দূরত্ব ২:
আমার আর কোনো দূরত্ব নেই
তোমার আমার মাঝের দূরত্ব ছাড়া
মাইল মাইল পথের ব্যবধান
তবু তোমার কাছে গেলেই উষ্ণ অভ্যর্থনা
এ দূরত্ব শুধু দূরত্ব নয়
এ হল দীর্ঘ সময়ের বিচ্ছেদ
তুমি বললে পেরিয়ে যেতে পারি নীলিমা
মাইল মাইল সমুদ্র পেরতে পারি
তোমার ভালোবাসা থেকে একই সরে দাড়ানো মানে
এক আলোকবর্ষ দূরত্ব
বৃষ্টিতে কার্নিশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকি একলা
এর চেয়ে বড় বিচ্ছেদ কিছু নেই
তবুও সুমধুর, আমাদের মাঝখানে মাসের পর মাস
দাঁড়িয়ে থাকে তীব্র শীত, প্রবাহিত হয় হিমবাহ
তোমার চোখের আড়ালে দাঁড়িয়ে থেকে
পুড়ছে ভেতর, দাহ হয়ে যাচ্ছে শরীর।।
যাওয়ার পথ
আমার চতুর্দিকে অদম্য পাহাড়
ভেতরে বেড়ে উঠছে ঝোপ
কত মানুষের খেয়ালী বসতি
কাদা, মাটি , ধুলোতে
তুমি রোজ মেরে যাচ্ছ কোপ।
চোখের জলে নিমজ্জিত
আমার ভালোবাসার বাগান বাড়ি
নদীর মাথায় আকাশ নামে
ছেঁড়া চাঁদের সাথে জন্ম জন্ম আড়ি
গাঢ় পাতা আরও সবুজ হয়
কলোরোলহীন ভেতর পাড়া
মৃত্যু এসে নিয়ে যায় আমাকে
মেঘবন্দী করেছি আমি ও
আহত সভ্যতা:
তুমি তো জানো না
কি গভীর দীর্ঘশ্বাস
আমি বুকে বয়ে বেড়াই।
হয়তো কোনও বিষন্ন গানেও
এতো বেদনার সঞ্চয় নেই।
আমার ভেতরে দীর্ঘশ্বাস জমতে জমতে
গড়ে উঠেছে প্রগাঢ় এক উপন্যাস
পরতে পরতে লিপিবদ্ধ সেখানে কান্নার জল
বেদনা হল উপন্যাসের মলাট
বুকের ভেতর বিষন্ন শীত প্রধান অঞ্চল
হয়তো লে লাদাখেও তুমি এত ঠান্ডা পাওনি,
যা আমার ভেতর সজ্জিত আছে।
আমি ধূসর, আমি সাদা, আমি তুমিময়
আমি তুষারাবৃতা,কতবার অসংখ্য দুঃখ
কেঁদে উঠেছে একসাথে;
প্রাচীন শিলালিপি ভেঙে গেছে
শোকের গান শুনে
মধাহ্নের আকাশ ম্লান হয়ে আসে সহসা দুঃখে
বিষন্নতা নেমে আসে বুকে
কত জন্মের দীর্ঘশ্বাস বুকে
বৃষ্টির মতন ঝরে
চোখ ভিজে যায় অদৃশ্য জলে
জমাট বেঁধে আছে কত জন্মের ক্রন্দন
পাতা ঝরার শব্দ, কত কত মৃত্যু সংবাদ
বুকের ভেতর ব্যকুল বিহ্বল আহত সভ্যতা
দগ্ধ হয়ে বেঁচে থাকা
কত মানুষ নিজের মধ্যে নিজেই মরে