জানা অজানা

যে বাড়িতে ৬০ টিউবওয়েল ১টি স্কুল ৮টি মন্দির

যে বাড়িতে ৬০ টিউবওয়েল ১টি স্কুল ৮টি মন্দির

সিবিএনএ অনলাইন ডেস্ক/ ২৫ মার্চ  । চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় মেহারন দালাল বাড়ি নামে একটি বাড়ি আছে। এটি অনেক পুরনো ঐতিহ্যবাহী বাড়ি। অনেক পরিবারের বসবাস করেন এক বাড়িতেই। আর ওই বাড়িতেই রয়েছে ৬০টি টিউবওয়েল। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আটটি মন্দির।

উপজেলার নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দেড় কিলোমিটার জুড়ে মেহারন দালাল বাড়িতে ৭০০ পরিবারের সাড়ে সাত হাজার মানুষ বসবাস করেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৩শ ভোটার। এ বাড়িতে বাইরের কেউ ঢুকলে সহজে বেরুতে পারবে না। অনেকেই রাস্তা ভুলে যায়।

বাড়ির চারদিক ঘিরে রয়েছে ফসলি জমি। কাছাকাছি নেই অন্য কোনো বাড়ি। এ বাড়িতে খাবার পানির জন্য রয়েছে প্রায় ৬০টি টিউবওয়েল। একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং আটটি মন্দির।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মৃধা বলেন, মেহারন দালাল বাড়ি এ এলাকার অনেক পুরনো ঐতিহ্যবাহী বাড়ি। অনেক পরিবারের বসবাস এখানে।

বাড়িটির বাসিন্দা মেহারন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌতম দাস বলেন, কয়েক পুরুষ ধরে আমরা এ বাড়িতে বসবাস করছি। আমাদের মাঝে কোনো ঝগড়া-বিবাদ নেই। আনন্দ-উৎসব আমরা একসাথে পালন করি।

স্থানীয় বাসিন্দা ব্যবসায়ী উত্তম কুমার বলেন, ছোট একটি বাড়িতে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এখানে যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই নাজুক। শিক্ষার্থী বাধন চন্দ্র দাস জানায়, এখানে একটি উচ্চ বিদ্যালয় খুব জরুরি। এখানকার শিক্ষার্থীদের অনেক দূরে গিয়ে লেখাপড়া করতে হয়।

মেহারন দালাল বাড়ির ভেতরে ঢুকলেই চোখে পড়ে সাবেক জমিদারদের দোতলা দুইটি ভবন, কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। একটির নাম দ্বারকাপুরি এবং অপরটি আম্বিকা ভবন। প্রথম ভবনটি নির্মাণ করা হয় ১৩৩৫ বঙ্গাব্দে এবং পরেরটি ১৩৪৪ বঙ্গাব্দে।

এক সময় জমিদার পরিবারের লোকজনের বাস দিয়ে শুরু এ দালাল বাড়ির। দোতলা দুটি ভবনতে এখনো জমিদারের বংশধররা বসবাস করেন। তবে এখানে বসবাসরত বেশিরভাগ মানুষ জেলে, কৃষক ও ব্যবসায়ী।

এই জমিদার পরিবারের বংশধর উত্তম কুমার দাস বলেন, আমাদের বংশের পূর্বসূরিরা এখানে অনেক জমি দান করেছেন। এখানে একটি স্কুলও নির্মাণ করা হয়েছিল। বর্তমানে এটি পরিত্যক্ত ভবনে রয়েছে।

নতুন একটি বিদ্যালয় নির্মাণ হলেও ভবনে জায়গা ছোট হওয়ায় ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করতে পারছে না।

পরিবারের আয়তন অনুসারে বাড়িটির জায়গা খুবই কম জানিয়ে তিনি বলেন, এ কারণে দোকানগুলো সব বাড়ির মধ্যেই। এ বাড়ির বাসিন্দাদের জন্য জরুরিভাবে রাস্তা এবং স্বাস্থ্য ক্লিনিক করা দরকার বলে মনে করেন উত্তম কুমার।

দালাল বাড়ির বাসিন্দা একারশি ও পার্বতী জানান, এ বাড়ির নারীদের খুব কষ্ট করে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। গর্ভাবস্থায় বেশি দুশ্চিন্তা থাকে। রাস্তা খারাপ থাকায় কোনো গাড়ি ভেতরে আসতে চায় না। কাছাকাছি কোনো স্বাস্থ্য ক্লিনিকও নেই।

মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহমিদা হক বলেন, মেহারন দালাল বাড়িটির বিষয়ে আমরা খবর নিচ্ছি। সেখানে যদি কোনো কিছুর প্রয়োজন হয়, তা করে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

-যুগান্তর


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন