৭-এমপি ‘বলির পাঠা’ হলেন?
।। শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।। ‘অসারের তর্জন-গর্জন সার’ অথবা ‘যত গর্জে তত বর্ষে না’-বিএনপি’র ১০ই ডিসেম্বর ‘মহাসমাবেশ’ নিয়ে একথা বলা যায়? বিএনপি কর্মীরা কাঁথা-কম্বল নিয়ে এসেছিলো, সরকার পতন ঘটিয়ে মসনদ দখল করে ঘরে ফিরবে। অন্তত: কানে কানে এ ম্যাসেজ পৌঁছে যায় মাঠে-ঘাটে-প্রান্তরে। সরকারের কানেও এ ম্যাসেজ চলে যায়, সরকার যা করার তাই করে? বিএনপি নেতৃত্ব ভয় পায়, হেফাজতের কথা স্মরণ করে ‘শান্তিপূর্ণ’ সমাবেশ হয়, যা সবার জন্যেই ভালো হয়েছে।
আগেই বলেছিলাম যে, ১০ই ডিসেম্বর কিচ্ছু হবেনা? কিচ্ছু হয়নি। অর্থাৎ বড়ধরণের কোন গোলযোগ হয়নি। মানুষ চেয়েছিলো, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হোক, তাই হয়েছে। বিএনপি প্রমান করেছে যে, তারাও শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে পারে? সাম্প্রতিক ক’টি সমাবেশ করে বিএনপি আবার রাজনৈতিক ধারায় ফিরে এসেছে। দেশে গণতন্ত্রের জন্যে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল প্রয়োজন, বিএনপি সুস্থ রাজনীতি নিয়ে ফিরে আসুক।
বিরোধিতা সত্বেও বিএনপি’র জমায়েত ভালো হয়েছে। সরকার তো ব্যবস্থা নেবেই, তাঁরা তো আঙ্গুল চুষবে না? তবে এ সমাবেশ বিএনপি-কে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসাবে পুন্:প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। বিএনপি প্রমান করেছে যে, তাদের পেছনেও মানুষ আছে। তবে বিএনপি’র ৭-এমপি’র পদত্যাগ একটি ভুল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এরফলে তাঁরা সংসদের ভেতরে আন্দোলন জিইয়ে রাখার সুযোগ হারালেন। ৭-এমপি ‘বলির পাঠা’ হলেন।
এই আন্দোলনে বিএনপি’র অর্জন অনেক, মূল নেতৃত্ব গ্রেফতার হবার পরও বিএনপি’র সমাবেশ সফল। বিএনপি জানতো সরকার কঠোর হবে, নেতাকর্মীরা আগেভাগেই ঢাকা এসে বসে ছিলো। এ সমাবেশ বিএনপি’র হতাশ নেতাকর্মীরা আবার প্রাণ ফিরে পাবেন। গণতন্ত্রের জন্যে এটি ভালো। বেশ কিছুকাল দেশে রাজনীতি ছিলোনা, গণতন্ত্রের জন্যে সুস্থ রাজনীতি প্রয়োজন, জ্বালাও-পোড়াও, ধরপাকড়, হত্যাগুম বাদ দিয়ে দেশে রাজনীতি হউক।
তবে সমাবেশ থেকে বিএনপি বড় কোন কর্মসূচি দেয়নি, তাই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, আন্দোলন কি থিতিয়ে যাবে? নির্বাচনের একবছর আছে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র এখন দল গুছানোর সময়। ২০২৪-র নির্বাচনটি অবাধ-সুষ্ঠূ হোক তা সবাই চায়, দেশের জন্যে প্রয়োজন, সরকারের ভাবমূর্তির জন্যে দরকার। একটি শক্তিশালী পার্লামেন্ট হউক, রাজনীতিতে দর কষাকষি চলুক। নির্বাচন বর্জন সমাধান নয়, নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নেয়াটাই গণতন্ত্র। # [email protected];