জয়িতা চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতা
জঙ্গল ফিরিয়েছে যখন:
পৃথিবীর উদ্দাম বিষের প্রান্তে এসে বুঝেছি
চুরি ভাঙার মতো কিভাবে ভাঙে ভেতর
কিভাবে কপালের চারপাশে চন্দন ফোঁটার মতো
ফুটে ওঠে বিষাদ,
বিরহে কি ভাবে
ঝরে যায় ঘুমের পাপড়ি
প্রাণের সিঁড়ির ধাপে তখন বসে অবহেলা
শরীরের লন্ডভন্ড পৃথিবীতে উৎসব হয় ভুল সময়ের…
ঈশ্বর ও মিলন:
এ সংসারের অভিজাত দর্শক আপনি
আপনার মহিমায় নারীর জন্ম হল
জন্ম হল পুরুষের
লিঙ্গ ভেদে ভাগ হল অনুভূতি,
যৌনতা ও ভালোবাসা
এ পৃথিবী শেখালো ধারণের যন্ত্রণা,নারীকে
আর প্রেরণের সমস্ত মুক্তি – শান্তি আপনার কৃপায় পেল পুরুষ
কি মহৎ বিচার আপনার!
আশ্চর্য প্রহরে ঘুম ও সম্মোহন কিছুমাত্র আলাদা হল না
রাত্রি ছেঁড়া বালিশে রাখা থাকলো কান্না, নিভৃতে
একই মিলন অথচ লিঙ্গ ভেদে তা মুক্তি আবার কোথাও শোষণ
ক্লান্তিহীন এক অধ্যাবসায়,
শরীর নিঃস্রাবী হয়ে চেখে চেখে পড়ছে রাত
আর সৃষ্টিকর্তা আপনি দুহাতে লিখছেন কবিতা
কখনো সে হাত হয়ে ওঠে লম্পটের
কখনো খুনির, কখনো বা ত্যাগীর
আর পাঠকেরা কবিতার গায় রূপকের তকমা সাঁটিয়ে
আপনাকে ধন্যি ধন্যি করছে….
সংখ্যাতীত জিভ ছুঁয়েছে যখন:
জলে ঝুঁকে পড়া একটা শরীর
সন্ধ্যে হলে
যায় মানুষ থেকে মনুষ্যত্বের
জমা জল থেকে অশ্রুজলে
মুখোমুখি বসে,
অবিকল আমাদের মতন
জলের অনেক নীচে
যেখানে শরীর একা
সেখানে জমে হিম কালো কান্না
ছায়া পড়ে গোপন কঠিন মুখের
বৃষ্টির থেকে কবেকার যেন পলাতক
নিথর জলে হয় আলিঙ্গন
তরঙ্গ ভাঙে মানুষ ও মনুষ্যত্বের অলঙ্ঘ্য শরীর
এককভাবে…