কুলসুমীর দোষে মিনুর কারাভোগ, ঘটনা শুনবেন হাইকোর্ট
সিবিএনএ অনলাইন ডেস্ক/৩১ মার্চ । হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কুলসুম আক্তার কুলসুমীর বদলে মিনুর কারাভোগের ঘটনা শুনবেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টি কার্যতালিকাভূক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এটি বৃহষ্পতিবারের কার্যতালিকায় থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিস্ট আইনজীবী।
কুলসুমীর পরিবর্তে মিনুর কারাভোগের ঘটনা চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালতের নজরে আনেন কারা কর্তৃপক্ষ। এরপর ওই আদালত মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়ার পর ২৪ মার্চ নথি হাইকোর্টে পৌছে। এরপর বুধবার বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। এতে আদালত শুনানির জন্য কার্যতালিকাভূক্তির নির্দেশ দেন।
জানা যায়, ২০০৬ সালের ৯ জুলাই নগরীর রহমতগঞ্জ এলাকায় মোবাইল ফোন নিয়ে বিবাদের জেরে পোশাক কারখানার কর্মী কোহিনুর বেগম খুন হন। এ ঘটনায় করা মামলায় ২০০৭ সালের ২৬ অক্টোবর কুলসুমীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০০৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে মুক্তি পান কুলসুমী। পরবর্তীতে এ মামলায় বিচার শেষে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর রায় দেয় চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। রায়ে কুলসুমীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো একবছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের পর মিনু টাকার বিনিময়ে কুলসুমী সেজে ২০১৮ সালের ১২ জুন চট্টগ্রাম আদালতে আত্মসমর্পন করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে মিনু কারাবন্দী। এরপর নিম্ন আদালতের সাজার বিরুদ্ধে ২০১৯ সালে হাইকোর্টে আপিল করেন কুলসুমী। এ কারণে ওইবছরের ১২ জুন মামলার নথি হাইকোর্টে পাঠানো হয়। মামলাটি এখন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বিচারাধীন। সর্বশেষ গত ১১ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ছিল মামলাটি।
গত ১৮ মার্চ কুলসুমীর পরিবর্তে মিনুর কারাভোগের বিষয়টি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খানের নজরে আসে। এরপর তিনি তা গত ২১ মার্চ রায় প্রদানকারী চট্টগ্রামের আদালতের নজরে আনেন। এরপর মিনুকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হলে ২২ মার্চ কারাগার থেকে মিনুকে আদালতে হাজির করা হয়। মিনু হাজির হয়ে আদালতকে জানান, ‘তিনবছর আগে মর্জিনা নামের একজন মহিলা ডাল-চাল দিবে বলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে জেলে ঢুকায় দেয়। আমি তখন ভাসমান বস্তিতে নিজের ঘরে ছিলাম।’ ‘মর্জিনা বলেছিল রোজা পার হলেই আমাকে জেলখানা থেকে বের করবে। আমি এখন বের হতে চাই।’
দণ্ডিত কুলসুমী চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার উপজেলার গৌরস্থান মাঝেরপাড়া গ্রামের আনু মিয়ার মেয়ে। তাঁর স্বামীর নাম ছালেহ আহমদ। তিনি স্বামীর সঙ্গে কোতোয়ালী থানার রহমতগঞ্জে সাঈদ ডাক্তারের ভাড়া থাকেন। আর মিনুর বাড়ি সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর জাফারাবাদ এলাকায়। তার পিতার নাম সোলাইমান ও মা সালেহ বেগম, স্বামী মোহাম্মদ বাবুল। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার ময়নামতিতে। মিনুর দুই ছেলে ও একমেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে ইয়াছিন(১২)। সে একটি দোকানের কর্মচারি। আরেকজন গোলাম হোসেন(৭) হেফজখানায় পড়ছে। ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস(৫)। তাকে স্থানীয় এক ব্যক্তি লালন-পালন করছেন। মিনুর স্বামী ঠেলাগাড়ি চালক বাবুল সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওযার পর সন্তান নিয়ে ভাসমান বস্তিতে থাকতেন।-সমকাল
এস এস/সিএ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান