় বাজারের নালার কালো ময়লা পানি এখন রাস্তা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে থাকে। এ অবস্থায় এ পথে চলাচলকারী স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, মসজিদের মুসল্লী ও সাধারণ মানুষজন ময়লা পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন। অনেক সময় এ পথে চলাচলকারী দ্রুতগামী যানবাহনের চাকায় ময়লা পানি মানুষজনের গায়ে ছিটকে পড়ে।
শমশেরনগর ইউপি সদস্য ইয়াকুব আলী বলেন, বাজারের ময়লা আবর্জনা ফেলে ঝিলের পানি প্রবাহের নালার মুখ বন্ধ করা হয়। চা বাগানের বিভিন্ন টিলার বৃষ্টির পানি নেমে এ নালা দিয়ে প্রবাহিত হয়। এখন নালার মুখ না খুলে দিলে ঝিলের জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চা প্লান্টেশন এলাকায় পানি প্রবেশ করবে।
শমশেরনগর বাজার ইজারাদার আসাইদ মিয়া বলেন, তিনি মাত্র কয়েকদিন হয়েছে বাজারের দায়িত্ব নিয়েছেন। আগের ইজারাদার নালা নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ময়লা আবর্জনায় পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর এ সমস্যার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই-একদিনের দিনের ভিতরে এসব বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কমলগঞ্জে ২টি সিএনজি অটোরিক্সা চুরি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ২টি সিএনজি অটোরিক্সার চুরির খবর পাওয়া গেছে। চোরচক্র একটি সিএনজি নিয়ে গেলেও অপর সিএনজি’টি রাস্তায় ফেলে গেছে। গত মঙ্গলবার (২০ মে) ভোর রাতে উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামের মো. শিপু মিয়ার সিএনজি (রেজি: মৌলভীবাজার থ-১২/১৪১) ও লক্ষ্মীপুর গ্রামের মো. সুলতান আলীর সিএনজি (রেজি: মৌলভীবাজার থ-১৩/১৬৬৭) চুরি হয়। চোরচক্র মো. শিপু মিয়ার সিএনজিটি নিয়ে গেলেও মো. সুলতান মিয়ার সিএনজি তার বাড়ি থেকে প্রায় অর্ধ কিঃমিঃ দুরে ফেলে গিয়েছে। মো. শিপু মিয়া এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ বিষয়ে গাড়ির মালিক মো. শিপু মিয়া জানান, সিএনজিটি গত সোমবার রাতে বাড়িতে এনে গ্যারেজে রাখি। প্রতিদিনের মত এইদিনও রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত সিএনজিটি পাহারা দিয়ে ঘুমিয়েছি। পরদিন মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি গ্যারেজে সিএনজি নেই। এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছি।
অপর জিএনজি চালক মো. সুলতান আলী বলেন- প্রতিদিনের মত সোমবার রাতে সিএনজি’টি বাড়িতে এনে রেখেছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি সিএনজি’টি নেই। কিছুক্ষণ পর খবর পাই সিএনজি’টি আমার বাড়ি থেকে প্রায় অর্ধ কিঃমিঃ দুরে রাস্তার মধ্যে পড়ে আছে। সেখানে গিয়ে দেখি গাড়ির ওয়ারিং খোলে ফেলে রেখে গেছে। এ বিষয়ে কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, শিপু মিয়া নামক একব্যক্তির কাছ থেকে একটি সিএনজি চুরির লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং সিএনজি’টি উদ্ধারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া আর কোন অভিযোগ পাইনি।
শ্রীমঙ্গলে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
মৌলভীবাজারে শ্রীমঙ্গলে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২ টায় পৃথকভাবে পৌরসভা হল রুমে উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির ও দুপুর ২ টায় মহসিন কমিউনিটি সেন্টারে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফয়জুল করিম ময়ুন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মহসিন মিয়া মধু।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূরুল আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এসময় সাবেক উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা বিএনপির প্রবীন সদস্য আতাউর রহমান লাল হাজী, শ্রীমঙ্গল উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. ইয়াকুব আলী, আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আতিকুর রহমান জরিফ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. তাজ উদ্দিন তাজু, তারেক খন্দকার, হাফিজুর রহমান তুহিন, আহবায়ক কমিটির সদস্য মো. আব্দুল মুসাব্বির, মো. মকবুল হোসেন, মো. আবুল হোসেন, এম এ কাইয়ুম, আব্দুর রহিম, মো. মোবারক হোসেন, মকসুদ আলী, নজরুল ইসলাম জাহান, মো. জসিম উদ্দিন, বাদশা মিয়া কাজল, মশিউর রহমান রিপন, মছদ্দর আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পৌর বিএনপির সভায় উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপি’র আহবায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. সেলিম মিয়া, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মিল্লাদ হোসেন মিরাশদার, যুগ্ন আহবায়ক রাশেদুল হক, আব্দুল জব্বার আজাদ, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য, মীর এম এ সালাম, আলকাছ মিয়া, নজরুল ইসলাম, মো. আলমগীর সেলিম, টিটু দাস, শহীদ মিয়া, জয়নাল চৌধুরী, ফয়ছল আহমেদ, মো. মোছাব্বির আলী মুন্না, সৈয়দ আবু জাফর সালাউদ্দিন, জাহিদ হোসেন, মিজানুর রহমান মাসুম, সাইফুদ্দিন সাবলু, টমাস আহমদ, কামরুল ইসলাম জুয়েল, মো. শেফাক ইসলাম নিলু প্রমুখ।
সভায় উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ও পৌরসভার ৯ টি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করার লক্ষে চলতি মে মাস হতে আগামী জুন মাসের মধ্যে বিভিন্ন তারিখ নির্ধারণ করা হয়। পরে সম্মেলনের মাধ্যমে উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়।
ছবি সংযুক্ত
মৌলভীবাজার পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
মৌলভীবাজার পুলিশ লাইন্সের ভেতরে দুটি কেন্দ্রে কনস্টেবল পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ২০ মে দেড় ঘন্টাব্যাপী চলমান এই লিখিত পরীক্ষায় প্রাথমিক বাছাইপর্ব উত্তীর্ণ ২৭৪ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন।
নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম, কে, এইচ, জাহাঙ্গীর হোসেন, পিপিএম -সেবা লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্রে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হবিগঞ্জ) মোহাম্মদ আতিকুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিলেট) মোঃ রফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোঃ আজমল হোসেনসহ নিয়োগ কার্যক্রমে নিযুক্ত অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
পুলিশ সুপার লিখিত পরীক্ষা শেষে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ধাপ অর্থাৎ মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা সম্পর্কে প্রার্থীদের ধারণা দেন। তিনি সবাইকে প্রতারক চক্রের প্রলোভন থেকে দূরে থেকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করার আহবান জানান।
তিনি পরীক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শুধুমাত্র মেধা ও যোগ্যতা দিয়েই এই চাকরি পেতে হবে। যদি কোন ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতা বা পুলিশ সদস্য নিয়োগের জন্য টাকা দাবি করে তোমরা সাথে সাথে সরাসরি পুলিশ সুপারের মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে অবহিত করবে।’
উল্লেখ্য, আগামী ২৯ মে নিয়োগ প্রক্রিয়ার মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সেদিনই ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে।
মৌলভীবাজারে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে দুদকের অভিযান
মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদক উপপরিচালকের দাবী, অভিযানের সময় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা সঠিকভাবেই করা হচ্ছে। খাবারের ম্যানুও সঠিক।
মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ এরশাদ মিয়ার নেতৃত্বে তিন সদস্যর প্রতিনিধি দল।
জানা যায়, দুদকের প্রতিনিধি দল হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা, ঔষধ ও ম্যানু অনুযায়ী খাবারের মান এবং নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করেন।
অভিযানের সময় দুদক হবিগঞ্জ কার্যালেয়র উপপরিচালক মোঃ এরশাদ মিয়া জানান, দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের অধীনে এখানে একটা অভিযোগ আছে যে খাবার তুলনামূলক নিম্নমানের দেয়া হচ্ছে এবং এখানে একটা নিয়োগ হয়েছিল বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে। নিয়মিত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না এবং ঠিকমতো ঔষধ দেয়া হচ্ছে না। মূলত এই ৪ টি অভিযোগের বিষয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করেছি।
দুদক উপপরিচালক সাংবাদিকদের আরও জানান, সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিলো হাসপাতালের নিয়োগ প্রদান নিয়ে। এ বিষয়ে এখানে কোন আউটসোর্সিং বা অভ্যন্তরীণ কোন নিয়োগই হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের কাছে অভিযোগ ছিলো এখানে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে অথচ আমরা এখানে অভিযানকালে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সহ কাগজপত্র সংগ্রহ করে দেখলাম এধরণের কোন নিয়োগই হয়নি। এছাড়াও হাসপাতালের বহিঃবিভাগে ঔষধও ঠিকমতো দেয়া হচ্ছে।
এদিকে দুদকের অভিযানের সময় হাসপাতালের কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ বিনেন্দু ভৌমিকসহ অন্যান্যরা।
শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের মুল্লুক চলো “চা শ্রমিক দিবস” পালন
১৯২১ সালের ২০ মে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক সিলেট থেকে পায়ে হেঁটে চাঁদপুর মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছান। তারা জাহাজে চড়ে নিজ দেশে ফিরে যেতে চাইলে ব্রিটিশ গোর্খা সৈনিকরা গুলি চালিয়ে শত শত চা শ্রমিককে হত্যা করে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। যারা পালিয়ে এসেছিলেন তাদেরও আন্দোলন করার অপরাধে পাশবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। চা শ্রমিকদের পরানো হয় একটি বিশেষ ট্যাগ। পায়নি তারা ভূমির অধিকার। এরপর থেকেই প্রতি বছর ২০ মে চা শ্রমিক দিবস হিসাবে পালন করে আসছে।
চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতাব্দীতে চীন ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোথাও চায়ের প্রচলন ছিল না। ১৮৫৪ সালে পরীক্ষামূলকভাবে সিলেটের মালিনীছড়া চা বাগানে চা চাষ শুরু করে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সে সময় বৃহত্তর সিলেটে চা বাগান তৈরির জন্য ভারতের আসাম, উড়িশা, বিহার, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়। ‘গাছ হিলেগা, রুপিয়া মিলেগা’ এমন প্রলোভনে শ্রমিকরা বাংলাদেশে এলেও তাদের ভুল ভাঙতে বেশি সময় লাগেনি। বিশাল পাহাড় পরিষ্কার করে চা বাগান করতে গিয়ে হিংস্র পশুর কবলে পড়ে কত শ্রমিকের জীবন গেছে তার কোনো হিসাব নেই। এছাড়া ব্রিটিশদের অত্যাচার তো ছিলই।
তাদের অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে তৎকালীন চা শ্রমিক নেতা পণ্ডিত গঙ্গাচরণ দীক্ষিত ও পণ্ডিত দেওসরণ ‘মুল্লুকে চল’ (দেশে চল) আন্দোলনের ডাক দেন
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের আয়োজনে চা শ্রমিক দিবসটি উপলক্ষে এক স্মরনসভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি পংকজ এ কন্দ।
এসময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, কোষাধ্যক্ষ পরেশ কালিন্দী, চা শ্রমিক নেতা শুভাস রবিদাশ, সুমন তাঁতী প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বক্তারা, এই ঘটনার ১০৪ বছর পেড়িয়ে গেছে। এখনো চা শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। সভা থেকে চা শ্রমিক নেতারা এই দিসবটিকে রাষ্টীয়ভাবে পালনের জন্য চা শ্রমিক দিবস হিসেবে ঘোষনা করার জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান।